ধরুন ভাবছেন, নিজের স্যালাডের আনাজপাতিটা নিজেই ফলিয়ে নেবেন। কিংবা রান্নায় যে হার্বগুলো প্রায়ই বাজার থেকে কৌটো করে শুকনো কিনতে হয়, সেগুলো নিজের বাগানেই ফলাবেন। কিন্তু ইচ্ছে হলেই কি আর পূরণ হয়? বরং বাদ সেধেছে আপনার ফ্ল্যাটের চৌখুপি জায়গা। রান্নাঘর তো বটেই, অন্য কোথাওই তেমন জায়গা নেই। ফলে কিচেন গার্ডেনের সাধ মাটি। আর ঠিক এই জায়গাতেই আপনার শখের বাগান তৈরির ইচ্ছে পূরণ করতে পারে আর্বান গার্ডেনিংয়ের আইডিয়া।
তাই জেনে নেওয়া যাক আর্বান গার্ডেনিংয়ের প্রথম পাঠ।
• শুরুটা করা যাক খুব ছোট ছোট গাছ দিয়ে। মানে, নিজের বাগান তৈরির জন্য প্রথমেই পিটুনিয়া, জারবেরা, আইরিস, ক্যামেলিয়া ফলাতে হবে না। বরং বেসিল, পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, লঙ্কা, লেমন গ্রাস অথবা নানা ধরনের ছোট শাক লাগিয়ে শুরু করতে পারেন। যেহেতু এই ধরনের গাছের বড় হওয়ার জন্য খুব বেশি সূর্যের আলোর দরকার পড়ে না, তাই রান্নাঘরের কোণে কিংবা জানালার ধারে দিব্যি লাগিয়ে রাখতে পারেন।
• ধনেপাতা, লঙ্কার ফলন ঠিক মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে, নজর দিতে পারেন বাঁধাকপি, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম, মুলো, পেঁয়াজ, টম্যাটো ফলানোর দিকেও।
• প্রাথমিক আনাজ বা হার্ব ফলানোর জন্য যে প্রচুর টাকা খরচ করে মাটির টব বা সেরামিকের কোনও পাত্র কিনে এনে বাগান তৈরি শুরু করতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। বরং এ ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন পুরনো ফেলে দেওয়া জিনিসকে। প্লাস্টিকের বোতল, বালতি, পুরনো টায়ার... গাছ লাগানোর জন্য কাজে লাগাতে পারেন সব কিছুই।
• নিজের বাগানের জন্য প্রয়োজনীয় সার তৈরি করুন নিজের হাতেই। রান্নাঘরের রোজকার ব্যবহারের পর যে শাক-পাতা, চাল ধোয়া জল, চা পাতা ফেলে দেন, সেগুলো ঘরোয়া সার তৈরির কাজে লাগে। টাটকা সারের সঙ্গে এগুলো মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিলে ফলন ভাল হবে।
• রোজকার ব্যবহারের ছোট ছোট গাছ লাগানোর জন্য কিন্তু আলাদা করে চারাগাছ কিনে এনে সার ও মাটি দিয়ে পুঁততে হবে, এমন কোনও মানে নেই। অর্থাৎ দৈনন্দিন বরাদ্দ বাজারের তালিকা থেকেই ধনেপাতা ব্যবহারের আগে একটু তুলে রাখুন। পুদিনা কিংবা লেমন গ্রাসের শিকড় সমেত কিছুটা অংশ কেটে টবে বসাতে পারেন।
• ছোট হার্ব বা ধনেপাতা জাতীয় গাছ ছাড়াও অনেক সময় মরসুমি কিছু ফুলগাছ লাগানোরও শখ থাকে। তার জন্য বড় মার্কেট থেকে চারাগাছ কিনে আনা যেতে পারে অথবা গার্ডেনিংয়ের বইপত্র পড়ে প্রাথমিক ধারণা তৈরি করা যেতে পারে। কিন্তু গাছ লাগাবেন কোথায়? ঘরের জানালার কার্নিশ ধরেই সাজিয়ে রাখুন ফুলের টব।
• ফ্ল্যাটেই ছোট বারান্দা থাকলে, রেলিংয়ে জড়িয়ে লাগাতে পারেন লতানে গাছ। আবার মোটা দড়ি খাটিয়ে, সেখান থেকেই কিন্তু ঝুলিয়ে দিতে পারেন হরেক রঙিন ফুলের ছোট ছোট টব।
• রান্নাঘরে ছোট একটা জানালা আছে নিশ্চয়ই? সে দিকে মুখ করে ম্যাসন জার বা কাচের বড় বয়ামের ভিতর লাগাতে পারেন গাছ।
• অথবা এত কিছু না করে শুধুই বেছে নিতে পারেন একটা বড় টব। সেখানেই একসঙ্গে লাগিয়ে নিতে পারেন হরেক রকমের গাছ, যা আপনার দৈনন্দিন রান্নায় কাজে লাগতে পারে। অর্থাৎ একই টবে একসঙ্গে ফলবে টম্যাটো, লঙ্কাও!
বাগান তৈরি শুধুই শখের নয়, খানিকটা অভ্যেসের ব্যাপারও। আর এক বার গার্ডেনিংয়ের স্বাদ পেলে, বাড়ি ছোট হোক বা বড়, আপনার সঙ্গেই জায়গা হবে আপনার সব রকম সাধের গাছেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy