Advertisement
০৪ মে ২০২৪

গাফিলতি দেখলে বাতিল ঠিকাদার, নির্দেশ সেচমন্ত্রীর

বাঁধ মেরামতির কাজ হওয়ার কথা ছিল বেশ কয়েকমাস আগে। দেরি হয়েছে ভোট এবং কিছু আধিকারিক-ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতির জন্য— বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে এ কথাই জানিয়ে গেলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাঁধের পরিস্থিিতর দিকে নজর মন্ত্রীর। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বাঁধের পরিস্থিিতর দিকে নজর মন্ত্রীর। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

শান্তশ্রী মজুমদার
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০১:৪৮
Share: Save:

বাঁধ মেরামতির কাজ হওয়ার কথা ছিল বেশ কয়েকমাস আগে। দেরি হয়েছে ভোট এবং কিছু আধিকারিক-ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতির জন্য— বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে এ কথাই জানিয়ে গেলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

কাকদ্বীপ মহকুমার বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন। সেই সব এলাকা বুধবার ঘুরে দেখেন রাজীববাবু। পনেরো দিনের মধ্যে সমস্ত বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

ভেঙেছে, বা ভাঙতে পারে— এ রকম সব জায়গাই দ্রুত মেরামত হবে বলে জানিয়েছেনন তিনি। আর যেখানে জমির সমস্যা নেই, সে সব এলাকায় যাতে দ্রুত কংক্রিটের বাঁধ করা যায়, মন্ত্রী সে জন্যও পরিকল্পন‌া গ্রহণ করতে বলেছেন দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের।

কোথাও বাঁধ ভাঙা, কোথাও জল বাঁধ ছুঁই ছুঁই— কয়েক মাস আগে বাঁধের এ সব ক্ষত মেরামত করে ফেললে আর হয় তো সমস্যা হতো না বলে মনে করেন এই সব এলাকার মানুষজন। বুধবার কাকদ্বীপ এবং নামখানার বেশ কয়েকটি এলাকা লঞ্চে ঘুরে দেখেন সেচমন্ত্রী। পরে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের জন্য কাজে দেরি হয়েছে। তবে ইঞ্জিনিয়ারদের বলেছি, সামনের কোটালের আগেই যেন মেরামতির কাজ শেষ হয়ে যায়।’’

এ দিন লঞ্চে কাকদ্বীপের নারায়ণপুর, ঈশ্বরীপুর, নাদাভাঙা, নামখানার মদনগঞ্জ এবং উত্তর নারায়ণগঞ্জ ঘুরে দেখেন সেচমন্ত্রী। খোঁজ নেন, মৌসুনি দ্বীপেরও। ঈশ্বরীপুরে কিছুটা অংশে বাঁধ ভেঙে এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে চার-পাঁচ দিন হল। বাড়ি-ঘরে সে রকম জল না ঢুকলেও কিছু জমি এবং পুকুর ডুবে গিয়েছে। বাকি জায়গাগুলির বাঁধের অবস্থাও খারাপ। মৌসুনির তিনটি পয়েন্ট— বালিয়াড়া, বাঘডাঙা এবং কুসুমতলায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে। ফ্রেজারগঞ্জে হাতিরকন্যা এলাকায় ভাঙনে ঠিক সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি বলে মন্ত্রীর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রীমন্ত মালি। মানুষের দুর্গতির জন্য কিছুটা ক্ষোভ এসে পড়ে দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের উপরেও। নির্বাচন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অনেক ওয়ার্ক অর্ডার দেরিতে হওয়ায় কাজ এখনও শুরু হয়নি। তাই আধিকারিকদেরও খানিকটা বকাবকি করেন মন্ত্রী। তবে অফিসারেরা জানান, ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেলেও কোটাল শুরু হয়ে যাওয়ার জন্য কাজ শুরু করা যায়নি। জল নামলেই কাজ হবে।

বর্ষা ঢুকতে বাকি আর মাত্র দু’তিন দিন, এ রকমই পূর্বাভাষ আবহাওয়া দফতরের। তবে বর্ষায় যাতে নতুন করে বাঁধ না ভাঙে সে জন্য প্রচুর বালির বস্তা, মাটি খোঁড়ার মেশিন তৈরি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী। একই সঙ্গে অফিসারদের প্রচুর ঘুরে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতেও বলেন। কাজ শুরু করতে দেরি হলে যদি ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতি দেখা যায়, তবে তাদের শো’কজ এবং প্রয়োজনে বাতিলও করতে বলেন তিনি।

রাজীববাবুর সঙ্গে এ দিন ছিলেন এলাকার মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন ছাড়াও জমির সমস্যা রয়েছে। সে জন্য কাজ এগোনো সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে ঈশ্বরীপুর এবং নারায়ণগঞ্জের মতো এলাকায় নদীবাঁধ-লাগোয়া রায়ত সম্পত্তি থেকে জমি কেনার ক্ষেত্রে মনোমালিন্যের জায়গা ছিল। কিন্তু তা আপাতত মিটেছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, সব জায়গায় পাকা বাঁধ না করা গেলেও, যে সমস্ত জায়গায় বাঁধ দিলে তা জলে ধুয়ে যাবে না, এ রকম জায়গায় জমির সমস্যা মিটে গেলেই পাকা বাঁধ তৈরি করে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajib Banerjee Irrigation minister Dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE