প্রতিবেদন: প্রিয়ঙ্কর, চিত্রগ্রহণ: অসীম ও প্রিয়ঙ্কর, সম্পাদনা: সুব্রত
“নক্সী-কাঁথাটি বিছাইয়া সাজু সারারাত আঁকে ছবি,ও যেন তাহার গোপন ব্যথার বিরহিয়া এক কবি।অনেক সুখের দুঃখের স্মৃতি ওরি বুকে আছে লেখা,তার জীবনের ইতিহাসখানি কহিছে রেখায় রেখা।” (জসীমুদ্দিন,নক্সী-কাঁথার মাঠ)
বহু বছর আগে, মা-ঠাকুমাদের কল্পজগতের রঙিন নকশা ফুটে উঠত কাঁথার জমিতে। তাঁদের মনের দিশার হদিস পাওয়া যেত কাঁথার সেলাইয়ের ফোঁড়ে। বাঙালি ঘরে সেই পুরনো শাড়ির পাড় থেকে বার করে নেওয়া সুতোয় বোনা কাঁথার সন্ধান পাওয়া যায় না বিশেষ। তবে কাঁথা এমব্রয়ডারি বেঁচে আছে শাড়ি, জ্যাকেট ইত্যাদি আজকের পোশাকের মধ্যে। কিন্তু হারিয়ে গেছে অনেক পুরনো নকশা। হারিয়ে গেছে আরশিলতা, কলমীলতা, নোলকতাগা, ঝিলমিল পাড়, পান পাড়, বক্স পাড়, ধানের ছড়া পাড়ের মতো ডিজ়াইন। বিস্মৃতির আঁধারে বেকি সেলাই, তোলা সেলাইয়ের মতো এমব্রয়ডারির কায়দাও। চারশো-পাঁচশো বছরের সেই পুরনো কাঁথার নকশাকেই বাঙালির হাল ফ্যাশনের অঙ্গ করে তুলতে চাইছেন সোনারপুরের সত্তরোর্ধ প্রীতিকণা গোস্বামী। নিজের বাড়িতেই চালাচ্ছেন কাঁথা সেলাইয়ের স্কুল। নকশি কাঁথার কাজ প্রীতিকণাকে এনে দিয়েছে দেশবিদেশের নানা সম্মান। আগেই পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার, আর এ বছর সম্মানিত হলেন পদ্মশ্রী পুরস্কারে। প্রীতিকণার স্বপ্ন, তাঁর ছাত্রীরাও এক দিন তাঁর মতো জাতীয় পুরস্কার পাবেন। আর বাংলার নিজস্ব নকশি কাঁথা আবার পৌষ-মাঘে ওমের আদরে জড়িয়ে রাখবে প্রতিটি বাঙালির ঘর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy