একটা ধাঁধা। উত্তরটা খুঁজতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যায় দুটো মানুষ, একসঙ্গে। যদিও তাদের উত্তর খোঁজার পদ্ধতি আলাদা। আত্মহত্যা নিয়ে টিভিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন মনোবিদ আভেরি (ঋতুপর্ণা)। বাড়ি ফিরে মাঝরাতে স্বামী ঋষির (শাশ্বত) সঙ্গে তার প্রেম কেটে যায় ফোনের আওয়াজে। ফোনের ও পারে অভি (ঋত্বিক) আভেরিকে খুঁজছে। অভি জানায়, একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করেছে সে ও নিজের বাবাকেও। আভেরি তাকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনবে জীবনের মূল স্রোতে।
না, অঙ্কটা এত সহজ নয়। ডাক্তারের চোখে অভি এক জন রোগী আর পুলিশের বড়কর্তা ঋষির চোখে সে অপরাধী। তাই এক দিকে আভেরি সারা রাত ফোনে কথা বলে অভিকে আত্মহত্যার ইচ্ছে থেকে সরিয়ে আনতে চেষ্টা করে। ঋষি ফোর্স পাঠায় তাকে খুঁজতে। ঋষি বুঝতে পারে অভি কিছু ক্ষণ অন্তর অন্তর ফোনের সঙ্গে বদলায় নম্বর ও লোকেশন। অথচ দর্শক অভিকে দেখতে পাচ্ছে একই জায়গায়, তার বাড়িতে।
ছবির শেষ অবধি টেনশন ধরে রাখতে পেরেছেন পরিচালক। এখানে তাঁর প্রশংসা প্রাপ্য। সমস্যা ঘেরা শৈশব, বয়ঃসন্ধির আলো-আঁধারি, কলেজ রাজনীতি, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা— কখনও লং শট, কখনও ক্লোজ় আপ, কখনও বা জাম্প কাট... গল্পের স্রোত চলেছে, থেমেছে। অন্ধকার ঘরে লাল আলো। প্যাঁচা, ব্যাঙ বা গর্ভবতী মহিলার মূর্তি। অদ্ভুত রিংটোন। সিগারেটের ধোঁয়া। দমবন্ধকর পরিবেশ পর্দার বাইরে এসে জড়িয়ে ধরে দর্শককেও।
গুড নাইট সিটি
পরিচালনা: কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়
অভিনয়: ঋত্বিক, ঋতুপর্ণা, শাশ্বত
৫/১০
এর মধ্যে কিছু খটকা। ঋষির অসাবধানতা অভিকে বুঝিয়ে দেয় সে তাদের কথা শুনছে। উচ্চপদস্থ পুলিশের কাছ থেকে এটা কি অভিপ্রেত? চূড়ান্ত উন্মাদ, নোংরা পোশাকের লোক কী ভাবে নানা থানার ওয়েটিং রুমে বসে ফোন করছে! পুলিশের সন্দেহ হচ্ছে না? পরচুলে ঋত্বিক বেমানান। তাঁর তুরুপের তাস অভিনয়, সেটা ফের প্রমাণ করলেন। ছোট চুলে ঋতুপর্ণাকে ভাল লাগলেও মাঝরাতে চড়া মেকআপ অবাস্তব। শাশ্বত, সুজিত, পায়েল, অরুণিমা ছাড়াও ছোট পর্দার কয়েক জন অভিনয় করেছেন। ছবির সঙ্গীত মনে রাখার মতো নয়। ছবিশেষে ধাঁধার উত্তর মিললেও গল্প বাতলালো না উত্তরণের পথ! অলটার ইগোর ছবিতে কি সেটা থাকতে নেই?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy