Advertisement
E-Paper

আজও পানীয় জল কিনে খেতে হয়

গোবরডাঙা পুরসভা তৈরি হয়েছিল ১৮৭০ সালে। ১৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পুর এলাকায় ১৭ হাজার পরিবারের বাস। জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫২

পুরসভার বয়স প্রায় দেড়শো হতে চলল। অথচ, আজও গোবরডাঙা পুর এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মিটল না। এলাকার মানুষ, যাঁদের কিছুটা আর্থিক সামর্থ্য আছে, তাঁরা পানীয় জল কিনে খান। আর যাঁরা তা পারেন না, তাঁরা টিউবয়েলের জলের ভরসাতেই থাকেন। যদিও এলাকাটি আর্সেনিক-প্রবণ। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের তরফে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি আর্সেনিক-মুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

গোবরডাঙা পুরসভা তৈরি হয়েছিল ১৮৭০ সালে। ১৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পুর এলাকায় ১৭ হাজার পরিবারের বাস। জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। বাম আমলে, ১৯৮৪ সালে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য এখানে প্রাথমিক পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর দু’টি ওভারহেড রিজার্ভার তৈরি করে। বেশ কিছু এলাকায় পাইপ লাইন বসানো হয়। পুরসভার তরফে বাড়িতে জলের লাইন সংযোগও কিছু দেওয়া হয়েছিল। এখন অবশ্য আর বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয় না।

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, কমবেশি ৯টি ওয়ার্ডে এখন পাইপ লাইন রয়েছে। কিন্তু তা নেহাতই জরাজীর্ণ। রিজার্ভার দু’টিও বেহাল। পুরসভার তরফে মাঝেমধ্যে মেরামত করা হয়। পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত জানালেন, রিজার্ভার দু’টির এখন কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থা। পাইপ লাইনের মাধ্যমে যে জল সরবরাহ হয়, তা পানীয়ের উপযুক্ত নয়। বাসিন্দারা জানালেন, ওই জল দিয়ে মানুষ এখন কাপড়চোপর কাচেন। কেউ কেউ অবশ্য অস্বাস্থ্যকর জেনেও পান করেন।

পুরবাসীর পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে পুরসভার তরফে রাজ্যের পুর দফতরে একাধিক বার আবেদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’দুবার ডিপিআর তৈরিও হয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের ঋণের টাকায় এখানে নতুন করে জল প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফে আলোচনা হয়েছিল। ওই ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা এখানে চারবার ঘুরেও গিয়েছেন। কিন্তু তারপরে আর কাজ এগোয়নি।’’

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন করে জলপ্রকল্পের জন্য পুর এলাকায় দু’টি ওভারহেড রিজার্ভার তৈরি করতে হবে। করতে হবে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও। সে জন্য জায়গাও দেখা রয়েছে। বসাতে হবে পাইপ লাইন। সব মিলিয়ে খরচ পড়বে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা।

নৈহাটি গঙ্গা থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল এনে তা পরিস্রুত করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য এখন কাজ চলছে বিভিন্ন এলাকায়। ওই জল অশোকনগর, হাবরা, গাইঘাটা পর্যন্ত পৌঁছনোর কথা। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘গঙ্গার ওই জল গোবরডাঙাতেও আসার কথা। গোবরডাঙার জন্য আলাদা লাইন দেওয়া হবে। কিন্তু সে জন্য আগে পরিকাঠামো তৈরির প্রয়োজন।’’

এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বহু মানুষ এখন পানীয় জল কিনে খাচ্ছেন। ২০ লিটার জলের দাম ২০ টাকা। পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের বাপি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী যখন জল প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন, আমরা এলাকার মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কারণ, এলাকাটি আর্সেনিক-প্রবণ। কিন্তু এখন দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, সব কিছু ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে।’’

পুরপ্রধান অবশ্য আশাবাদী, গঙ্গার জল এনে পানীয় জলের সমস্যা শীঘ্রই মেটানো সম্ভব হবে।

Drinking Water Gobardanga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy