Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বাজার আগুন, লক্ষ্মীপুজো নিয়ে চিন্তায় বহু পরিবার

বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে লক্ষ্মীপুজোর জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন বিমলবাবু। কিন্তু ফুল, ফল, সব্জি সবের দাম জিজ্ঞাসা করে চক্ষু চড়কগাছ তাঁর! শুধু ক্যানিঙের বিমলবাবু নন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার কাকদ্বীপের বাজারেও অন্য দিনের তুলনায় ফল-ফুল-সব্জির দাম আকাশ ছোঁয়া।

বিকোচ্ছে লক্ষ্মীর পট। নিজস্ব চিত্র।

বিকোচ্ছে লক্ষ্মীর পট। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫০
Share: Save:

বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে লক্ষ্মীপুজোর জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন বিমলবাবু। কিন্তু ফুল, ফল, সব্জি সবের দাম জিজ্ঞাসা করে চক্ষু চড়কগাছ তাঁর!

শুধু ক্যানিঙের বিমলবাবু নন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার কাকদ্বীপের বাজারেও অন্য দিনের তুলনায় ফল-ফুল-সব্জির দাম আকাশ ছোঁয়া। জিনিস কিনতে গিয়ে মানুষের পকেটে টান পড়ছে। বাজার করতে এসে এক গৃহিণী বললেন, ‘‘জিনিসের এত দাম দেখে সব কম কম করে কিনতে হচ্ছে। পুজোর সময়ে প্রতিবারই দেখি জিনিসের দাম বেড়ে যায়। বাজেট থেকে অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পুজো করতেই হবে।’’ এ বার কম পদ দিয়েই ভোগ হবে মা লক্ষ্মীর।

একই অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, বসিরহাট ও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বাজারগুলিতেও।

পুজোর আগের দিন ক্যানিং বাজারে গিয়ে দেখা গেল অন্য দিনের তুলনায় ফল, সব্জির দাম আগুন। আখ আগে বিক্রি হচ্ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এ দিন আখ ৪০ টাকা করে পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আপেল মিলছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, নাসপাতি ১৫০ টাকা কেজি, শসা ৪০ টাকা কেজি, খেজুর ১২০ টাকা কেজি, আঙুর ২০০ টাকা কেজি, পেয়ারা ৫০ টাকা কেজি, কাঁঠালি কলা ১০ টাকা জোড়া, নারকেল প্রতি পিস ৩৫-৪০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা জোড়া। বেগুন ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লঙ্কা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু ২৬ টাকা কেজি। আদা ১২০ টাকা কেজি, পটল ৩০ টাকা কেজি, পালং শাক ৪০ টাকা কেজি, চিড়ে ১০০ টাকা কেজি, ছোলা ১১০ টাকা কেজি, চিনি ৪০ টাকা কেজি, গোবিন্দভোগ চাল ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুজোতে পদ্ম ফুলের প্রয়োজন। সেই ফুল ক্যানিং বাজারে এক পিস ৩০-৩৫ টাকায় মিলছে। পদ্মের আকাল থাকায় অনেকে আবার এর থেকে বেশি দাম দিয়েও ফুল পাচ্ছেন না।

বনগাঁ বাজারে আপেল, নাসপাতি ও খেজুর ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আঙুর ২০০ টাকা কেজি, শশা ৪০ টাকা, পেয়ারা ১০০ টাকা দরে বাজারে বিকোচ্ছে। যা কিনতে মানুষকে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

গৃহবধূ অনিতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ বার ভেবে ছিলাম ঘটা করে লক্ষ্মী পুজো করব। কিন্তু জিনিসের যা দাম তাতে পেরে ওঠা যাচ্ছে না। বাজেট বাড়িয়েও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। পুজোতে পদ্ম ফুল লাগে তা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হচ্ছে পদ্মের বদলে শাপলা ফুল দিয়ে পুজোর কথা ভাবা হচ্ছে।’’

ক্যানিঙের বাসিন্দা গায়েত্রী সাহা বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মী পুজোয় কোনও প্রতিমা থাকে না। কলা গাছকে বৌ সাজিয়ে পুজো করা হয়। কিন্তু কলা গাছকে যে সুতির শাড়ি পরানো হয়, তার দাম এ বার গতবারের তুলনায় প্রায় ২০০ টাকা বেশি।’’ তিনি জানালেন, ফলমূলের যা দাম, পেরে ওঠা যাচ্ছে না। বাজেট গত বারের তুলনায় এ বার আরও ৫ হাজার বাড়িয়েও কুল করা যাচ্ছে না!

ক্যানিং সব্জি বাজার কমিটির সম্পাদক বিকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘অন্যান্য দিনের তুলনায় পুজোর আগের দিন জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। আসলে চাহিদার তুলনায় জিনিসের জোগান কম থাকায় দাম হঠাৎ করে এত বেড়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lakshmi puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE