Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে

‘শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে পড়ুক ঝরে— তোমারি সুরটি আমার মুখের ’পরে বুকের ’পরে। পুরবের আলোর সাথে পড়ুক প্রাতে দুই নয়নে—নিশীথের অন্ধকারে গভীর ধারে পড়ুক প্রাণে।’ লিখছেন পারমিতা মুখোপাধ্যায়।আমাদের প্রাণের মানুষ রবিকবির মতো এমন সুন্দর করে প্রাণের কথাটি আর কে বলতে পারে! ‘তোমারি সুরটি’—কার সুর? কেন, আমাদের সকলের মনের মাঝে যাঁর বাস—সেই হৃদয়েশ্বর—তাঁরই বীণার সুর সেই কতকাল থেকে বয়ে চলেছি—কত জন্ম পার হয়ে গেল, তবু সে সুরের আবেশে আজও হেঁটে চলেছি পথ। কীসের আশায় এই পথচলা? এই অন্তহীন পথে ছড়ানো অজস্র হাসি, কান্না, প্রেম, অপ্রেম, মিলন, বিরহের মণিমুক্তো।

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

আমাদের প্রাণের মানুষ রবিকবির মতো এমন সুন্দর করে প্রাণের কথাটি আর কে বলতে পারে! ‘তোমারি সুরটি’—কার সুর? কেন, আমাদের সকলের মনের মাঝে যাঁর বাস—সেই হৃদয়েশ্বর—তাঁরই বীণার সুর সেই কতকাল থেকে বয়ে চলেছি—কত জন্ম পার হয়ে গেল, তবু সে সুরের আবেশে আজও হেঁটে চলেছি পথ। কীসের আশায় এই পথচলা? এই অন্তহীন পথে ছড়ানো অজস্র হাসি, কান্না, প্রেম, অপ্রেম, মিলন, বিরহের মণিমুক্তো। সেই অনেকের ভিড় থেকে সত্যিকারের পারশপাথরটি খুঁজে বের করাই কি জীবনের লক্ষ্য— যে পরশপাথরের সংস্পর্শে এলে মন হয়ে উঠবে খাঁটি সোনা?

‘আমার দোসর যে জন ওগো তারে কে জানে।/এক তারা তার দেয় কি সাড়া আমার গানে, কে জানে।’

প্রেমের পরশমণির ছোঁয়ায় যে মনটি খাঁটি সোনা হয়ে উঠবে, তাকেই তো দোসর রূপে কল্পনা করে মানুষ। কিন্তু তেমন দোসর কি জীবনে মেলে ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে/কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে।’

মনে পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মায়ার খেলা’ নাটকে মায়াকুমারীদের কণ্ঠের ওই গান। মায়া, মায়া—এ জগৎই তো মায়া। এই মায়াময় জগতে কে কার জন্য মনের পসরা সাজিয়ে বসে আছে তা কে জানে? আর সবার অলক্ষে কে-ই বা রচনা করে চলেছে এমন মায়াজাল। তা না হলে কোন গোপন তানে দুটি হৃদয়ে হঠাৎ শুরু হয় ভ্রমরগুঞ্জন—কেন ওঠে মন্দিরতরঙ্গ! এ কি কুহক! এ কি স্বপ্ন!

মানবমন বড় বিচিত্র। বিচিত্রপথে তার যাত্রা। এই মানব মনের বহুধাবিস্তৃত শাখাপ্রশাখায় অবাধে বিবরণ করেছেন রবীন্দ্রনাথ আর এই মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের ফসল হিসেবে আমরা তাঁর কলমে পেয়েছি বহু লেখা—ছোটগল্প, নাটক, কবিতা। ‘মায়ার খেলা’তে যেমন পরিস্ফুট হয়েছে প্রেমের কুহকে ধাবমান মানব মনের বিচিত্র দ্বন্দ্ব, অনুভূতি, আবেগ।

শান্তা ভালবাসে অমরকে। কিন্তু অমর—যে তার হৃদয়ের কাছে, তাকে সে দেখতে পায় না। ছুটে চলে অনিবার কী নিদারুণ মোহে—না জানি কোথায় সে তার প্রেম খুঁজে পাবে—কার নয়নে, কার প্রাণে? মায়াকুমারীরা গান গায়, ‘মনের মতো করে খুঁজে মর/ সে কি আছে ভুবনে,/সে যে রয়েছে মনে।’

‘মায়ার খেলা’য় রবীন্দ্রনাথ নিয়ে এসেছেন এক স্বপ্ন-নারীকে। রূপমদির এমন নারীকে কামনা করে অনেক পুরুষ। পুরুষেরা সেই নারীর মন পাওয়ার জন্য ব্যাকুল। সে নারী প্রমদা। সে আপনাতে আপনি বিভোর। প্রেম তার কাছে খেলা। মনের বিকিকিনি নেই সেখানে। পুরুষেরা, ‘মন চেয়ো না, শুধু চেয়ে থাকো,/শুধু ঘিরে থাকো কাছাকাছি।’

প্রমদা নিজের মন, নিজের প্রাণ নিজেকেই সঁপেছে—সে ভোলে না কোনও পুরুষের ছলনাতে। গরবিনী নারী হেলায় পুরুষের প্রেম ঠেলে চলে যায় হেসে চটুল বিভঙ্গে।

অমর, সে-ও যে জমেছে প্রমদার রূপের নেশায়। ‘ওই কে গো হেসে চায়, চায় প্রাণের পানে।/গোপন হৃদয়তলে কি জানি কীসের ছলে/আলোক জানে।’

প্রমদার মনও কি ক্ষণিকের জন্য উচাটন হয় না? কী চায় অমর? কোন অমৃত, কোন সুধারস? প্রমদা আকুল হয়। সখীদের বলে, ‘ওলো যা, তোরা যা সখী যা শুধা গে/ওই আকুল অধর আঁখি কী ধন যাচে। প্রমদার মায়ার পরশ। এ কি প্রেম না মোহ! প্রেমই হোক বা মোহ দুটি হৃদয় যে ধরা পড়েছে। চাঁদনি রাত, মধু সমীরণ, আধো ঘুমঘোর, আধো জাগরণ। চার চোখ এক হয়েছে। ঘটেছে প্রমাদ। অমরের কণ্ঠে গান, ‘দিবসরজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি।/তাই চমকিত মন, চকিত শ্রবণ, তৃষিত আকুল আঁখি।’

দু’টি হৃদয় দু’জনের জন্য ব্যাকুল অথচ মনের কথা হল না।

‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল,/ শুধাইল না কেহ।/সে তো এল না, যারে সঁপিলাম/এই প্রাণ মন দেহে।’ এত দিন প্রমদা পুরুষের সঙ্গে প্রেমের খেলা খেলে এসেছে। কিন্তু অমরের সঙ্গে এ প্রেম—‘এ তো খেলা নয়, খেলা নয়।/এ যে হৃদয়দহন জ্বালা...।’

অমরের মন জুড়ে প্রমদার রূপরাশি, তার খেলা, তার গান, তার হাসি। প্রমদা ছেয়ে আছে অমরের জীবন। তার সকল ভালবাসা ধায় প্রমদারই পানে। ‘সকল হৃদয় দিয়ে ভালবেসেছি যারে/সে কি ফিরাতে পারে সখী।’

কিন্তু হল কি মিলন দুজনার! সখীপরিবৃতা প্রমদা সখীদের এড়িয়ে অমরের সঙ্গে মিলনের পথে চলতে পারল কি? মন চাইছে মিলন প্রমদা অধীর হয়ে বলছে, ‘ওরে ডাকো, মিছে খেলায় কাজ নাই।’ কিন্তু সখীরা তাদের প্রিয় সখীকে নিরস্ত করছে—‘অধীরা হোয়ো না সখী/আশ মেটালে ফেরে না কেহ, আশ রাখিলে ফেরে।’

হায়, মনের মানুষকে মরমের কথা বলা হয় না শরমে। একা ফিরে যায় সে শান্তার কাছে—যে শান্তা আজও বসে আছে তার পথ চেয়ে। ‘কাছে ছিলে দূরে গেলে, দূর হতে এসো কাছে। ভূবন ভ্রমিলে তুমি, সে এখনও বসে আছে।’ অমর কাছে এসেছে তবু শান্তার মনে সংশয়—‘দেখো সখা ভুল করে ভালবেসো না। আমি ভালবাসি বলে কাছে এসো না। প্রমদার বিরহানল জ্বলে অমরের হৃদয়ে তাই সে শান্তাকে নিকটে পেতে চায়—চায় শান্তার স্নিগ্ধ প্রেমের বারি। কিন্তু শান্তার সাথে মিলনের মাঝে যেন কার ছায়া—‘এ কী স্বপ্ন! এ কী মায়া! এ কি প্রমদা! এ কি প্রমদার ছায়া!’ মানবমন কি বিচিত্র পথ বেয়ে চলে! যাকে ভুলতে চায় তাকে ভোলা যায় না। মিলনের মাঝেও সে হয়ে দাঁড়ায় অন্তরায়। দু’টি হৃদয় দু’জনকে চায় অথচ চিরবিরহের সাধনায় বাঁশিতে বেজে ওঠে করুণ সুর। প্রেমের চিরকালীন দ্বন্দ্ব? যাকে চাই তাকে পাই না—অদ্ভুত ভাবে ফুটে ওঠে ‘মায়ার খেলা’য়। অমর আর শান্তার মিলনের মাঝে এসে দাঁড়ায় প্রমদা। শান্তা, যে চিরকাল তার প্রেম গোপন রাখতেই চেয়েছে চলে যেতে চায় দূরে। ‘বিধাতার নিষ্ঠুর বিদ্রূপে নিয়ে এল চুপে চুপে/মোরে তোমাদের দুজনের মাঝে।/আমি নাই, আমি নাই—’

কিন্তু প্রমদা অপরের বরণমালা হরণ করে সে কি সুখী হবে? এ যে সুখ নয়, বেদনা। এ মিলনমালা নয়, কণ্টকভার। এ প্রমদার কণ্ঠে সইবে না! তাই সে-ও চলে যেতে চায় দূরে তার দায়িত্বের জীবন থেকে।

আর অমর—প্রেমের দ্বন্দ্বে সে হয় একাকী ক্ষতবিক্ষত চিরবিবাহের দুঃখে তার মুক্তি নির্মল শূন্যের প্রেমে। সেখানে সে একা আসলে মানবমনের চিরকালীন অন্তর্দ্বন্দ্বের এক সুতীব্র বিশ্লেষণ এই ‘মায়ার খেলা’। বিরহের মধ্য দিয়েই প্রেম পরিণতি পায়। প্রেমের উত্তরণ ঘটে। যাকে পাওয়া হল না, দুঃখের যজ্ঞ অনলে সে না-পাওয়া প্রেম জ্বলতে থাকে হৃদয়ে অনির্বাণ। হোমাগ্নিশিখার মতো সে প্রেম তৃষ্ণাদাহন মুক্ত, অমলিন। অশ্রুজলস্নানে সে প্রেম মৃত্যুঞ্জয়। এ যেন সুখের বাসা ভেঙে ফেলার খেলা। ঝড়ের মাতনের সামনে বৈরাগ্যের ধ্বজা উড়িয়ে চলা।

সত্যিই তো, এ জীবন আর কদিনের! মানব-মানবীর প্রেম—সে-ও তো ক্ষণিকের। আমাদের পথচলা কি এই ক্ষণিকের প্রেমের স্বাদ নেওয়ার জন্য না, তা তো নয়। আমরা অমৃতের সন্তান। জন্মজন্মান্তর ধরে আমরা অমৃতের সন্ধানেই পথ চলেছি। কোথায় আমাদের মুক্তি?

‘তোমার প্রেমে ধন্য কর যারে/সত্য করে পায় সে আপনারে।’

এ প্রেম উত্তরিত পরমপুরুষের প্রতি। সে প্রেমের আস্বাদ যে পেয়েছে—‘দুঃখে শোকে নিন্দা-পরিবাদে/চিত্ত তার ডোবে না অবসাদে, /টুটে না বল সংসারের ভারে।’ সেই পরমপুরুষ-আমাদের অন্তরতম তাঁকেই তো দেখেছি জীবন জুড়ে নানা রূপে। তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে আমাদের এই ক্ষুদ্র জীবনের হাসি, গান, আনন্দ, বেদনা। ফাগুনের দিনে, শ্রাবণের রাতে, শরতের ভোরে, শীতের গোধূলির রাঙা আলোয় তাঁকেই যে খুঁজে ফিরেছি বারবার। এই জীবনের কত চাওয়া-পাওয়া, দেওয়া-নেওয়া করুণ রাগিণীর গানে ব্যক্ত হয়েছে তাঁকে ঘিরেই। এই জীবনে যত বিচিত্র পথে ভ্রমণ করেছে এই মন, সেই বিচিত্রের মাঝে তাঁকেই যে অনুসন্ধান করে চলেছি। জীবনের ভার বইতে বইতে যখন মানুষ ক্লান্ত হয়, ফিরে যাবার সময় হয়, তখন মনে হয় যা কিছু দেখলাম, অনুভব করলাম এ জীবনে সেখানে আর কোনও ভাগাভাগি নেই, আধাআধি নেই। ভিতর বাহির সব এক হয়ে গিয়েছে। এই বিশাল ব্রহ্মাণ্ডে যিনি পরিব্যাপ্ত হয়ে আছেন, আমাদের ভিতরেও যে তিনিই। আমাদের অন্তরতম। তাই তো রবিকবি বলেছেন, দাঁড়াও মন, অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড-মাঝে আনন্দসভা-ভবনে আজ। বিপুলমহিমায় গগনে মহাসনে বিরাজ করে বিশ্বরাজ।’

রবীন্দ্র রচনায় মানবিক প্রেমের উত্তরণ ঘটেছে ঐশ্বরিক প্রেমে। সেই প্রেমেরই অমৃতরূপে বিশ্বের প্রকাশ। উপনিষদের গভীর উপলব্ধি ধ্বনিত হয়েছে রবীন্দ্রকাব্যে।

...বিশ্বচরাচরে

ঝরিছে আনন্দ হতে আনন্দ-নির্ঝর।

অগ্নির প্রত্যেক শিখা ভয়ে তব কাঁপে,

বায়ুর প্রত্যেক শ্বাস তোমারি প্রতাপে

তোমারি আদেশ বহি মৃত্যু দিনরাত চরাচর মর্মরিয়া করে যাতায়াত।’

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছুর মধ্যে যে এক অখণ্ড, অক্ষয় ঐক্য——সে তো সেই পূর্ণতারই অভিব্যক্তি। বাইরেও যে আকাশ, আমাদের হৃৎপদ্মের মধ্যেও রয়েছে সেই শূন্য আকাশ। এই হৃদয়াকাশেই সেই পরমপুরুষের বাস। পরমপুরুষ—তিনিই ব্রহ্মা। তাই আমাদের হৃদয় ব্রহ্মপুর। হৃদয়াকাশ জ্যোতির্ময় বলে অনুভূতিগুলি হৃদয় থেকে উৎসারিত হয় আর এই সব অনুভূতির দ্বারাই ব্রহ্মের উপস্থিতি উপলব্ধি করা যায়।

রবীন্দ্রনাথের উপলব্ধি প্রসারিত হয়েছে উপনিষদের গভীর অনুভবে। তাই তিনি বলেছেন—

‘আলোকের অন্তরে যে আনন্দের পরশন পাই, জানি আমি তার সাথে আমার আত্মার ভেদ নাই। এক আদি জ্যোতি উৎস হতে চৈতন্যের পুণ্যস্রোতে আমার হয়েছে অভিষেক,

ললাটে দিয়েছে জয়লেখা,

জানায়াছে অমৃতের আমি অধিকারী,

এই আত্মজ্ঞান লাভ মানবজীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য। আমি দ্রষ্টা, সাক্ষী সকল শুভাশুভের ঊর্ধ্বে। শুভ-অশুভ, পাপ-পুণ্যে, ভাল-মন্দ —এ সবই আপেক্ষিক। পরমব্রহ্মে এই দুই বোধ নেই। সব কিছুর মধ্যে সেই একই ব্রহ্মা রয়েছেন। তিনিই আত্মা। আত্মজ্ঞানে আমরা সকলেই এক ও অভিন্ন।

‘তমেব ভান্তমনুভাতি সর্বং তস্য ভাসা সর্বমিদং বিভাতি’—তাঁর জ্যোতিতেই সব বস্তু আলোকিত হয়ে ওঠে। সকল আলোকের উৎসও তিনি। স্রষ্টাই সৃষ্টি। স্রষ্টাকে সৃষ্টি থেকে আলাদা করা যায় না। ‘তদ্ভাবগতেব চেতসা’? ‘আমিই স্বয়ং ব্রহ্ম, ‘তত্ত্বমসি’ — তুমিই সেই অর্থাৎ তুমিই ব্রহ্ম। উপনিষদের এই গভীর উপলব্ধি ধরা পড়েছিল রবীন্দ্রনাথের গানে, কবিতায়, তাই তো তিনি আমাদের কবিগুরু—আমাদের ঈশ্বর। তাঁর গানে আমরা সেই পরমপুরুষেরই আরাধনা করি। গতকাল ছিল পঁচিশে বৈশাখ—কবিগুরুর জন্মদিন। আজ তাঁরই রচনায়, অনুভবে সাজালাম লেখার ডালি। এ কতকটা গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজোই হল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এত দূরে রয়েছি পরবাসে, তবু রবীন্দ্রনাথ আমাদের দেহে মনে সর্বত্র বিরাজিত। রবীন্দ্র অনুভবকে বাঁচিয়ে রাখার নিরলস সাধনায় ব্রতী—মুম্বইয়ের শান্তিনিকেতন আশ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ। গত ২৫ এপ্রিল চেম্বুর রবীন্দ্রসমরণ—গানে, পাঠে, একক নৃত্যে। প্রত্যেক শিল্পীই দক্ষতার পরিচয় দিলেন—বিশেষ করে শিশু-শিল্পীরা। এই বহির্বঙ্গে নানা ভাষা, নানা রীতিনীতির মাঝেও শিশুরা রবীন্দ্রগান চর্চা করে চলেছে ভাবতেও ভারী আনন্দ হয়। তবে গানে মন ভরিয়ে দিলেন উন্মনা দত্ত। উন্মনার গান সত্যিই আমাদের মনকে উন্মনা করেছিল সেই দিন। রবীন্দ্রগানে উন্মনার সুললিত কণ্ঠের অভিব্যক্তি স্রোতাদের মুগ্ধ করেছিল সে দিন।

মুম্বইয়ের এই দ্রুত ছুটে চলা জীবনের মাঝে ক্ষণিকের মুক্তি এনে দেয় এই সকল অনুষ্ঠান। গান, কবিতা, নাটক এগুলোই তো আমাদের সঞ্জীবনী শক্তি। আর সে সবের সঙ্গে যদি জড়িয়ে থাকেন আমাদের সকলের প্রিয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর—তবে আমাদের মন উত্তরিত হয় এক অপার্থিব আনন্দে। শেষ করি তাঁরই গানের দু’কলি দিয়ে—

‘আমার সকল রসের ধারা

তোমাতে আজ হোক না হারা।

জীবন জুড়ে লাগুক পরশ,

ভূবন ব্যেপে জাগুক হরষ,

তোমার রূপে মরুক ডুবে

আমার দুটি আঁখিতারা।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE