Advertisement
E-Paper

ওয়াল দখলের লড়াই বনগাঁর ভোটে

‘‘কেউ কেউ জোটাতঙ্ক রোগে ভুগছেন। আজে বাজে বকা, চোখ-মুখ বাঁকিয়ে হাত-পা ছোড়া, ছড়া-কাটা এই রোগের লক্ষণ’’— সংলাপের নীচে লেখা, ‘‘ডাক্তারবাবু কিছু করুন।’’ ‘‘তৃণমূল মানে রায়বেঁশে, ছৌ, মাটির গন্ধে বাউল গান, তৃণমূল মানে কৃষকের ঘরে স্বপ্নে বোনা সবুজ ধান’’— এমন সংলাপ ঘুরছে ওয়ালে ওয়ালে। কেউ কাউকে খোঁচা দিচ্ছে তো কেউ প্রশস্তিতে ভরিয়ে দিচ্ছেন প্রিয় নেতা-নেত্রীকে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০২:৪৫
ঘরে বসেই চলছে হাইটেক প্রচার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

ঘরে বসেই চলছে হাইটেক প্রচার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

‘‘কেউ কেউ জোটাতঙ্ক রোগে ভুগছেন। আজে বাজে বকা, চোখ-মুখ বাঁকিয়ে হাত-পা ছোড়া, ছড়া-কাটা এই রোগের লক্ষণ’’— সংলাপের নীচে লেখা, ‘‘ডাক্তারবাবু কিছু করুন।’’

‘‘তৃণমূল মানে রায়বেঁশে, ছৌ, মাটির গন্ধে বাউল গান, তৃণমূল মানে কৃষকের ঘরে স্বপ্নে বোনা সবুজ ধান’’— এমন সংলাপ ঘুরছে ওয়ালে ওয়ালে।

কেউ কাউকে খোঁচা দিচ্ছে তো কেউ প্রশস্তিতে ভরিয়ে দিচ্ছেন প্রিয় নেতা-নেত্রীকে। এত দিন যা ছিল দেওয়ালে দেওয়ালে প্রচারের নিদর্শন, সোসাল মিডিয়ার দৌলতে তা-ই ঘুরছে ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে। নানা ছড়া, টিপন্নির রাশি উপচে পড়ছে। মূলত তরুণ প্রজন্মই ফেসবুকের নেশায় বুঁদ। তারাই এ সব লিখছে, শেয়ার করছে, লাইক করছে, নিন্দে-মন্দও কম করছে না। আর প্রার্থীরাও সোসাল মিডিয়ার শক্তিকে অগ্রাহ্য করতে না পেরে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছতে বেছে নিচ্ছেন প্রযুক্তির এই নতুন দিগন্তকে। প্রার্থীদের ছবি দেখে, তাঁদের পোস্ট পড়ে বন্ধুত্বের আবেদনও (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট) পাচ্ছেন তাঁরা, এমনটা জানালেন প্রার্থীদের কেউ কেউ। সাধারণ মানুষের প্রশ্নের জবাব মিলছে অনেক প্রার্থী বা তাঁদের দলের কর্মীদের ফেসবুক পেজে।

বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের প্রার্থী তৃণমূলের সুরজিৎ বিশ্বাসের হয়ে ফেসবুকে যাবতীয় প্রচার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁর ছেলে অভিজিৎ। প্রত্যেক দিন বাবার মিটিং-মিছিলের ছবি আপলোড করছেন। অভিজিৎবাবু জানান, বর্তমান প্রজন্ম সারা দিন ইন্টারনেট, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সরাসরি হয় তো অনেকেই মিটিং-মিছিলে আসে না। কিন্তু ভোটের খবরাখবর রাখতে চায়। নিজের এলাকা নিয়ে আগ্রহ আছে। তাদের কাছেই ফেসবুকের মাধ্যমে পৌঁছনো যাচ্ছে সরাসরি।

অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সত্যসেবী কর ইতিমধ্যে নিজের একটি প্রোফাইল তৈরি করেছেন। যাতে লেখা, ‘বাড়িয়ে দাও তোমার হাত।’ তাঁর অনুগামীরা নিজেদের ওয়ালে পোস্ট করছেন মিছিলের ছবি। সত্যসেবীবাবুর কথায়, ‘‘আসলে প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে চাইছি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে।’’ প্রবীণ এবং দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হলেও ফেসবুকে বেশ দড় মানুষটি জানালেন, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

পিছিয়ে নেই তৃণমূল শিবিরও। তাঁরা লিখছেন, জোট রাজনীতিকে কটাক্ষ করে অজস্র মন্তব্যে তাঁরা ভরিয়ে দিচ্ছেন ফেসবুকের পাতা। লেখা হয়েছে, ‘‘সিপিএমের বয়স ১০০ হল। কংগ্রেস হল ১৩০। আর ১৮ বছরের তৃণমূলের সঙ্গে একা একা পারলি না। ছি ছি ছি ডুবে মর।’’ আবার লেখা হয়ছে, অপপ্রচার ও চক্রান্তে কাজ হবে না। মানুষের জন্য আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শুধু মমতাময়ী নয়, মা অন্নপূর্ণা, অন্নদাত্রী।’’ আবার ছড়ার লড়াইও দেখা যাচ্ছে। যেমন, ‘‘তৃণমূল মানে পেট ভরে ভাত। খাদ্যসাথীর আহ্বান। তৃণমূল মানে সবুজ সাথীতে কন্যাশ্রীর জয়গান।’’

গাইঘাটার সিপিআই প্রার্থী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। তবে সময়ের অভাবে সেখানে তেমন দেখা যাচ্ছে না তাঁকে, জানা গেল দলের কর্মীদের কাছ থেকে। তবে তাঁর হয়ে ফেসবুক মাতিয়ে দিচ্ছেন কর্মী-সমর্থকদের অনেকে।

বনগাঁর কংগ্রেস সভাপতি কৃষ্ণপদ চন্দও নিজেদের দলের এবং প্রার্থীদের সমর্থনে ফেসবুকে প্রচার করছেন। জোটের হয়েও অনেকে ফেসবুকে প্রচার করছেন।

হাবরা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও ফেসবুকে বেশ সক্রিয়। সোজা-সাপটা পোস্ট দেখা গেল তাঁর ওয়ালে— ‘‘উন্নয়নের গতিকে অব্যাহত রাখতে হাবরা বিধানসভা কেন্দ্রে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বিপুল ভোটে পুনরায় নির্বাচিত করুন।’’ দেগঙ্গার তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি রহিমা মণ্ডলও ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসও পিছিয়ে নেই।

তবে সাদা চুনকাম করা দেওয়ালই হোক কিংবা ফেসবুকের ওয়াল— বিজেপি নেতা-কর্মীদের এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে কই!

Bangaon election campaign assembly election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy