ভুবনেশ্বরী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী দেখছেন নার্স। নিজস্ব চিত্র
বাইরে থেকে চিকিৎসক এনে এলাকায় চলছে দুয়ারে ডাক্তার শিবির। অথচ একই ব্লকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের অভাবে হা-হুতাশ করছেন সাধারণ মানুষ। বুধবার এমনই ছবি দেখা গেল কুলতলিতে।
কুলতলির জামতলায় বিআর অম্বেডকর কলেজে মঙ্গল ও বুধবার দুয়ারে ডাক্তার শিবিরের আয়োজন হয়। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিবিরে আসেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিবির থেকে দু'দিনে প্রায় ১৬০০ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন।
যে এলাকায় এই শিবির হচ্ছে, সেখান থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বুধবার গিয়ে দেখা গেল, ভিড় করেছেন বহু রোগী। এক জন নার্স ওষুধ দিচ্ছেন। রোগীদের অভিযোগ, সপ্তাহে দু’দিন করে এক জন চিকিৎসক আসেন। বাকি দিনগুলিতে এক জন ফার্মাসিস্ট থাকেন। তিনিই ওষুধ দেন। কোনও কোনও সপ্তাহে চিকিৎসকেরও দেখা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ।
স্থানীয় মানুষজন জানালেন, হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে গুরুতর কোনও সমস্যা হলে তিরিশ কিলোমিটার দূরে গ্রামীণ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় রোগীকে। রোগীর পরিবারকেই গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে হয়। হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবে গ্রামীণ চিকিৎসকেরাই ভরসা বলে জানান এলাকার মানুষ।
ভুবনেশ্বরী ছাড়াও কুলতলি ব্লকে কৈখালি এবং কাঁটামারিতে আরও দু'টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। অভিযোগ, সেখানেও নিয়মিত চিকিৎসক থাকেন না। কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, এক জন চিকিৎসকই তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু'দিন করে পরিষেবা দেন। স্থানীয় মানুষের দাবি, দুয়ারে ডাক্তার শিবির না করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত চিকিৎসক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসা রাধাগোবিন্দ দাস বলেন, "সপ্তাহে দু’দিন, মঙ্গল ও বুধবার করে এক জন চিকিৎসক আসেন। কিন্তু আজ এসে দেখছি, তিনিও আসেননি। অনেক সময়ে খরচ করে হাসপাতালে এসে চিকিৎসক না দেখিয়েই ফিরতে হয়। প্রত্যন্ত এই এলাকায় নিয়মিত এক জন চিকিৎসক থাকলে খুব ভাল হয়।" বাসন্তী পাল নামে এক রোগী বলেন, "শুনেছি জামতলায় দুয়ারে ডাক্তার শিবির হচ্ছে। কিন্তু তাতে আমাদের কী লাভ! গাড়ি ভাড়া করে তিরিশ কিলোমিটার গিয়ে ডাক্তার দেখানো সম্ভব নয়। তার থেকে এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন চিকিৎসক থাকলে ভাল হত।"
দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, "কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা উচ্চতর পড়াশোনার বা অন্য কারণে ছুটিতে যান। সে সময়ে শূন্যস্থান তৈরি হয়। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।" প্রাথমিক স্বাস্থ্যেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নতিতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy