চাঁচল স্টেশনে চলছে ভাঙচুর। ফাইল চিত্র
পরপর স্টেশনের উপরে হামলার ঘটনার জেরে রবিবারই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত ট্রেন বাতিল করে দিয়েছিল রেল। সেই নির্দেশ বহাল রইল আরও ৪৮ ঘণ্টা। অর্থাৎ, সোমবার তো বটেই, রেল জানিয়ে দিল, মঙ্গলবারও কোনও ট্রেন চলবে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে দার্জিলিং মেল, পদাতিক, উত্তরবঙ্গ এবং শতাব্দী ছাড়াও বাতিল রইল ১৯টি ট্রেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মোট বাতিল ট্রেনের সংখ্যা ৬০টি। কর্তাদের দাবি, সব কিছু স্বাভাবিক হতে বুধবার হয়ে যেতে পারে। ট্রেন পরিষেবা বিপর্যস্ত বলে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের সফরও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত শুধু গুয়াহাটি-কাটিহার রুটে ট্রেন চলছে। উত্তর দিনাজপুরের কানকি স্টেশনেও এ দিন বিকেলে লেবেল ক্রসিং ভাঙচুর করে লাইনের কয়েকটি প্যান্ড্রোল ক্লিপ খুলে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। এই অবস্থায় তাই রেল চালাতে দেওয়া কঠিন, জানাচ্ছেন রেলকর্তারা।
ভালুকা রোড স্টেশনে মেরামতিতে ফিট সার্টিফিকেট মেলেনি সোমবার পর্যন্ত। তার জেরে এ দিনও বাতিল হয় উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে যাতায়াতকারী সমস্ত ট্রেন। এই নির্দেশ মঙ্গলবারও বহাল থাকবে, জানায় রেল। তাদের দাবি, ক্ষতির বহর বেশ বড়। রেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, লাইনের ক্ষতি হয়েছে, প্যানেল রুম জ্বালিয়ে দেওয়ায় সমস্ত সংযোগ নতুন করে তৈরি করতে সময় লাগবে। তার জন্য রেল ইঞ্জিনিয়াররা দিনরাত কাজ করে চলেছেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘বুধবার বিকেল থেকে ভালুকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। তবে তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।’’
রেল সূত্রে অভিযোগ, সোমবারও কানকি স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়েছে, ট্রেন না থাকলেও মালদহের কুমারগঞ্জ এলাকায় রেল লাইনে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
আজ, মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের গুঞ্জারিয়া থেকে এনজেপি বৈদ্যুতিক ট্রেন চালানোর জন্য রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের পরিদর্শনের কথা ছিল। তা আপাতত বাতিল করেছে রেল। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের চেষ্টায় এনজেপি এবং জংশন থেকে রবিবার থেকেই বাড়তি বাস কলকাতার দিকে চালানো হচ্ছে। সোমবার তিনটি বাড়তি বাস রেল যাত্রীদের নিয়ে রওনা হয়। তৃণমূল কর্মীরা পুরো প্রক্রিয়ার তদারকি করেন। জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘যাঁরা অসহায়ভাবে স্টেশনে বসেছিলেন, বাসের টিকিটও পাননি, তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা।’’
তিস্তা-তোর্সা, পদাতিক, কাঞ্চনকন্যাই আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের সঙ্গে কলকাতার অন্যতম যোগাযোগের সূত্র। এই ট্রেনগুলি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন অনেক যাত্রী। তাঁদের কেউ কেউ বাসে শিলিগুড়ির দিকে রওনা হন। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসও বাতিল হয়েছে। তবে ট্রেনটি কলকাতা থেকে মালদহ পর্যন্ত চলছে। এই দুই জায়গার মধ্যে চলে গৌড় এক্সপ্রেস। সেটিও চালানো হচ্ছে। দুটি ট্রেনই চালায় পূর্ব রেল। বালুরঘাটে সোমবার তিনটি ট্রেন বাতিল হয়েছে। এ দিন রাধিকাপুর থেকে কাটিহার এবং এনজেপিগামী তিনটি ট্রেনও বাতিল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy