Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিরোধী শূন্য ত্রিস্তর ভোটে ছড়ি ঘোরাচ্ছে তৃণমূলই

জেলা পরিষদের প্রার্থীরা ডায়মন্ড হারবার মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়নের দিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীদের কেউই ব্লক বা প্রশাসন ভবনের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি বলে অভিযোগ।

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৪২
Share: Save:

বিরোধী শূন্য অবস্থাতেই ফলতা ব্লকের পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সব ক’টি আসনের দখল নিল তৃণমূল। বিরোধীরা মনোনয়নই জমা দিতে পারেনি এখানে।

ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ওই ব্লকে ১৮৬টি পঞ্চায়েত আসন। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৭টি এবং জেলা পরিষদে রয়েছে ৩টি আসন। ব্লক অফিসে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মনোনয়ন জমা হয়েছে। জেলা পরিষদের প্রার্থীরা ডায়মন্ড হারবার মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়নের দিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীদের কেউই ব্লক বা প্রশাসন ভবনের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি বলে অভিযোগ।

ওই ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েত মধ্যে আগের নির্বাচনে ১২টি তৃণমূল ও ১টি সিপিএমের দখলে ছিল। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৭টি আসনের মধ্যে সিপিএমের ছিল ১৪টি, সিপিআই ১টি এবং তৃণমূল পেয়েছিল ২২টি আসন। জেলা পরিষদের ৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২টি ও সিপিএম ১টিতে জিতেছিল। শাসকদলের দখলে থাকলেও এলাকায় বেশ কিছু গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে বিজেপির উত্থান গত কয়েক বছরে বেড়েছে। সেই নিরিখে বিজেপি বা সিপিএম এ বারে নির্বাচনে কয়েকটি পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির দাবিদারও হয়ে ওঠে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা দুর্নীতিতে এলাকার মানুষ তিতিবিরক্ত। তার ফল ভোটের বাক্সে পড়বে, নিশ্চিত জেনেই আগে থেকে ছক কষেছিল শাসকদল। সেই মতো নির্বাচন প্রক্রিয়া রুখতে মনোনয়ন তুলতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সাত দিন ধরে ব্লক অফিসের সামনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শাসকদলের বাহিনী হাজির ছিল। দুষ্কৃতীরা বেছে বেছে তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়নের সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী পক্ষের। বাকিরা মনোনয়ন তুলতে কিংবা জমা করতে গেলেই জুটেছে মার।

এক সিপিএম কর্মীর অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনে পথ আটকে শাসকদলের কিছু লোক দাঁড়িয়ে থাকত। তাদের প্রত্যেকের কোমরে গোঁজা থাকত ভোজালি, আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি। প্রাণ বাঁচাতে বিরোধীদের অনেক প্রার্থীই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি।’’ দিন কয়েক ধরেই ডায়মন্ড হারবার মহকুমা ডায়মন্ড হাবরা ১, ২, মথুরাপুর ১ ও ২ মগরাহাট ১, ২ কুলপি ও মন্দিরবাজার ব্লক থেকে আসা সব বিরোধী দলের প্রার্থীদের উপরেই হামলা চলেছে বলে অভিযোগ। এমনকী, মহিলা প্রার্থীদের যৌন হেনস্থাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। হেনস্থার হাত থেকে বাদ যাননি সাংবাদিক, চিত্র সাংবাদিকরাও। মারধরও খেয়েছেন তাঁদের কেউ কেউ। অপরিচিত নম্বর থেকে হুমকি-ফোন এসেছে বলেও অভিযোগ। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘আপনার শুভাকাঙ্খী বলছি। মনোনয়ন জমা নিয়ে আপনারা মাথা না গলালেই ভাল। যদি যান, কিছু হলে তার দায় আপনার।’’ সাধারণ মানুষের অনেকেই বলছেন, বাম জমানায় ছাপ্পা ভোট, বুথ জ্যাম তাঁরাও দেখেছেন। কিন্তু এ বার যা হল, তা কার্যত নজিরবিহীন। তবে শাসক দলের নেতারা কোনও অভিযোগই মানছেন না। তাঁদের একটাই বক্তব্য, ‘‘এত উন্নয়ন হয়েছে, বিরোধীরা কি তা চোখে দেখতে পাচ্ছেন না? তবু কেন নির্বাচনে লড়তে আসা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE