গুলিতে লুটিয়ে পড়েছেন বসিদা বেগম। —নিজস্ব চিত্র
পরিত্যক্ত চা-বাগানের জমি দখল ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বলি হলেন এক মহিলা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন বসিদা বেগম (৫০) নামে ওই মহিলা। বোমা-গুলিতে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ডানকান চা বাগানের এই ঘটনায় আহত দুই মহিলা স্থানীয় মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল নেতা জাকির হোসেন এবং আবদুল করিম চৌধুরী গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
ইসলামপুরের আগডিমটিখন্তি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় চার বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ডানকান গোষ্ঠীর চা-বাগান। ওই বাগান তৈরির সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা জমি দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখন ওই চাবাগানের জমি নিজেদের দখলে নিয়ে চাষবাস করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া স্থানীয় দাপুটে নেতা জাকির হোসেনের প্রত্যক্ষ মদতে ওই চা-বাগানের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। ইসলামপুরেরই তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরীর লোকজনও জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই নিয়েই দলের মধ্যেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে।
বিবাদ সেই সূত্রেই। বসিদা বেগমেরও জমি ছিল চা-বাগানের ভিতরে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সেই জমি দেখতে যান তিনি। তখন তাঁদের বাধা দেন কয়েক জন। শুরু হয় বচসা, হাতাহাতি। বোমাবাজি ও গুলিও চলে। তার মধ্যেই মহিলাদের লক্ষ্য করে এক জন গুলি চালাতে শুরু করেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বসিদা বেগম-সহ তিন মহিলাকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা বসিদাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগ, জাকির হোসেনের লোকজনই মহিলাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে আবদুল করিম চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘‘জাকির হোসেন এই এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব।’’ যদিও জাকির হোসেন তা অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই চা বাগানের জমি কেউ পাচ্ছে এবং দখল করে খাচ্ছে। অন্য এক দল চেষ্টা করলেও পাচ্ছে না। সুযোগসন্ধানী ওই দলই বাগানের জমি দখল করতে গিয়েছিল। তারাই গন্ডগোল পাকিয়েছে।’’
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘‘চা-বাগানের জমি দখল ঘিরে গন্ডগোল হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ অন্য দিকে জেলার পুলিশ সুপার সচিন মক্কার বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাবাসাদ করে বাকিদের খোঁজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy