Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাধ্যমিকের পরে শুরু হল বিশেষ ক্লাস

শিক্ষকেরা কেউ কেউ ক্লাস ফাঁকি দিয়ে গৃহশিক্ষকতা করেন— এই অভিযোগের বিপরীতে অন্য নিদর্শন তৈরি করতে চাইছে সাগরের কয়েকটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাগর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:১০
Share: Save:

শিক্ষকেরা কেউ কেউ ক্লাস ফাঁকি দিয়ে গৃহশিক্ষকতা করেন— এই অভিযোগের বিপরীতে অন্য নিদর্শন তৈরি করতে চাইছে সাগরের কয়েকটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল।

সবে শেষ হয়েছে মাধ্যমিক। ফল বেরোতে কয়েক মাস দেরি। মাঝের সময়টুকুতে সাগরের কয়েকটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে মাধ্যমিক দেওয়া পড়ুয়াদের নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিনামূল্যে অভিমুখীকরণ ক্লাস।’ লক্ষ্য, ছাত্রছাত্রীদের একাদশ শ্রেণির জন্য তৈরি করা। সাগরের কয়েকটি স্কুল এই উদ্যোগ করলেও সেই ক্লাসগুলিতে জেলার যে কোনও স্কুলের মাধ্যমিক দেওয়া ছাত্রছাত্রীরাই যোগ দিতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার বছর আগে সাগরের রামকরচর পঞ্চায়েতের খানসাহেব আবাদ হাইস্কুলে এই কোচিং শুরু হয়। সেই ক্লাসে সাড়া পাওয়ার পরে সাগর ব্লকের একাধিক স্কুলে এই ক্লাস চালু হয়েছে। খান সাহেব আবাদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব দাস বলেন, ‘‘এটা নিয়মিত কোনও ক্লাস নয়। আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি, মাধ্যমিক দেওয়া অনেক ছাত্রছাত্রীদের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকে না। ওই ক্লাসগুলিতে সেই সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সেখানে ইংরেজিতে কথা বলা শেখানো হয়।’’ জয়দেববাবু জানান, এই ক্লাসগুলি করার পরে ছাত্রছাত্রীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আগেই বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যসূচি সম্পর্কে জেনে যায়।

স্থানীয় ধবলাট অঞ্চলের লক্ষ্ণণ পরবেশ হাইস্কুলেও কয়েক বছর আগে এই ক্লাস শুরু হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তনু গায়েন বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়া পাঠ্যসূচি না জেনেই বিজ্ঞান নিয়ে নেয়। পরে সমস্যা হওয়ায় মাঝপথে বিজ্ঞান ছেড়ে অন্য বিভাগে ভর্তি হয়। মাঝখান থেকে খানিকটা সময় নষ্ট হয় তাদের। এ ধরনের সমস্যা মেটাতই এই উদ্যোগ।’’

আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্কুলের ক্লাস থেকে নোট তৈরি করার পদ্ধতিও শেখানো হয় ওই ক্লাসে। এই উদ্যোগে খুশি সাগরের অভিভাবকেরা। স্থানীয় কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা গৌতমকুমার দাস এবং সোমা দাসের মেয়ে মৌমা এখন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। গত বছর মাধ্যমিকের পরে এই ক্লাস করার পরেই সে বিজ্ঞান নিয়ে প়ড়়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সোমাদেবী বলেন, ‘‘মেয়ে প্রথমে কলা বিভাগ নিয়ে পড়বে বলে ভেবেছিল। কারণ বিজ্ঞানের কিছু বিষয়ে ওর ভয় ছিল। কিন্তু স্কুলের বিশেষ কোচিংয়ের পরে ওর ভয় কেটে গিয়েছে।’’কিন্তু সাগর ছাড়া জেলার অন্য ব্লকগুলিতে এখনও সে ভাবে চালু হয়নি এই ক্লাস। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাদলকুমার পাত্র বলেন, ‘‘আমরা জেলার সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ডেকে এ রকম ক্লাস করানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিছু স্কুল সেটি পালন করছে। যে স্কুলগুলি এই ধরণের ক্লাসে অগ্রণী, তাদের সাহায্য করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Pariksha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE