Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভাঙছে বাঁধ, বন্যার ভ্রূকুটি হিঙ্গলগঞ্জে

কালীতলার সামসেরনগরে কালিন্দী নদীর বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। গোবিন্দকাটি গ্রামে স্ল্যুইস গেটের পাটা ভেঙে জল ঢুকছে।

নড়বড়ে: সর্দারপাড়ার বাঁধের হাল। ছবি: নির্মল বসু।

নড়বড়ে: সর্দারপাড়ার বাঁধের হাল। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতে নদী বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে। বিপদের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন হিঙ্গলগঞ্জের মানুষ। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত প্রশাসনও।

মঙ্গলবার পরিস্থিতি দেখতে হিঙ্গলগঞ্জের সর্দারপাড়া, মাধবকাটি, কুমিরমারি, পুকুরিয়ায় যান বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি, বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল-সহ সেচ দফতরের আধিকারিক ও পুলিশকর্তারা। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘পুকুরিয়া সর্দারপাড়া গ্রামে রায়মঙ্গল নদীর বাঁধের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে পড়েছে। সেচ দফতর থেকে বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। তবে এ ভাবে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি চললে শেষ পর্যন্ত বাঁধ রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।’’

একটানা বৃষ্টির ফলে সুন্দরবন এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যেই বাঁধ, স্ল্যুইস গেট ভেঙে নোনা জল গ্রামে ঢুকছে। সোমবার যোগেশগঞ্জের সর্দারপাড়া এবং মাধবকাটি গ্রামে নোনাজল ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেছোভেড়ি। সর্দারপাড়ায় রিং বাঁধ দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে যে ভাবে জল বাড়ছে সঙ্গে বৃষ্টির দাপট, তাতে যে কোনও মুহূর্তে মূল বাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে জল ঢুকে পড়তে পারে। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘জগন্নাথ ঘাট, কানাইকাটি ধোনার ঘাট এবং রমাপুরের নদীবাঁধ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সুন্দরবন এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং সেচ দফতর থেকে বাঁধ ও স্ল্যুইস গেট মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। ব্লক দফতরে প্রয়োজনীয় ত্রাণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’’

কালীতলার সামসেরনগরে কালিন্দী নদীর বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। গোবিন্দকাটি গ্রামে স্ল্যুইস গেটের পাটা ভেঙে জল ঢুকছে। এ ছাড়াও, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার বিভিন্ন নদীবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি স্ল্যুইস গেটের অবস্থা খারাপ হওয়ায় যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে জল ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে। রায়মঙ্গল নদীর জল বেড়ে মাধবকাটি গ্রামের জগন্নাথ ফেরিঘাটের কাছে স্ল্যুইস গেট ভেঙেছে। সেখানে প্রায় পঞ্চাশ ফুট বাঁধ ভেঙে গ্রামে নোনা জল ঢোকে। মেছোভেড়িগুলি জলমগ্ন হয়। মাছ ভেসে গিয়েছে। রূপমারির বাইনাড়া গ্রামে ডাঁসা নদীর বাঁধে প্রায় একশো ফুট জুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে কাজ শুরু করেছে। এ দিকে বৃষ্টির জন্য মাঠ-পুকুর সব ভেসে গিয়েছে।

বিশপুরের ধানিখালির মুড়িরঘাট এলাকায় আড়াইশো মিটার বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। দুপুরের জোয়ারে ডাঁসা নদীর ওই বাঁধ ধসে যায়। রাতে জোয়ারে গ্রামে জল ঢুকতে পারে। সে কারণে পঞ্চায়েত থেকে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

সুন্দরবন এলাকায় বেশ কয়েকটি স্ল্যুইস গেটের অবস্থাও খারাপ। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। সন্দেশখালি, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, বাদুড়িয়া, হাসনাবাদ, স্বরূপনগর এবং বসিরহাটের বেশ কিছু এলাকার নদী বাঁধের কোথাও ফাটল দেখা দিয়েছে কোথাও স্ল্যুইস গেটের অবস্থা খারাপ। সব মিলিয়ে আতঙ্কেই রয়েছেন গ্রামের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE