Advertisement
১৫ অক্টোবর ২০২৪
Custodial Death

পুলিশের ‘মারে’ জেলে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বন্দির, পথ অবরোধ

জেলে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় সুপ্রিয় সাঁতরা নামে ওই যুবকের। তাঁর বাড়ি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের মোহনপুর থানা এলাকার বড় কাঁঠালিয়ায়। বাড়ির নীচেই রয়েছে সুপ্রিয়র মোবাইল সারানোর দোকান।

An image of a dead body

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ০৭:০২
Share: Save:

পুলিশ লক-আপে মারধরের চোটে জেলে অসুস্থ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে উত্তেজনা ছড়াল ব্যারাকপুরে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই যুবকের মৃতদেহ রাস্তার উপরে রেখে পথ অবরোধ শুরু করেন পরিজন ও প্রতিবেশীরা। এর জেরে রাত সওয়া আটটা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট ব্যারাকপুর-বারাসত রোডে যান চলাচল বন্ধ থাকে। গাড়ি দাঁড় করিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও প্রথমে অবরোধ তুলতে অস্বীকার করেন বিক্ষোভকারীরা। শেষে এলাকার কয়েক জন ও পুলিশ আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।

সূত্রের খবর, জেলে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় সুপ্রিয় সাঁতরা (২৩) নামে ওই যুবকের। তাঁর বাড়ি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের মোহনপুর থানা এলাকার বড় কাঁঠালিয়ায়। বাড়ির নীচেই রয়েছে সুপ্রিয়র মোবাইল সারানোর দোকান। জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ২৬ মে। বারাসত থানা এলাকার ময়নায় ডাকাতি করতে কয়েক জন জড়ো হয়েছে, গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন সুপ্রিয় এবং তাঁর বন্ধু প্রীতম ঘোষাল। প্রীতমের বাড়ি দেবপুকুরে। ধৃতদের পরের দিন বারাসত আদালতে তোলা হলে তাঁদের দমদম সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। গত সোমবার এই মামলার শুনানি ছিল। সে দিনই জেল থেকে সুপ্রিয়র মৃত্যুর খবর পাঠানো হয় তাঁর পরিবারের কাছে।

মৃতের কাকা সুশীলচন্দ্র সাঁতরা বলেন, ‘‘ভাইপোর ওই বন্ধু সে দিন দুপুরে এসে ওকে ডাকাডাকি করছিল। মোবাইলের যন্ত্রাংশ কিনতে হবে বলে তাড়াহুড়ো করে ও বেরিয়ে গেল। রাতে ফিরছে না দেখে এর পরে আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ভোরে জানতে পারলাম, বারাসত থানার লক আপে রয়েছে ভাইপো।

পুলিশ বলল, ডাকাতি করতে জড়ো হয়েছিল ওরা কয়েক জন। তখনও ও সুস্থ।’’ দমদম সংশোধনাগার সূত্রের খবর, গত রবিবার সন্ধ্যা থেকে অসুস্থ বোধ করছিলেন সুপ্রিয়। প্রথমে সংশোধনাগারের চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে দেখেন। কিন্তু সেখানে শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি না হওয়ায় সুপ্রিয়কে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সোমবার মৃত্যু হয় ওই বিচারাধীন বন্দির। সুপ্রিয়র পরিবারের অভিযোগ, তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী, তা-ও তাদের জানানো হয়নি। শুধু জেল থেকে সোমবার ফোন করে তাঁর মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়।

মৃত যুবকের মা-বাবা সন্ধ্যা ও সুনীল সাঁতরা এ দিন বলেন, ‘‘আমরা অবরোধ করতে চাই না। কারও ক্ষতি চাইনি কখনও। আমার ছেলে মিথ্যা মামলায় ফেঁসে যাওয়ায় এই পরিণতি হল। ও ডাকাতি করবে! এটা কখনও সম্ভব? কত কষ্ট করে মোবাইল সারানোর কাজ শিখে নিজের ছোট্ট ব্যবসাটাকে দাঁড় করাচ্ছিল। ওটাই ওর ধ্যানজ্ঞান ছিল। বারাসত থানার পুলিশ লকআপে ওকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

custodial death Protest Barrackpore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE