Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

পারমিট পেয়েও বোড়ালে থমকে বাস পরিষেবা

অফিস বা কলেজে যাবেন কী ভাবে? প্রতিদিন সকালটা এই চিন্তাতেই শুরু করেন বোড়ালের বাসিন্দারা। কারণ পর্যাপ্ত সংখ্যক অটো বা বাসের কোনও রুট নেই সেখানে। অভিযোগ, এর পুরো ফায়দা তুলছেন রিকশাচালকেরা। মাত্র দু’কিলোমিটার যেতে তাঁরা দর হাঁকেন ৪০-৫০ টাকা।

প্রতীক্ষা: বাস নেই। অটোর ভরসায় যাত্রীরা। বোড়ালে। নিজস্ব চিত্র

প্রতীক্ষা: বাস নেই। অটোর ভরসায় যাত্রীরা। বোড়ালে। নিজস্ব চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

অফিস বা কলেজে যাবেন কী ভাবে? প্রতিদিন সকালটা এই চিন্তাতেই শুরু করেন বোড়ালের বাসিন্দারা। কারণ পর্যাপ্ত সংখ্যক অটো বা বাসের কোনও রুট নেই সেখানে। অভিযোগ, এর পুরো ফায়দা তুলছেন রিকশাচালকেরা। মাত্র দু’কিলোমিটার যেতে তাঁরা দর হাঁকেন ৪০-৫০ টাকা।

বোড়াল এলাকায় রয়েছে দু’টি অটো স্ট্যান্ড। একটি কবি নজরুল অর্থাৎ গড়িয়া মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন। অন্যটি ছ’নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে। কিন্তু অফিস বা স্কুল-কলেজের সময়ে সেখানে পর্যাপ্ত সংখ্যক অটো পাওয়া যায় না। গত কয়েক বছরে হঠাৎ করেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি যার অন্যতম কারণ, বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে অতিরিক্ত অনেকটা সময় হাতে নিয়ে না বেরোলে কর্মস্থলে পৌঁছনো যায় না বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১১ জুলাই, কসবার পরিবহণ ভবনে মিনিবাস মালিকদের সঙ্গে দফতরের আধিকারিকদের একটি বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, হাওড়া-নাকতলা (এস-১১২/১) রুটের মিনিবাসগুলিকে বোড়াল থেকে চালানো হবে। বৈঠকে মিনিবাস মালিকদের একাংশ জানান, গড়িয়া থেকে নাকতলা হয়ে টালিগঞ্জ যাওয়ার রুটটি মেট্রো পথের অনুসারী বলে লাভজনক নয়। তখন মালিকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রতিদিন কিছু বাসকে যাদবপুর-গোলপার্ক হয়ে চলাচল করার অনুমতিও দেওয়া হয়। সেই মতো নাকতলা-গড়িয়া রুটের ২৩ টি বাসের রুট পুনর্বিন্যাস করা হয়। অভিযোগ, তার পরে ন’মাস কেটে গেলেও মালিক-ইউনিয়ন টানাপড়েনে নির্দিষ্ট রুটে বাস চলা শুরু করেনি। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘দফতরের নিজস্ব ভিজিল্যান্স দল রয়েছে। তারা নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পরিদর্শনে যায়। যদি দেখা যায়, পারমিট পেয়েও সেখানে বাস চালানো হয়নি, তবে যে কোনও মুহূর্তে দফতর পারমিট বাতিল করতে পারে।’’

কেন এখনও রুট পুনর্বিন্যাস মানা হল না? মিনিবাস মালিকদের একাংশের অভিযোগ, কর্মী ইউনিয়নের অসহযোগিতার জেরেই বোড়াল থেকে বাস চালানো যাচ্ছে না। এক বাসমালিকের দাবি, “প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী কম। কর্মীদের একাংশ সেই সুযোগ নিয়ে নতুন রুটে বাস চালানোয় বাধা দিচ্ছেন। আইএনটিটিইউসি-র বাস ইউনিয়নের নেতা ভাস্কর দাম অবশ্য মিনিবাস মালিকদের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “মালিকদের সিন্ডিকেটে অনৈক্য রয়েছে। ওঁদের নিজেদের সমস্যাতেই বাস চালানো যাচ্ছে না। কর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে ওঁরা।”

সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম জানান, ওই রুটে আগে ৮০/এ এবং বি রুটের বেসরকারি বাস চলত। পূর্ত দফতর রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে হাত দিলে কিছু দিনের জন্য পরিষেবা ব্যাহত হয়। বছর দুই আগে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “পারমিট পেয়েও বাস না চালানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলে জানাব। কী ভাবে দ্রুত পরিষেবা শুরু করা যায় দেখছি।” পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “কেউ তো এখনও অভিযোগ করেননি! খোঁজ নিয়ে দেখব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Service Boral
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE