Advertisement
১৭ জুন ২০২৪
Cyclone Amphan

পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ

আমপানে যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, জবকার্ডের টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৩:৩৯
Share: Save:

আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবারই ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। অথচ একই বুথে পাকা দোতলা বাড়ির মালিক ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। ভাঙড় ২ ব্লকের শানপুকুর পঞ্চায়েতের কাশীপুর গ্রামের ১২০ নম্বর বুথের ঘটনা। এর জেরে শুক্রবার সকালে কয়েক’শো মানুষ ওই বুথের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পরে কাশীপুর থানার পুলিশ গিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ওই বুথের পঞ্চায়েত সদস্য রেহেনা বিবির স্বামী লালবাবু সর্দার তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু লোকজনকে বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। আমপানে যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, জবকার্ডের টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই বুথে প্রায় ১৫০টি পরিবার ঝড়ে বাড়ি ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ তাঁরা সরকারি কোনও ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বলে দাবি করছেন। এমনকী, তাঁদের নামের তালিকাও জমা নেওয়া হয়নি বলে দাবি ওই গ্রামবাসীদের।

বিক্ষোভকারী নূর মোহম্মদ মোল্লা বলেন, “আমপানে যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁরা সরকারি ত্রিপল, ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন না। পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী নিজের দলের লোকজনদের সঙ্গে রফা করে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন।” তাঁর অভিযোগ, “বুথের সুপারভাইজার বাবুরালি মোল্লার বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি, তা সত্ত্বেও তিনি আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। অথচ গরিব মানুষ ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছে না। সেই কারণে আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি।”

লালবাবু বলেন, “ওরা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমাকে ৪০-৫০ জনের নামের তালিকা দিতে বলা হয়েছিল। সেই মতো আমি যাদের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে, তাদের একটি তালিকা তৈরি করে জমা দিয়েছিলাম। তবে এটা ঠিক, এখনও বেশ কিছু পরিবার আছেন যাঁদের ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু ক্ষতিপূরণ পাননি। পরে যদি সরকারি ভাবে আবার নাম চাওয়া হয় তা হলে বাকিদের নাম জমা দেব।”

পঞ্চায়েত সুপারভাইজারের টাকা পাওয়া প্রসঙ্গে লালবাবু বলেন, “আমি ছাড়াও তো অনেকে পঞ্চায়েত, ব্লক অফিসে সরাসরি নামের তালিকা জমা দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কী হয়েছে বলতে পারব না।” বুথ সুপারভাইজার বাবুরালি মোল্লা অবশ্য টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাকে ৫-৬ জনের একটি নামের তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছিল। আমপান ঝড়ে আমারও বাড়ির পাঁচিল ও গাছপালা ভেঙে ক্ষতি হয়েছে। সে কারণে আমার স্ত্রীর নাম জমা দিয়েছিলাম। তাঁর নামেই সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা এসেছে।”

ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ওহিদুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের কোনও অভিযোগের কথা জানা নেই। তবে কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে থাকেন, তা হলে সরকারি নিয়ম মেনে তাঁদের সেই টাকা ফেরত দেওয়া উচিত। আমরা দলগত ভাবে এই কাজকে সমর্থন করি না।” ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE