শিয়ালদহের পরে এবার হাওড়ায়।
সম্প্রতি শিয়ালদহ ডিভিশনের মেন লাইনে যাত্রীদের না জানিয়েই সিগন্যাল পরিবর্তন করার কাজ শুরু করে দিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। তার জেরে আচমকা মাঝ পথে প্রায় তিন-চার ঘণ্টা ধরে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার জেরে যাত্রীরা চুড়ান্ত হেনস্থাও হতে হয়। কিন্তু সেই ঘটনার পরেও শিক্ষা নেয়নি পূর্ব রেলের কর্তারা।
শনিবার যাত্রীদের আগাম না জানিয়েই হাওড়া মেন লাইনের রাতের শেষ ব্যান্ডেল লোকালটি বাতিল করে দিলেন রেল কর্তারা। আর ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় ভূগলেন প্রায় হাজার খানেক নিত্য যাত্রী। পরে কার্যত দীর্ঘক্ষণ ধরে বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে দিনের প্রথম ট্রেনটিতে আটকে পড়া যাত্রীরা বাড়ি ফেরেন।
রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু তো বটেই রেল বোর্ডের সদস্যরাও গত এক দেড় বছর ধরে জোনগুলির কর্তাদের সঙ্গে যে কটি বৈঠক করেছেন, তাতে রেল যাত্রীর স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিতেই বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছেন। রেলের বোর্ডের বিভিন্ন নির্দেশিকাতেও এই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও পূর্ব রেলের কর্তারা যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিতে কোনও রকম গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
যাত্রীদের বক্তব্য, সাধারনত, যে কোনও রুটেই দিনের প্রথম ও শেষ ট্রেন কখনও বন্ধ করা হয় না। উল্টে যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ওই দুটি ট্রেন বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। এবার সেটাও না জানিয়ে বন্ধ করে দিলেন রেল কর্তারা। কিন্তু কেন আচমকা বাতিল করা হয়েছিল শেষ ট্রেনটি? শনিবার রাতে রেল কর্তাদের কাউকেই ফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে রবিবার সকালে রেল কর্তারা জানিয়েছেন, মেন লাইনের ভদ্রেশ্বরের কাছে ওভারহেড তারে মেরামতির প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ (পাওয়ার ব্লক) করা হয়েছিল। আর তার জেরেই বন্ধ করা হয়েছিল ট্রেন। যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকার কথা যাত্রীদের আগাম জানানো হল না কেন? এ ব্যাপারে রেল কর্তাদের বক্তব্য, আচমকা মেরামতির প্রয়োজন হওয়ায় বিজ্ঞাপন বা প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা য়ায়নি। তবে হাওড়া স্টেশনে সকাল থেকেই ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু স্টেশনে থাকা হকার এবং যাত্রীরা বলেছেন, রেল ঘোষণা শুরু করেছিল সকাল থেকে নয়, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ। ফলে যে সব যাত্রীরা সকালে কলকাতায় চলে এসেছেন তাঁরা ট্রেন বন্ধের কথা জানতেই পারেননি। আর তাতেই ঘটেছে বিপত্তি। শুধু তাই নয়, সকালেই যদি রেলের জনসংযোগ দফতরকে দিয়ে বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মাধ্যমগুলিতে জানিয়ে দেওয়া হত, তাতেই যাত্রীরা জেনে যেতেন।
যাত্রীদের বক্তব্য, রেল কর্তারা ভেবেছিলেন, মেরমতি যখন করতে হবে, তখন যাত্রীরাও আড়াই-তিন ঘণ্টা বসে থাকবেন। কিন্তু যাত্রীরা শনিবার রাতে ট্রেন না পেয়ে হইচই শুরু করায় উপায়ন্তর না দেখে আড়াই ঘণ্টা পরে (১টা ৫০ মিনিট) দিনের প্রথম গ্যালপিং ট্রেনটিকে ‘অল স্টপ’ মানে সব স্টেশনে থামার নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy