আশ্রয়: নদীবাঁধেই সংসার। আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে
কয়েকদিন ধরেই টানা বৃষ্টি চলছে। ধস নেমেছে একাধিক রাস্তায়। জলের তোড়ে কার্যত বিচ্ছিন্ন একাধিক গ্রাম। বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটক। এমনই অবস্থা পাহাড়ের কোলে ছোট্ট দেশ ভুটানের। ভুটানের রাজধানী শহর থিম্পুতেও অবস্থা ভয়াবহ। ভূটানের ওই অবস্থার ধাক্কা লেগেছে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, শিলিগুড়ি থেকে গোটা উত্তরবঙ্গেই। ভুটানে আটকে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের বহু মানুষ। ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের চিন্তায় উদ্বেগ বেড়েছে আত্মীয়-পরিজনদের। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ভুটানের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সবাই যাতে নিরাপদে ফিরে আসতে পারেন সে জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”
ভুটান লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁ হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি ভুটানে যাতায়াত করে। পর্যটকদের অনেকেই ওই পথে ভুটানে যান। প্রায় গোটা বছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকেরা ভুটানে ঘুরতে যান। সেদেশে বেশি সংখ্যায় পর্যটকদের ভিড় থাকে মার্চ থেকে মে ও সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর সংস্থা সূত্রের খবর, সংখ্যায় কম হলেও, এই সময় প্রতিদিন প্রায় শ’খানেক পর্যটক ভুটানে যান। প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা ধস নামায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ভুটানের একাধিক এলাকা। জয়গাঁর ট্যুর অপারেটর সুরেশ ঠাকুরি বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেই ফুন্টশিলিংয়ের পর পর্যটক বোঝাই এ দেশের কোনও গাড়িকে আর উপরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না সে দেশের প্রশাসন। ফলে খানিকটা বেশি অর্থ ব্যয় করে পর্যটকদের ফুন্টশিলিং থেকে সে দেশের গাড়ি ভাড়া করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোথাও ধস নামলে রাস্তা মেরামত করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে পর্যটকদের।”
ভুটানে প্রতিদিন প্রচুর পণ্যবাহী গাড়িও যাতায়াত করে। ভুটান থেকে কাঠ, সিমেন্ট, কৃষিদ্রব্য ভারতে আসে। গত কয়েকদিনে সেই পণ্যবাহী গাড়ির যাতায়াতও কমে গিয়েছে। জয়গাঁ ট্রান্সপোর্টার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নবীন শর্মা বলেন, “পাশাখার কাছে রাস্তা খারাপ। সেজন্য গত তিনদিন ধরে ভুটানের উদ্দেশে রওনা হওয়া প্রচুর পণ্যবাহী গাড়ি জয়গাঁ-সহ আশপাশের এলাকায় আটকে। একইভাবে পাশাখা থেকেও অনেক গাড়ি এ দেশে রওনা হতে পারছে না।” এ ছাড়া আলিপুরদুয়ার জেলা থেকেও প্রতিদিন প্রচুর মানুষ ভুটানে যান। যাদের অনেকে কাজ শেষে দিনে দিনেই ফিরে আসেন। দুর্যোগের জেরে তাঁদের যাতায়াতও কমে গিয়েছে। কোচবিহারের কয়েক হাজার বাসিন্দা ভুটানে বসবাস করেন। তাঁদের বেশিরভাগের কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। সেই বাসিন্দারাও বিপাকে পড়েছেন। কোচবিহারের ঘুঘুমারির বাসিন্দা অকুপদ্দিন মিয়াঁ এক মাসের বেশি সময় ধরে থিম্পুতে কাঠের কাজ করছেন। বুধবার তিনি ফোনে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি চলছে। তাঁরা কয়কজন ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy