Advertisement
২২ মে ২০২৪
ঘোজাডাঙা

সেতুতে জোড়়াতাপ্পি, স্বস্তিতে ব্যবসায়ীরা

চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিল পূর্ত ও সড়ক দফতর। শেষমেশ কাজটা উতরেও দিল তারা।খানিকটা লোহার প্লেট, খানিকটা বালি-পাথর, কয়েকখানা শালবল্লা দিয়ে কোনও মতে তাপ্পি মেরে হলেও পরিস্থিতি সামাল দিলেন দফতরের বাস্তুকারেরা। ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজটা আপাতত কমল। ঘোজাডাঙা সেতু দিয়ে হালকা পণ্যবাহী ট্রাক চলল শনিবার।

কাজ চলছে সেতুতে। ছবি: নির্মল বসু।

কাজ চলছে সেতুতে। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩০
Share: Save:

চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিল পূর্ত ও সড়ক দফতর। শেষমেশ কাজটা উতরেও দিল তারা।

খানিকটা লোহার প্লেট, খানিকটা বালি-পাথর, কয়েকখানা শালবল্লা দিয়ে কোনও মতে তাপ্পি মেরে হলেও পরিস্থিতি সামাল দিলেন দফতরের বাস্তুকারেরা। ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজটা আপাতত কমল। ঘোজাডাঙা সেতু দিয়ে হালকা পণ্যবাহী ট্রাক চলল শনিবার। বাস্তুকারদের এই কাজে সাহায্য করেন সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনের সদস্যেরাও।

তবে এ ভাবে বেশি দিন ভগ্নপ্রায় ওই সেতু দিয়ে ৬০-৭০ টনের পণ্যবাহী লরি নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পূর্ত ও সড়ক দফতর। বসিরহাট শাখার সহকারী বাস্তুকার রানা তারং বলেন, ‘‘যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘোজাডাঙা সেতুর বসে যাওয়া অংশ কোনও রকমে আপৎকালীন ভাবে ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু ভারী গাড়ি গেলে বিপদ হতে পারে। আগামী দু’মাসের মধ্যে নতুন একটি সেতু তৈরির কাজ শেষ হবে। তত দিন পুরনো সেতু দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করবে, নাকি ওই সেতু ভেঙে ফেলা হবে— তা ঠিক করবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।’’

বসিরহাটের ইটিন্ডার ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি ও রফতানি ব্যবসার জন্য ঘোজাডাঙা খালের উপরে ২৫ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার চওড়া দু’টি নতুন সেতুর কাজ শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ পুরনো সেতুর একপাশ বসে যাওয়ার কারণে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বিশেষ করে কাঁচা মাল নষ্টের আশঙ্কায় চিন্তায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। আজ, রবিবার থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ইদের ছুটির জন্য বাংলাদেশে আমদানি-রফতানি বন্ধ। ফলে শনিবার ট্রাক যাতায়াত খুবই জরুরি ছিল। সে জন্যই সেতু মেরামত করে কাজ চালানোর মরিয়া চেষ্টা চালায় পূর্ত ও সড়ক দফতর। কিন্তু সামনের সপ্তাহের পরে কী ভাবে কাজ চলবে, তা ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পূর্ত ও সড়ক দফতরের বাস্তুকারেরা পুরনো সেতুর যে দিক বসে গিয়েছে, তার তলায় বালি, মাটি, পাথর এবং শালবল্লার খুঁটি লাগিয়ে উচুঁ করার চেষ্টা করছেন। একটা সময়ে তাঁরা সেই কাজে সফলও হন। এরপরেই খুব সাবধানে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল শুরু হয়।

সীমান্তে ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন পূর্ত ও সড়ক দফতরের ভূমিকায়য় খুশি। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কান্তি দত্ত বলেন, ‘‘বাস্তুকারদের সঙ্গে আমাদের তরফেও কাজে হাত লাগানো হয়। সেতুর যে জায়গাটা নিচু হয়ে গিয়েছে, সেখানে ২০ ফুট লম্বা এবং ৫ ফুট চওড়া ৪টি লোহার প্লেট ফেলা হয়েছে। নতুন করে যাতে সেতুর কোনও ক্ষতি না হয়, সে জন্য সব গাড়ি চালকদের কম মাল নিয়ে, সাবধানে ধীর গতিতে সেতু পার হতে বলা হচ্ছে।’’

কান্তিবাবুর দাবি, বন্দরে যাতে সরঞ্জাম নিয়ে কোনও ট্রাক আর দাঁড়িয়ে না থাকে, সে জন্য সকাল ১০-৬টার পরিবর্তে আরও ৩০ মিনিট সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ৪১০টি ট্রাক এ পার থেকে ও পারে গিয়েছে। বাংলাদেশ থেকেও ৪০টি গাড়ি এ পারে এসেছে। ইদের ছুটির পরে সেতু সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত বন্দরে কোনও পণ্যবাহী ট্রাক যাতে না আসে, সে জন্য ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন কান্তিবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge Businessman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE