ঠাঁই: অনেকের চিকিৎসা চলছে মেঝেতেই। ছবি: শান্তনু হালদার
অবশেষে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চালু হচ্ছে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা। ইতিমধ্যেই যন্ত্রপাতি বসে গিয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে রক্তের নমুনা নেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিধায়ক তহবিলের অর্থে ওই মেশিন বসেছে।
এরপরে দূরদূরান্ত থেকে জ্বর ও ডেঙ্গি নিয়ে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েদের দুর্ভোগ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্রুত রক্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে আরও ভাল চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে বলেও চিকিৎসকদের আশা। কারণ, এত দিন ধরে হাবরা, অশোকনগর, হরিণঘাটা, গাইঘাটা, বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর থেকে জ্বর নিয়ে মানুষ এখানে ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু হাসপাতালে ডেঙ্গি পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থা ছিল না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি ৭০ জন রোগীর রক্তের নমুনা প্রতিদিন এখান থেকে সংগ্রহ করে তা ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছিল। ওই রিপোর্ট হাতে পেতে দিন তিনেক সময় পেরিয়ে যেত। ফলে চিকিৎসা শুরু করতে চিকিৎসকদের দেরি হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে অনেক রোগীর শারীরিক অবস্থারও অবনতি হচ্ছে। তাদের বারাসত বা কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে হচ্ছে। এরফলে রোগীর আত্মীয়দের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি, হয়রানিরও হতে হচ্ছে। তা ছাড়া, বহু রোগী আবার বাইরের ল্যাব থেকে টাকা দিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন। সেই সব রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকেরাও সংশয়ে থাকেন।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘শীঘ্রই হাসপাতালে পুরোদমে ডেঙ্গি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়ে যাবে। আমাদের আর রক্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে না। দ্রুত চিকিৎসাও শুরু করা যাবে।’’
রোগীর আত্মীয়েরা জানালেন, হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা হলে আমাদের আর টাকা খরচ করতে হবে না।
হাবরা পুরসভাতে ডেঙ্গি পরীক্ষার যন্ত্রপাতি বসে গিয়েছে পুর দফতরের টাকায়। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘মুম্বই থেকে একটি যন্ত্র এলেই পুরসভার স্বাস্থ্যদীপে ডেঙ্গি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।’’ এত দিন পুরসভাতে শুধু এনএস-১ পজিটিভ পরীক্ষা করা হচ্ছিল। ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য পুরসভা রোগী প্রতি ৩২৫ টাকা নিচ্ছে। কারণ ওই রক্ত তাঁরা কলকাতার একটি সংস্থার ল্যাবে পাঠিয়ে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট করিয়ে আনতে হচ্ছিল। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এখন থেকে খুব অল্প টাকায় ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা করানো যাবে।’’
মাস দু’য়েক ধরে জ্বর ও ডেঙ্গি রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সোমবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, ওয়ার্ডে তিলধারণের জায়গা নেই। এক শয্যায় তিনজনও রয়েছে। আর মেঝেতে রেখেও জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেল, ‘‘সোমবার হাসপাতালে জ্বরে-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৯৯ জন। অথচ, সব মিলিয়ে শয্যা সংখ্যা ৯২টি। যদিও সুপার জানিয়েছেন, এখন হাসপাতালে ভর্তি জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই এসেছেন অশোকনগর ও হরিণঘাটা ও গাইঘাটা থেকে। হাবরা থেকে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম।
এ দিকে, হাবরা পুরসভার কাউন্সিলর তারক দাস সোমবার সকালে এলাকায় মশা মারতে বেরিয়ে পড়েন। নিজে হাতে মশা মারার তেল স্প্রে করেন। অনেককে মশারিও তুলে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy