Advertisement
E-Paper

সাঁকো সারাই নিয়ে দুই পঞ্চায়েতের টানাপড়েন

ছোট্ট একটা কাঠের সাঁকো ভেঙেই পড়ে রয়েছে। দিনের পর দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। কেউ সারানোর দায়ই নিচ্ছে না।বিদ্যাধরী নদীর উপরে এটি হল ‘টোনা সেতু।’ উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার এই কাঠের সাঁকোটি সংস্কারের অভাবে ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে এক বছর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৪
কবে ফিরবে হাল? ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

কবে ফিরবে হাল? ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।

ছোট্ট একটা কাঠের সাঁকো ভেঙেই পড়ে রয়েছে। দিনের পর দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। কেউ সারানোর দায়ই নিচ্ছে না।

বিদ্যাধরী নদীর উপরে এটি হল ‘টোনা সেতু।’ উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার এই কাঠের সাঁকোটি সংস্কারের অভাবে ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে এক বছর। বন্ধ যাতায়াত। দু’টি ব্লকের সীমান্তবর্তী হওয়ায় সেতুটি কারা সংস্কার করবে, তা নিয়ে চলছে চাপানউতোর। এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষকে দেড় কিলোমিটারের পথ পেরোতে ৭ কিমি ঘুরতে হচ্ছে। সাঁকো মেরামতের সারাবার ব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সর্বত্র দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সুরাহা হয়নি।

জুম্মান আলি নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দেগঙ্গার নুরনগর পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর, নুরনগর, ফাজিলপুর গ্রামের মানুষকে বিদ্যাধরী নদী পেরিয়ে ওপারে নানা কাজে যেতে হয়।’’ গঙ্গাধর সর্দার নামে আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কাঠের তৈরি এই টোনা সাঁকো ধরেই সহজে এবং অনেক কম সময়ে যাতায়াত করা যায়। স্থানীয় বেলিয়াঘাটা বাজারে গ্রামের কৃষিজাত পণ্য নিয়েও যেতে হয়। কিন্তু এখন সাঁকো ভেঙে পড়ায় আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।’’

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সাঁকোর প্রায় সব কাঠের পাটাতন উঠে গিয়েছে। মাস কয়েক আগে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বাঁশ দিয়ে মেরামতির ব্যবস্থা হয়েছিল। তারপরে কোনওমতে চলছিল যাতায়াত। কিন্তু মাস দু’য়েক হল সাঁকোর এক প্রান্তের খুঁটি ভেঙে ঝুলছে। ফলে বন্ধ চলাচল।

ইউনুস আলি নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এই অবস্থার মধ্যেই অনেকে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। রাতে আলো না থাকায় হামাগুড়ি দিয়েও সাঁকো পেরোন অনেকে।’’ এলাকায় প্রধান জীবিকা বলতে কৃষিকাজই। প্রদীপ মণ্ডল নামে এক কৃষক বললেন, ‘‘এক সময়ে এই সাঁকো দিয়ে ধানের বস্তা পার করেছি। জমির ফসল বেলিয়াঘাটা বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে গিয়েছি। আজ আর ভ্যান রিকশা যেতে পারে না। বাধ্য হয়ে ৭ কিমি ঘুরে হাটে-বাজারে যেতে হচ্ছে। একদিকে যেমন সময় বেশি লাগছে, তেমন গাঁট খরচও হচ্ছে বেশি।’’

পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুদাম সর্দার জানান, এই কাঠের সাঁকো দিয়ে গ্রামের সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা স্কুল, কলেজে যায়। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মাস দু’য়েক আগে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে সাঁকো মেরামত করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বিদ্যাধরী নদীর দু’প্রান্তে দু’টি ব্লকের মধ্যে দিয়ে দিয়েছে সেতুটি। আমরা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমাদের দিকে মেরামত করলেও অন্য পাড়ে ফলতি-বেলিয়াঘাটা পঞ্চায়েত কিছু করছে না। তাই সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।’’

বারাসাত ২ ব্লকের ফলতি বেলিয়াঘাটা পঞ্চায়েতের প্রধান রাজিয়া বিবির স্বামী আঁখির আলি আবার বলেন, ‘‘এই ভাঙা সাঁকো নিয়ে আমাদের কেউ অভিযোগ করেনি।’’

কিন্তু কেউ অভিযোগ না জানালে কি সাঁকো সারাই হবে না?

আঁখির আলির সোজাসাপ্টা জবাব, ‘‘সাঁকোটি নুরনগর পঞ্চায়েতের মানুষের সুবিধার জন্য। তাঁরাই এটা ব্যবহার করেন। তাই ওই সাঁকো মেরামতির দায়িত্ব তাদেরই।’’

নুরনগর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সমর্থিত বিজেপি প্রধান তরুণকান্তি ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘দুই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসে কী ভাবে সাঁকো সারাই করা যায়, সে ব্যাপারে শীঘ্রই পদক্ষেপ করা হবে।’’

সেই পদক্ষেপ কবে হবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় আছে দু’পাড়ের মানুষেরই!

Bridge Panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy