বিজয়া দশমী শুভ শক্তির বিজয়ের দিন। আপামর বাঙালির মন খারাপের দিন, প্রবাসীদেরও। ফেলে আসা কলকাতার দুর্গাপুজোকে ফিরে দেখার দিন। এ বার অবশ্য পুজো কাটল লাইভ স্ট্রিমিং দেখেই। রসগোল্লা এখন দুবাইয়ের মিষ্টির দোকানেও পাওয়া যায়! ডেস্কে ল্যাপটপের পাশে রাখা ডায়েরিতে চোখ পড়ল। পড়লাম কয়েক পাতা। করোনার সঙ্গে মানিয়ে বেশ তো বাঁচতে শিখে গিয়েছি...
মার্চ ১৯: বাড়ি বদলের ব্যস্ততার এক মাস কী করে কেটে গিয়েছে বুঝতে পারিনি। এর মধ্যে কখন করোনাভাইরাস ইউহান থেকে দুবাইয়ে থাবা বসিয়েছে, তার খবর রাখার সময় ছিল না। রোজ অফিস যাতায়াত, তার পর সুপারমার্কেট, জিম, মল, খাওয়াদাওয়া সব তো দিব্যি বহাল... যাক, বেশি ভেবে কাজ নেই। ভরসা থাক, সুরাহা হয়ে যাবে...
মার্চ ২৬: গতকাল বিকেলে অফিসের সকলকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম ছুটির আগেই। আক্রান্তের সংখ্যাটা দশ, কুড়ি করতে করতে ছুঁয়ে ফেলেছে দেড়শো... দিন শেষ হতে না হতেই কর্পোরেট অফিসের ই-মেল এসে গেল। বাড়ি থেকে কাজ করার সম্মতি। বাড়ি ফেরার আগে কাঁচা বাজার, ফ্রোজ়েন ফুড, মশলাপাতি, স্যানিটাইজ়ার আর মাস্ক নিয়ে এসেছি মাসখানেকের মতো। ন্যাশনাল স্টেরিলাইজ়েশন প্রোগ্রাম দুই সপ্তাহের জন্য, হয়তো আরও বাড়বে। হোয়াটসঅ্যাপে বন্ধুবান্ধব সারা পৃথিবীর খবর দিয়ে চলেছে। কলকাতা শহরে আত্মীয় পরিজন বাবা মা, সকলের জন্যই চিন্তা। এই ভয়টা যেন কেমন অজানা! চোখে ভাসছে টিভি চ্যানেলের রিপোর্ট, ইটালির সেই ঠাকুমার কিছু না বলতে পেরে চলে যাওয়ার দৃশ্যটা।