Advertisement
০৩ মে ২০২৪
School Service Commission

নিয়োগ-তালিকায় নাম নেই বহু স্কুলের

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করেছিল। ওই পোর্টালের সুবিধা নিয়ে আবেদন করে গ্রাম ছেড়ে শহরে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা চলে গিয়েছেন।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সমরেশ মণ্ডল
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২৭
Share: Save:

নতুন নিয়োগের তালিকা প্রকাশ হলেও শিকে ছিঁড়ল না বহু স্কুলের ভাগ্যে!

স্কুল সার্ভিস কমিশন বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যের উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করেছে। ১১৫৭ পাতার ওই তালিকায় স্কুলের নাম, ঠিকানা, কোন বিষয়ে শূন্যপদ রয়েছে, তা বিস্তারিত আকারে উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি, স্কুলগুলির কোড নম্বরও দেওয়া রয়েছে তালিকায়। ৬ নভেম্বর থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন উচ্চ প্রাথমিকের মেধাতালিকায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে। কোন বিষয়ে কবে কাউন্সেলিং হবে, তার সময়সীমা স্কুল সার্ভিস কমিশন ওয়েবসাইটে দিয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের নাম, রোল নম্বর দেওয়ার পাশাপাশি দিতে হচ্ছে আধার নম্বরও। নতুন করে ছবিও আপলোড করতে হচ্ছে কললেটার পাওয়ার জন্য।

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করেছিল। ওই পোর্টালের সুবিধা নিয়ে আবেদন করে গ্রাম ছেড়ে শহরে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা চলে গিয়েছেন। ব্যাপক হারে বদলির জেরে গ্রামের অনেক স্কুলে এখন বেশ কিছু বিষয়ে শিক্ষকই নেই। সমস্যা হচ্ছে পঠনপাঠনে। ওই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, গ্রামীণ এলাকায় বেশির ভাগ পড়ুয়াই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু বদলির ফলে বহু শিক্ষকপদ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় স্কুলগুলির অস্তিত্বই পড়ছে প্রশ্নের মুখে। গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকেরা একাধিক বার তাঁদের স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদে শিক্ষক দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিল। এসএসসির প্রকাশিত বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদের তালিকায় অনেক স্কুলের নাম নেই। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, বার বার মহকুমার এআই ও জেলার ডিআইকে শূন্যপদে শিক্ষক দেওয়ার কথা জানানো হলেও এসএসসির তালিকায় নাম নেই।

কাকদ্বীপের দক্ষিণ কাশিয়াবাদ শিক্ষানিকেতন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব দাস জানান, তাঁদের স্কুলে উচ্চ প্রাথমিকে বাংলা, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নেই। সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে মহকুমা ও জেলার শিক্ষা দফতরে গিয়ে জমা দেওয়া হয়। অনলাইনেও ফর্ম ফিলআপ করতে হয়েছিল। তবুও নিয়োগের তালিকায় স্কুলের নাম নেই। স্কুলে উচ্চ প্রাথমিকে ৪০০ জন ছাত্রছাত্রী। ১০ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। সেখানে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে আছেন মাত্র তিন জন। বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক নেই। তাঁর প্রশ্ন, এ ভাবে স্কুল চলবে কী করে!

ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপিঠ হাই স্কুলে ৩৪১ জন ছাত্রছাত্রী। শিক্ষক আছে মাত্র দু’জন। প্যারাটিচার তিন জন। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক পাওয়ার জন্য আবেদন করেও পাওয়া মেলেনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন বলেন, ‘‘আমি ছ’জন শিক্ষকের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তালিকায় আমার স্কুলের নাম দু’টি বিষয়ে দেওয়া আছে। বাকি চারটি বিষয়ের নাম ওঠেনি। এই ভাবে স্কুল চালানো যাচ্ছে না।’’

মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়া কিশোর হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অরিন্দম মাইতি জানান, স্কুলে ৮৬৭ জন ছাত্রছাত্রী। শিক্ষক আছেন ১৪ জন। নতুন শিক্ষক পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। তালিকায় স্কুলের একটি বিষয়ে নাম আছে। বাকি চারটি বিষয়ের নাম ওঠেনি। দ্বীপ এলাকা বলে তেমন কেউ এখানে আসতে চান না। স্কুল চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানালেন অরিন্দম। কাকদ্বীপ মহকুমার সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক হালদার বলেন, ‘‘মহকুমা এলাকায় যে সমস্ত স্কুলে শিক্ষক নেই, তাদের তালিকা তৈরি করে জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছিল। পরে তা শিক্ষা দফতরকে পাঠানো হয়। সেখানে থেকে এসএসসিতে গেছে। কী ভাবে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তা জানি না। যাঁদের সমস্যা হয়েছে, তাঁদের নতুন করে আবেদন জমা দিতে বলেছি। তা জেলা অফিসে পাঠানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kakdwip
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE