সেটা ২০০৬ সালের কথা। তখনও হেলিকপ্টারের উড়ানে এতটা অভ্যস্ত হননি তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে বার বাগদায় এসে দলের প্রার্থী দুলাল বরের প্রশস্তিতে মঞ্চ ভরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা।
দিন বদলেছে। এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আর দুলাল জার্সি বদলে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। যোগ দিয়েই পেয়ে গিয়েছেন ভোটের টিকিটও।
২০০৬ সালের পরে এই প্রথম বাগদার মাটিতে পা রাখলেন মমতা। আর এ বার দুলালের নামটুকুও উচ্চারণ করলেন না ঠা ঠা রোদে হাজার পঁচিশ মানুষের জমায়েতে দাঁড়িয়ে।
বুধবার বাগদার হেলেঞ্চায় বেলা আড়াইটে নাগাদ নামে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। ছাব্বিশ মিনিটের ভাষণে একবারও তিনি দুলাল বরের নামও মুখে আনেননি। দুলালকে না হয় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, কিন্তু যে সব তৃণমূল কর্মী-নেতাকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন দুলাল, সে প্রসঙ্গেও একটি কথা খরচ করেননি মমতা।
যা জেনে দুলালবাবুর প্রতিক্রিয়া, আমাদের প্রতি ওঁর সহানুভূতি আছে।’’
এ দিন মমতার বক্তৃতা মাইকে তাঁর কানে আসেনি বলেই দাবি করলেন দুলালবাবু। তাঁর অনুগামীদের ব্যাখ্যা, এলাকায় দুলালবাবু প্রভাব এতটাই, সে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কটূক্তির রাস্তা এড়িয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে বিরোধী প্রার্থীকে কটূক্তি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করেছেন তিনি।
এমন ব্যাখ্যা অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তাঁদের দাবি, আসলে এ ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে গুরুত্বই দিতে চাননি বলে ও নিয়ে মন্তব্য করেননি তৃণমূল নেত্রী।
দুলালের নাম না করলেও জোটকে যথারীতি সমালোচনা করেছেন মমতা। বিজেপিকেও ‘ভোটের কোকিল’ বলে দুষেছেন।
আর যা বলেছেন, তার সিংহভাগ জুড়ে ছিল দলীয় প্রার্থীর প্রশস্তি। প্রাক্তন সিবিআই অফিসার তথা তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক (এ বারের প্রার্থী) উপেন বিশ্বাস সম্পর্কে মমতার মন্তব্য, ‘‘উনি একজন সৎ অফিসার ছিলেন। উপেনদাকে আমার চাই। না হলে মা-মাটি-মানুষের সরকার হবে কী করে?’’
বাগদার ভোটারদের একটা বড় অংশ মতুয়া। সে দিকে তাকিয়ে মতুয়াদের জন্য রাজ্য সরকার কী কী উন্নয়ন করেছে, তারও ফিরিস্তি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে সারদা কাণ্ডে তৃণমূলের নাম জড়িয়ে পড়া, নারদ ঘুষ কাণ্ড— এ সব নিয়ে মন্তব্য করেননি তিনি। নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যবাসী তাঁর কাছ থেকে যে সব চোখা চোখা মন্তব্য শুনেছে, তারও লেশমাত্র এ দিন ছিল না মমতার ভাষণে। বরং শরীরী ভাষায় ঈষৎ ক্লান্ত মমতার বক্তৃতায় ঝাঁঝ কিছুটা কমই ছিল বলা চলে। মঞ্চে ছিলেন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, প্রার্থী উপেন বিশ্বাসরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy