প্রতিবেদন: প্রচেতা, চিত্রগ্রহণ: প্রিয়ঙ্কর, সম্পাদনা: সুব্রত
সত্যজিৎ রায়ের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসাবে অস্কার জয়। লস অ্যাঞ্জেলেসের বিশ্ববন্দিত মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজে হাতে ‘অ্যাওয়ার্ড’ নেওয়ার সুযোগ হয়ত হয়নি, তবে অস্কার জয়ের নেপথ্য নায়িকা হয়ে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়লেন কলকাতার সঞ্চারী দাস মল্লিক। স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র বিভাগে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড জিতেছে ‘দ্য এলিফেন্ট হুইস্পারার্স’। যার সম্পাদনা করেছেন সঞ্চারী। এই তথ্যচিত্রের কাজ শুরু হয়েছিল ২০২১ সালে। তখন সঞ্চারীর সঙ্গেই ছিলেন তাঁর মা শুভা দাস মল্লিক। সোমবার যখন মেয়ের অস্কার প্রাপ্তির কথা প্রথম শুনলেন, বিশ্বাসই করতে পারেননি। বাড়িতে কেবল টিভি নেই, তাই ৯৫তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড দেখেছেন নেট মাধ্যমে। দিল্লি থেকে ফোনে এক ছাত্র যখন শুভা দাস মল্লিককে খবরটা জানান, তাঁর বিস্ময় ছিল ঠিক শুনছি তো! ছাত্র ঠিক বলছে তো? অবশেষে চর্মচক্ষে দেখার পর, বিশ্বাস জোরালো হয়েছে। মা হিসাবে মেয়ের সাফল্যে তিনি খুশি, কিন্তু মন খারাপ করেছে শৌনক সেনের তৈরি ‘অল দ্যাট ব্রিদস্’ তথ্যচিত্রের অপ্রাপ্তি। শুভা দাস মল্লিক নিজে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। এমনকি তাঁর বাবা মনোজেন্দু মজুমদারও চলচ্চিত্র চর্চায় সক্রিয় ছিলেন। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে সত্যজিৎ রায় যে চার জন বন্ধুকে নিয়ে ‘ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মনোজেন্দু মজুমদার ছিলেন তাঁদের এক জন। মা এবং দাদুর এই চলচ্চিত্র আত্মিকতাই কি মেয়ের মনন নির্মাণ করল? শুভা দাস মল্লিকের সহাস্য উত্তর, “হ্যাঁ তা তো কিছুটা পড়েছেই। বাবা ছোটবেলা থেকেই চলচ্চিত্র উৎসবে টিকিট কেটে ছবি দেখার অভ্যাস তৈরি করে দিয়েছেন। তারপর আমার কর্তাকে নিয়েও আমরা সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখেছি। তখন তো ভিডিয়ো কালচার এসে গিয়েছে। তারপর তো বাড়িতে বসেই সিনেমা দেখা। এমনও দিন গিয়েছে ‘হীরক রাজার দেশে’ না দেখে মেয়ে খেতে বসেনি।”
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে একটি ছবি তৈরি করেছিলেন শুভা দাস মল্লিক। ছবির নাম ‘ক্রসউইন্ডস ওভার ইছামতী’। ২০১২ সালে এই ছবি মুম্বই আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও দেখানো হয়। এই ছবির সম্পাদনা করেছেন সঞ্চারী নিজে। এরপর ২০১৬ সালে মায়ের আর একটি ছবি ‘ক্যালকাটা সোনাটা’, পিয়ানোর উপর নির্মিত এই ছবির সম্পাদনাও হয়েছে সঞ্চারীর হাতেই। আগামীতে আরও একটি ছবি নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছেন শুভা দাস মল্লিক। মিউজিক রেকর্ডের ইতিহাস সংরক্ষণ করার ভাবনা নিয়ে যে ছবি তিনি করবেন, তার সম্পাদনাও করবেন সঞ্চারী দাস মল্লিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy