কাজের চাপে মুখের যত্ন নেওয়া হয় না। শহরের ঝুল-কালি, ক্লান্তি, অপছন্দের দাগে মুখ যেন হারিয়ে ফেলে তার স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য। তবে অনুষ্ঠান বাড়ি বা পার্টিতে তো অজুহাত খাটে না। পার্টিতে নজর কাড়তে চাই পারফেক্ট মেকআপ। আর তার শুরু ব্লাশার লাগানো দিয়ে। মুখের গড়ন, কমপ্লেকশন ও ব্রাশের ঠিকঠাক ধারণা না থাকলে, ব্লাশার লাগানো নিখুঁত হয় না। তবে মুখের খুঁত ঢাকতে তো বটেই, ব্লাশারের ব্যবহার কিন্তু বহুবিধ।
কোন ত্বকে কেমন ব্লাশার ক্রিম ব্লাশ:
ড্রাই স্কিনের জন্য এই ব্লাশার বেস্ট। সন্ধের মেকআপে পাউডার লাগানোর আগে বেসের উপরে লাগান ক্রিম ব্লাশার। আর এর জন্য ব্রাশ নয়, আঙুলই শ্রেয়।
পাওডার ব্লাশ:
সব ধরনের স্কিনের পক্ষে উপযোগী হলেও এটি অয়েলি স্কিনের জন্য পারফেক্ট। ফেস পাউডার লাগানোর পরে লাগান পাউডার ব্লাশ। গালের লালিমার স্থায়িত্ব বাড়াতে ক্রিমের চেয়ে পাউডার বেশি উপযোগী।
টিন্ট ব্লাশ:
এই ব্লাশ খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। তাই এটি খুব দ্রুত লাগাতে হয়। ঠিকমতো লাগালে যতক্ষণ না মুখ ধোওয়া হবে, ব্লাশারের আভা লেগে থাকবে।
জেল বা ফ্লুয়িড ব্লাশ:
জেল ব্লাশ মুখে আলাদা উজ্জ্বলতা এনে দেয়। ফাউন্ডেশনের উপর বা কিছু না লাগানো অবস্থায় এই ব্লাশ লাগান। অয়েলি স্কিনে এটা বেশি ভাল কাজ করে।
শিমার:
বিকেলের মেকআপের জন্যই বাছা হয়। কপালে, চোখের পাতার উপরের অংশে, চোখের কোণে শিমার লাগাতে পারেন।
চিক পেন্সিল: অয়েলি স্কিনে একদম চলবে না। সাধারণত আনকোরাদের জন্যই ব্যবহার করা হয়।
ব্রোঞ্জারস:
উজ্জ্বল শ্যামবর্ণাদের জন্যই এটা বেশি ব্যবহার করা হয়। ট্যান লুক করার জন্য এটার চল আছে। তবে ফর্সাদের জন্য একটু হাল্কা শেডের ব্রোঞ্জারস বাছাই করতে পারলে ভাল হয়।
কোন মুখে কেমন ব্লাশার
মুখের শেপের সঙ্গে ব্লাশার লাগানোর কায়দা অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। তাতে ঢাকবে মুখের খুঁত।
ডিম্বাকৃতি মুখ:
গালের টোল পড়ার জায়গায় ব্লাশ লাগান। এর পর একটা ফ্লাফি ব্রাশ দিয়ে আস্তে আস্তে উপরের দিকে মিশিয়ে দিন।
গোলাকৃতি মুখ:
এ ক্ষেত্রে গাল ভারী হয়। গাল যেন ভরাট না দেখায়, তার জন্য টেপার্ড ব্রাশ ব্যবহার করুন। গালের বাইরের দিক থেকে কান বরাবর ৪৫ ডিগ্রি কোণে ভার্টিকাল স্ট্রোক দিন।
চতুর্ভুজাকৃতি মুখ:
এ ক্ষেত্রে হাল্কা শেডের ব্লাশ ব্যবহার করা ভাল। ব্রাশ দিয়ে গোল গোল করে স্ট্রোক দিন। এতে চোয়ালের হাড়গুলো স্পষ্ট বোঝা যাবে না।
পানপাতা শেপের মুখ:
চিকবোনের বাইরে থেকে ব্রাশটাকে ভিতরের দিকে নিয়ে আসুন।
আয়তকার মুখ:
এ ক্ষেত্রে গালের টোল পড়ার জায়গা থেকে আড়াআড়ি ভাবে ব্রাশের স্ট্রোকটা দিন। কান পর্যন্ত সেটা লাগান।
অন্য রূপে ব্লাশার
• আইশ্যাডো হিসেবেও লাগাতে পারেন ব্লাশার।
• পেট্রোলিয়াম জেলের সঙ্গে ব্লাশার মিশিয়ে নিন আর লাগিয়ে দিন ঠোঁটে। লিপগ্লস হিসেবে।
• ম্যাট লিপস্টিকের মতো লুক পেতে আই ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে নিন ব্লাশ। গ্লসি লুক চাইলে ঠোঁটের মাঝখানে লাগিয়ে নিন শিমার ব্লাশ।
• ট্রান্সপারেন্ট নেল কালারের সঙ্গে ব্লাশ পাউডার মিশিয়ে নিন। আপনার নখের জন্য তৈরি কাস্টমাইজড নেল কালার।
• ট্যান লাইন ঢাকার জন্যও লাগাতে পারেন ব্লাশার।
• ডাবল চিন ঢাকতে ডার্ক রংয়ের ব্লাশার থুতনিতে লাগিয়ে নিন।
সঠিক ব্লাশার বাছার টিপস
• হাতটাকে মুঠো করে তার উপর পছন্দের রঙের ব্লাশার লাগান। ব্লাশারের রঙের সঙ্গে কমপ্লেকশন মিলিয়ে দেখুন। যে রং সবচেয়ে কাছাকাছি আসবে, সেটাই গালে ব্যবহার করবেন।
• ব্লাশার স্থায়ী করার জন্য, ফাউন্ডেশন ভিজে অবস্থায় থাকার সময়ে ক্রিম ব্লাশ লাগান। তার পর দুটোকে ভাল করে মিশিয়ে তার উপর গুঁড়ো পাউডার লাগান।
ব্যস, এই কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখলে আপনি হয়ে উঠবেন পার্টির মধ্যমণি!
মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
মডেল: দীপশ্বেতা
মেকআপ: জিতেন্দ্র মাহাতো পোশাক: গ্লোবাল দেসি
লোকেশন: আইভি হাউজ
ছবি: দেবর্ষি সরকার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy