বহরমপুর জেলা কার্যালয়ে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
ইসলামপুরে পুলিশের গুলিতে ছাত্রমত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের সর্বত্র কংগ্রেস কর্মীদের মোমবাতি মিছিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সকালেই। দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে খবর পেলেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে তিনি এখন অতীত! রাহুল গাঁধীর নির্দেশে প্রদেশ কংগ্রেসের ব্যাটন চলে গিয়েছে সোমেন মিত্রের হাতে। খবর শুনে বিদায়ী সভাপতি অধীর চৌধুরী জানাচ্ছেন, দলের সৈনিক হিসাবেই কংগ্রেসের কর্মসূচিতে তিনি থাকবেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অপসারণ তাঁকে কি বিজেপির দিকে ঠেলে দেবে? এআইসিসি-র সিদ্ধান্ত ঘোষণা ইস্তক এমন জল্পনা ভেসে বেড়াচ্ছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশে। অধীরবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রশ্নই নেই! এখন নানা জনে নানা কথা বলবে, নানান কল্পনা হবে। কিন্তু আমি কংগ্রেসে ছিলাম, আছি।’’ প্রাক্তন হয়ে যাওয়ার পরেও সন্ধ্যায় বহরমপুরে মোমবাতি মিছিলে যোগ দিয়েছেন।
তাঁর বিরুদ্ধে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের অনেকের অভিযোগ ছিল, সকলকে নিয়ে অধীরবাবু চলতে পারেন না। প্রদেশের সঙ্গে তাই যোগাযোগ কমে এসেছিল অনেকের। দিল্লিতে নালিশও বাড়ছিল। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে অধীরবাবু নিজেও বলে এসেছিলেন, রাজ্যে দলের স্বার্থে প্রয়োজন হলে তাঁকে সরিয়ে বিকল্প বেছে নেওয়া হোক। বাস্তবে তেমনটাই ঘটার পরে আপাতদৃষ্টিতে অন্তত তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। বলছেন, ‘‘এটা রুটিন রদবদল। এআইসিসি-র সিদ্ধান্ত।’’
আরও পড়ুন: সোমেন নামতেই ফুল-আবির, ঠিক যেন ফিরলেন সন্ন্যাসী রাজার মতোই
গত লোকসভা ভোটের আগে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। অধীরবাবু মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘যেচে দায়িত্ব নিতে চাইনি। কখনও জেলা কংগ্রেসের জন্যও দিল্লিতে দরবার করিনি। দায়িত্ব পাওয়ার পরে বাংলায় কংগ্রেস লোকসভায় চারটে এবং বিধানসভায় ৪৪টা আসন জিতেছে। ভোট বেড়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। এই রেকর্ডটুকু থাকবে!’’ সঙ্গে সংযোজন, ‘‘দল যে ভাবে বলবে, সে ভাবেই কাজ করব। সব কর্মসূচিতেই যাব দলের এক জন সৈনিক হিসেবে।’’
প্রদেশ স্তরের প্রায় কোনও নেতার সঙ্গেই ইদানীং অধীরবাবুর বনিবনা তেমন ছিল না। এক প্রদেশ নেতা শুক্রবারও বলছিলেন, ‘‘অধীর আর আব্দুল মান্নান মিলে মানস ভুঁইয়ার মতো নেতাকে দল ছাড়তে বাধ্য করেছিলেন। দলে থাকলে আজ মানসদা’ই হয়তো সভাপতি হতেন!’’ বিরোধী দলনেতা মান্নানের ফোন অবশ্য দিনভর বন্ধ ছিল। আর এক প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য সরাসরিই বলেছেন, ‘‘দলের মধ্যে ঠিকমতো সমন্বয় ছিল না। এ বার সেই সমন্বয়ের কাজ করব।’’ সমন্বয় কমিটির দায়িত্ব প্রদীপবাবুকেই দেওয়া হয়েছে। নতুন এক কমিটির ভারপ্রাপ্ত নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীরও একই সুর, ‘‘বাংলার কংগ্রেসে সকলের এক সঙ্গে পথ চলা শুরু হবে এ বার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy