চারটি পঞ্চায়েতের মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা। উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা এলাকায় এটুকু বাধার জন্যই থমকে রয়েছে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার ৪৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। সেই জট ছাড়াবার জন্য নিদেনপক্ষে ৫০ বার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। যাদের জমি অধিগ্রহণের নোটিশ দেওয়া হয়েছে তারা জমির জন্য আরও দাম চাইছেন। সমস্যাটা এখানেই। বৃহস্পতিবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা, সুগত সাহাকে সঙ্গে নিয়ে আমডাঙায় গিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বললেন রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। জমির দামের প্যাকেজ বাড়াবার বিষয়টি সংসদ তিনি তুলবেন বলে জানান তিনি। দলের বিধায়কদের দিয়ে বিধানসভাতেও বিষয়টি তুলে ধরা হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন অধীরবাবু। জমি জটের বাধা হঠাতে কেন্দ্র ও এ রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের এক সর্বভারতীয় নেতার এমন তৎপরতা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আমডাঙা এলাকায় ওই চার কিলোমিটার পথ মাপঝোঁক করতে গিয়ে বারবার বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন সরকারি কর্মীরা। এ দিন ওই এলাকাতেই দিয়ে জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলেন অধীরবাবু। সঙ্গে ছিলেন, প্রসেনজিৎ ঘোষ, সজল দে, শেখ নিজামউদ্দিন মত জেলা কংগ্রেস নেতারাও। যাঁরা বাধা দিচ্ছেন তাঁরা জানান, পুরোনো নিয়মে সরকার জমির দাম দিচ্ছে। ক্ষতিপূরণের যে প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে তার চেয়ে জমির মূল্য অনেক বেশি। অন্য দিকে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে, সেই হিসেবেই সবাইকে জমির দাম দেওয়া হচ্ছে। সবাই মেনে নিলেও শুধু এই এলাকার বাসিন্দারাই তা মানতে চাইছেন না। কতটা জমি নেওয়া হচ্ছে সে সবও এ দিন ঘুরে দেখেন অধীরবাবু।
রাস্তা সম্প্রসারণের মত একটি উন্নয়ণমূলক কাজে বিরোধী দল কংগ্রেসের হয়ে অধীরবাবুর এই তৎপরতাকে বাহবা দিচ্ছেন কেউ কেউ। কেউ মনে করছেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই অধীরবাবু স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমডাঙা গিয়েছেন। আবার অনেকে মনে করছেন, যেহেতু এই রাস্তাটি ডালখোলা হয়ে অধীরবাবুর সংসদীয় এলাকা দিয়ে গিয়েছে সে জন্যই রাস্তাটি তৈরির বিষয়ে তাগিদ রয়েছে অধীরবাবুর।
এই এলাকায় রাস্তাটির কাজ থমকে রয়ছে ৮ বছর ধরে। কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের ডালখোলা পর্যন্ত সড়কটি চার লেন করার জন্য ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় বাজেটে ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। সেই রাস্তার প্রায় পুরোটাই কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বারাসতের সন্তোষপুর মোড় থেকে আমডাঙা থানার রাজবেড়িয়ার মধ্যে মীরহাটি, কামদেবপুর, সোলাডাঙা এবং খেলিয়া মৌজার মাত্র ৪ কিলোমিটার রাস্তার কিছু জমি মেলেনি। জমির যথাযথ দাম দিতে হবে এই দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানিরা ‘ভূমি ও ব্যবসা রক্ষা কমিটি’ নামে একটি সংগঠন করে সেই কাজে বাধা দিচ্ছেন। রাস্তা তৈরির জন্য জমির দামের বিষয়ে বিভিন্ন দলের জন প্রতিনিধিদের নিয়ে বারবার বৈঠক করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জট এখনও কাটেনি। বন্ধ হয়ে রয়েছে রাস্তার কাজও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy