Advertisement
E-Paper

উত্তর ২৪ পরগনায় মিলেছে ব্রিটিশ স্ট্রেন

ভোটের বাজারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কী ভাবে রোখা সম্ভব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্য আধিকারিক, চিকিৎসকেরা।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৪:৩২
মোদীর সভায় উধাও দূরত্ববিধি। শনিবার সোনারপুরে।

মোদীর সভায় উধাও দূরত্ববিধি। শনিবার সোনারপুরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

ভোটের আবহে নতুন করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। নিয়মিত ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা। এমনকী জেলার এক বাসিন্দা ব্রিটিশ স্ট্রেনেও আক্রান্ত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারি মাসে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৩৯৫ জন। মার্চে তা একলাফে বেড়ে গিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৫৬ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্চের শুরুতে জেলায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল পঞ্চাশের আশেপাশে। ১ এবং ২ এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৪ ও ৩৩১ জন।

ভোটের বাজারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কী ভাবে রোখা সম্ভব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বাস্থ্য আধিকারিক, চিকিৎসকেরা। সাধারণ মানুষও ইদানীং গা ছাড়া ভাব দেখাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি পালনের ক্ষেত্রে। রাজনৈতিক জন সমাবেশে, রোড-শোয়ে করোনা বিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না অধিকাংশ মানুষকে। মাস্ক ছাড়া হাট-বাজার, বাড়ি-দোকানে ঘুরছেন প্রার্থীরাও। তাঁদের সঙ্গে থাকা দলীয় কর্মী-সমর্থকদেরও মাস্কের বালাই নেই। থাকছে না শারীরিক দূরত্বও। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় রাজনৈতিক দলগুলি মিছিল করেছে বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত এবং ব্যারাকপুর মহকুমায়। সেখানেও স্বাস্থ্য বিধির তোয়াক্কা করা হয়নি। দিন কয়েক আগে বারসতে এক প্রার্থী প্রচারে বেরিয়েছিলেন। প্রার্থীকে হাতের কাছে পেয়ে এক বৃদ্ধা প্রার্থীর গালে চুমু খেয়ে বসেন। কারও মুখেই মাস্ক ছিল না। এমন প্রবণতা খুবই ভয়ঙ্কর বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। সচেতনতা উধাও সাধারণ মানুষের মধ্যেও। পথেঘাটে শারীরিক দূরত্ব মানা, নিয়মিত মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার ইদানীং তেমন চোখে পড়ছে না। দল বেঁধে গল্পগুজব চলছে চায়ের দোকানে।

প্রার্থীরা কেন ভোটদাতাদের করোনা বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নাগরিকেরা। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। নিয়ম বলছে, ঘরে ঘরে প্রচারের ক্ষেত্রে প্রার্থীর সঙ্গে সর্বাধিক পাঁচজন থাকতে পারবেন। আর রোড শো-র ক্ষেত্রে প্রার্থীর সঙ্গে থাকবে সর্বাধিক পাঁচটি গাড়ি। অভিযোগ, সেই নিয়ম ভাঙার ছবি সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। নিয়ম ভাঙলে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। কিন্তু সেই আইন প্রয়োগ হচ্ছে কই!

ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেরই আপত্তি রয়েছে। যা খুবই বিপজ্জনক প্রবণতা বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। তবে আশার কথা শুনিয়েছেন বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “দিন কয়েক আগেও ৪৫-৬০ বছরের বয়সি এবং কো-মর্বিডিটি আছে, এমন মানুষদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল। ১ এপ্রিল থেকে ওই বয়সের মধ্যে থাকা সবাইকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ফলে মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিন নেওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। এখন বারাসত হাসপাতালে রোজ ৩৫০- ৪০০ জন ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।” ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বনগাঁ শাখার সম্পাদক আশিসকান্তি হীরা বলেন, “করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষের গা-ছাড়া মনোভাব এবং রাজনৈতিক উন্মাদনা, করোনার প্রকোপ বাড়ার ক্ষেত্রে এই দু’টো বিষয়েই আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি।”

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “ভ্যাকসিন নেওয়া মানে এই নয় যে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করব না। ভিড়ের মধ্যে না যাওয়া, পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা, মাস্ক পরা, সাবান বা স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে। করোনা চলে যায়নি, এটা মাথায় রাখতে হবে। সেফ হোম ও কোভিড হাসপাতালগুলি প্রস্তুত রাখা রয়েছে আগের মতোই।”

Corona COVID-19 Coornavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy