Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্লাস্টিক নয়, ঠোঙায় পুজোর ডালি সাগরে

সাগরমেলা দোরগোড়ায়। সেখানে কয়েক লক্ষ লোকের ভিড়ে প্লাস্টিক-থার্মোকলের দাপট পুরোপুরি ঠেকানো যাবে না ঠিকই।

ঋজু বসু
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

সাগরমেলা দোরগোড়ায়। সেখানে কয়েক লক্ষ লোকের ভিড়ে প্লাস্টিক-থার্মোকলের দাপট পুরোপুরি ঠেকানো যাবে না ঠিকই। তবে কয়েকটি ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। অন্তত কপিল মুনির আশ্রম চত্বরের দোকানগুলিতে পুজোর ডালি বহনে প্লাস্টিকের বদলে কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙা সরবরাহে তৎপর হয়েছে রাজ্যের সমবায় দফতর।

এই ব্যাপারে কাজে লাগানো হচ্ছে সুন্দরবন মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী কো-অপারেটিভ লিমিটেডের মেয়েদের। কপিল মুনির আশ্রম চত্বরের দোকানে দোকানে পুজোর ডালির জন্য অন্তত ৫০ হাজার কাগজের ঠোঙা জোগান দিচ্ছেন পাথরপ্রতিমা ও মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লকের মেয়েরা। সেই সব ঠোঙা তিন-পাঁচ কিলোগ্রাম ওজনের সামগ্রী বহনের উপযোগী। মহালয়ার পুণ্যডুবের পরেই ‘ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এর আওতায় সাগরে জঞ্জাল ঝাড়াইবাছাই করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দেখা যায়, কপিল মুনির আশ্রম ও আশেপাশে জমে ওঠা জঞ্জালের ৮০ শতাংশই প্লাস্টিক! আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন সাগর-মহাসাগরে আট কোটি টন প্লাস্টিক ভেসে বেড়াচ্ছে। তাতে সমুদ্রের জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে, দূষণও বাড়ছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সভাপতি কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘এক বার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়, এমন প্লাস্টিক মানেই বিপজ্জনক। গোটা সুন্দরবনকেই প্লাস্টিক-মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। সাগরমেলায় প্লাস্টিকের বিকল্প না-খুঁজে উপায় নেই।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, মেলায় মন্দির-চত্বরে জঞ্জাল ঝাড়াই-বাছাইয়ের বিশেষ বাহিনীও প্লাস্টিক সরানোর কাজ করবে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অব কো-অপারেটিভ দীপক হালদার বলেন, ‘‘সাগরমেলা জমে ওঠার আগেই কপিল মুনির আশ্রম চত্বরের ২০০টি দোকানে ৫০ হাজার ঠোঙা সরবরাহ করা হবে। তাতে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে।’’ পুজোর ডালি হিসেবে কাগজের ঠোঙা সরবরাহের কাজটা হচ্ছে সুন্দররবন উন্নয়ন দফতর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সমবায় দফতর, গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য মানছেন, চায়ের কাপ, খাবারের দোকানের প্যাকেট, থালা-বাটিতে প্লাস্টিক বা থার্মোকল-নির্ভরতা পুরো ঠেকানো সম্ভব নয়।

সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা অংশুমান দাস বলছেন, ‘‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের দিয়ে ঠোঙা তৈরির কর্মসূচি মেলার পরেও ধারাবাহিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবো। কাগজের ঠোঙার বাজারের সম্ভাবনা রয়েছে।’’ যাদবপুর, বেহালায় সমবায় সমিতির পাইকারি বাজারেও এই ধরনের কাগজের ঠোঙা বিক্রি করতে চান সমবায় দফতরের কর্তারা। তা হলে আরও অনেকে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ-ঠোঙা তৈরিতে উৎসাহী হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE