অবরোধ: হারবায়। ছবি: শান্তনু হালদার
দিন কয়েক আগে হাবরার জিওলডাঙার একটি পুকুরের পাশ থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছিল স্থানীয় এক যুবতীর। দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই অভিযোগে সোমবার ভোরে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম, বিষ্ণু দত্ত, বৈকুন্ঠ দত্ত, ছট্টু রায়, পরী নন্দী এবং আবু হোসেন। ওই এলাকার ছ’জনের বিরুদ্ধে ওই যুবতীর দাদা অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজন মুম্বইয়ে থাকেন। ধৃতদের বয়স ৪৫ থেকে ৭২ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে বিষ্ণু দত্তের বয়স ৭২ বছর। এ দিন সকালে ধৃতদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তারা নির্দোষ— এই দাবি তুলে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও কিছু পরিচিতরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ চলে। স্থানীয় বাণীপুর আমতলা এলাকায় হাবরা-বদর সড়কও অবরোধ করেন তাঁরা। পরে হাবরা পুরসভার প্রধান নীলিমেশ দাস অবরোধকারীদের আশ্বাস দেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। কোনও নির্দোষ ব্যক্তির শাস্তি হবে না। ঘটনাস্থলে যায় হাবরা থানার পুলিশ। এরপরই অবরোধ ওঠে।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির কাছের পুকুর থেকে ওই যুবতীর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। উনিশ বছর আগে ওই যুবতীর দিদিকেও ওই এলাকায় খুন করে পুকুরের পাশে ফেলে রেখে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ উঠেছিল। পরিবারের লোকেদের দাবি, তাঁকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকার কিছু মানুষের চাপে ও হুমকির ভয়ে তাঁদের বাবা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পাননি। পরিবারের পরিচিত এক যুবক সুভাষ দাস পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময় ময়না-তদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণও মেলেনি। খুন বলা হয়েছিল।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সে সময় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতারও করেছিল। প্রমাণের অভাবে পরে অবশ্য তারা ছাড়া পেয়ে যায়। পরিবারের পক্ষ থেকেও কেউ আদালতে সাক্ষী দেননি।
সে সময় ঘটনার বিচার মেলেনি। যা নিয়ে তাঁদের মধ্যে এখনও ক্ষোভ জমে আছে। তাই এ বার কী হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন ওই যুবতীর পরিবারের লোকেরা। ওই যুবতীর দিদির কথায়, ‘‘এ বারও কী দুষ্কৃতীরা ছাড়া পেয়ে যাবে। আর কত মৃত্যু দেখতে হবে কে জানে। ভয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছি না।’’
তিনি জানান, বা়ড়ির দু’টি মেয়ে একই ভাবে খুন হয়ে গেল। কিন্তু পাড়ার লোক পাশে এসে দাঁড়াল না। উল্টে অভিযুক্তদের নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে তারা। দিনের বেলাতেও বেরোতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। তবে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করায় তাঁরা আশার আলো দেখছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy