Advertisement
১৭ মে ২০২৪

উদ্বোধনের পরেও চালু হল না ছাত্রী নিবাস

জয়নগর থেকে রায়দিঘির কলেজে পড়তে আসে মারুফা খাতুন। বাংলা অনার্সের এই ছাত্রী এখন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও দূরত্বের কারণে রোজ কলেজে আসতে পারে না মারুফা।

চালু হয়নি ছাত্রী নিবাস। —নিজস্ব চিত্র।

চালু হয়নি ছাত্রী নিবাস। —নিজস্ব চিত্র।

দিলীপ নস্কর
রায়দিঘি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০২:১৭
Share: Save:

জয়নগর থেকে রায়দিঘির কলেজে পড়তে আসে মারুফা খাতুন। বাংলা অনার্সের এই ছাত্রী এখন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও দূরত্বের কারণে রোজ কলেজে আসতে পারে না মারুফা। নিয়মিত ক্লাস করতে না পারায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে এই ছাত্রী। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘পড়তে গেলে আর কলেজ যেতে পারি না। কলেজের ছাত্রীনিবাসটি চালু হলে এমন হবে না।’’

মারুফা একা নন, তার মতো অনেকেই কয়েক কিলোমিটার উজিয়ে কলেজে আসেন। পথে যানজটে আটকে দেরি হয়ে যায়। যাত্রাপথের এই যন্ত্রণা মেটাতেই তৈরি করা হয়েছিল ছাত্রী নিবাস। কিন্তু সেটি এখনও চালু হয়নি। মাস কয়েক আগে রায়দিঘিতে এসে একগুচ্ছ প্রকল্পের সঙ্গেই এই ছাত্রী নিবাসটিও উদ্বোধন করেছিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দূর থেকে আসা ছাত্রীরা আশা করেছিলেন, সমস্যা মিটবে। কিন্তু কোথায় কী? উদ্বোধনের পরে মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও ছাত্রীনিবাসটি চালু করার নামগন্ধটুকু নেই।

রায়দিঘি কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলতলির মৈপিঠ কোস্টাল, বাসন্তী, ক্যানিং, গোসাবা, পাথরপ্রতিমা একাংশের ছাত্রীদের ভরসা হল এই কলেজ। ওই সব এলাকার রাস্তাঘাটের এখনও তেমন উন্নতি হয়নি। যান চলাচলের সুব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।

ভুটভুটি, ভ্যান, অটোতে বাদুড় ঝোলা হয়ে ছাত্রছাত্রীরা কলেজে আসেন। এই ভাবে যাতায়াত যেমন বিপজ্জনক তেমন সময়সাপেক্ষও বটে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে মাঝপথে পড়াশোনা বন্ধ করে দেন। অনেকে ভাল নম্বর থাকা সত্ত্বেও কলেজে ভর্তি হন না। প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সব দিক চিন্তাভাবনা করে ২০০৮ সালে বাম আমলে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে একটি ছাত্রী নিবাস তৈরির অনুমোদন মেলে। প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রায়দিঘি কলেজের সামনে প্রায় এক বিঘা জমির উপর চার তলা বাড়ির কাজ শুরু হয়। বছর খানেকের মধ্যে সেই বাড়ি নির্মাণ শেষ হয়। কিন্তু এখনও চালু হল না ছাত্রী নিবাস। বাধ্য হয়ে অনেকে কলেজের সামনে বাড়ি ভাড়া করে, মেসে থেকে পড়াশোনা করছেন। ছাত্রীদের অভিভাবকেরা জানান, মেয়ে ছাত্রী নিবাসে থাকলে তাঁদের চিন্তা কম হবে। কারণ সেটি কলেজ কর্তৃপক্ষের অধীনে।

প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন ছাত্রী নিবাসটি ৯০ শতাংশ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেটি এখনও কেন চালু করা হল না বুঝতে পারছি না।’’ স্থানীয় বিধায়ক দেবশ্রী রায়কে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার আশ্বাস, খুব শীঘ্রই নীল সাদা রং করা ওই ছাত্রী নিবাসটি চালু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

student hostel inauguration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE