Advertisement
০৫ মে ২০২৪

প্রথম বার কাউন্সিলর হয়েই পুরপ্রধানের চেয়ারে তপন

বসিরহাট পুরসভার মোট ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতেই জয়ী হয়েছেন নতুন প্রার্থীরা। উন্নয়ন নিয়ে নানা ভাবনা-চিন্তা তাঁদের আছে। কিন্তু আইন-কানুন জেনে সে সব দায়িত্ব সামলাতে হবে। দলের নেতারা এখন ভাবছেন, কত দ্রুত নতুন কাউন্সিলরদের কাজের ক্ষেত্রে আরও কুশলী করে তোলা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০০:১২
Share: Save:

বসিরহাট পুরসভার মোট ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতেই জয়ী হয়েছেন নতুন প্রার্থীরা। উন্নয়ন নিয়ে নানা ভাবনা-চিন্তা তাঁদের আছে। কিন্তু আইন-কানুন জেনে সে সব দায়িত্ব সামলাতে হবে। দলের নেতারা এখন ভাবছেন, কত দ্রুত নতুন কাউন্সিলরদের কাজের ক্ষেত্রে আরও কুশলী করে তোলা যায়।

৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের তপনকুমার সরকার (তপু) প্রথম বার জিতে পুরপ্রধানও হলেন। গুরুদায়িত্ব পেয়ে কী বলছেন তিনি? নিজে নতুন, তার উপরে এত জন নতুন কাউন্সিলরকে নিয়ে কাজ করতে হবে। তপনবাবুর কথায়, ‘‘দলের নেতানেত্রীরা আছেন। সব রকম দরকারে তাঁদের সাহায্য নেব। কাজে নামলেই কাজ শেখা হয়ে যায়। আশা করব, সব নতুন কাউন্সিলরেরা দ্রুত নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে এলাকার উন্নয়নের দিকে নজর দেবেন।’’ বঠর পঞ্চান্নর তপুবাবুর কথায়, ‘‘আমার বাবা-মাও কাউন্সিলর ছিলেন। ফলে পুরসভার কাজ সামনে থেকে দেখেছি। সেই অভিজ্ঞতাও কাজে লাগবে।’’ ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছেন অদিতি রায়চৌধুরী (মিত্র)। বললেন, ‘‘বাবা-শ্বশুর-স্বামী সকলেই তৃণমূল নেতা। কলেজে ছাত্র রাজনীতি করায় বিষয়টি নিয়ে একটা স্বচ্ছ ধারণা ছিল। একটা বড় অংশকে দেখেছি জেতার আগে এবং পরে বদলে যান। তাই ঠিক করেছি, যে ভাবেই হোক না কেন, মানুষের উন্নয়নে শরিক হব। রাস্তা, বিদ্যুৎ, আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল এবং ইছামতীর বাঁধ নির্মাণে গুরুত্ব দেব।’’ মির্জাপুরের বাড়িতে বসে অদিতি বলেন, ‘‘আমি এক জন গৃহবধূ। বিএ পড়ার শেষে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় গুছিয়ে সংসার করছিলাম। নির্বাচনে যাঁরা আমাকে জয়ী করলেন, তাঁদের উন্নয়নের জন্যও গুছিয়ে কাজ করতে চাই।’’ ইছামতীর তীরে পিকনিক স্পটটিতে ইকো টুরিজম পার্কে পরিণত করার ইচ্ছে আছে তাঁর।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা পার্থসারথি বসুকে পরাজিত করে জয়ী হওয়া বিজেপির তপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘‘কাউন্সিলর হিসাবে জয়ী হলেও বোর্ড দখল না করায় অনেক ক্ষেত্রে এলাকার উন্নয়নের বাধা আসতে পারে। তবে সে সব অতিক্রম করে রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানীয় জলের উন্নয়নের কাজ করে যেতে চাই।’’

১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী তৃণমূলের কাউন্সিলার চিত্রা ঘোষের দাবি, রাস্তা-পানীয় জল এবং এলাকার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে মানুষের উন্নয়নই হবে প্রথম লক্ষ্য। ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের সুরাইয়া বেগম মণ্ডল বা ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী তৃণমূলের অদিতি মণ্ডল দ্রুত উন্নয়নের কাজে নামতে চান। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী বিজেপির সুবোধ নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘গরিব মানুষের যাতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পান, সে দিকে নজর দেবো।’’ ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী তৃণমূলের কাউন্সিলর রঞ্জিতা মৃধা সরকারের কথায়, ‘‘আমাদের দলের এত জন নতুন। সকলে এক সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার সুবিধা মিলবে।’’ ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী তৃণমূলের কাউন্সিলর শুভা দত্তের (মল্লিক) কথায়, ‘‘কাউন্সিলর হওয়া জীবনে এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা।’’

পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রদীপ রায় জয়ী হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ওয়ার্ডে অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করেন। আগে তাদের উন্নয়ন করতে চাই।’’ ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের দেবদূত খাঁড়া, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুদেব সাহা, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তপন মজুমদাররা বলেন, ‘‘নদী ভাঙন রোধ করা এবং নিকাশি ব্যবস্থার পাশাপাশি রাস্তা এবং বিদ্যুৎ পরিষেবার কাজ করতে চাই।’’

১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের নবনীতা রায়। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় পাম্প হাউস করে পাইপ লাইনের মধ্যে দিয়ে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে আমার প্রথম কাজ।’’ ১৯ নম্বর থেকে তৃণমূলের জয়ী ইলিয়াস আলি সর্দার, ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী পরিমল মজুমদার এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী স্বপ্না দাসের কথায়, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। বসিরহাট সাজানোর কাজে শরিক হতে পারব ভেবে খুব ভাল লাগছে।’’ ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন সিপিএমের রাজা বিশ্বাস (রাজু)। তিনি জানালেন, নিকাশির দিকে লক্ষ্য রেখে অন্য নাগরিক পরিষেবাগুলির উন্নতি করার দিকে নজর দেবেন বলে জানালেন।

এখন দেখার, একেবারে আনকোরা ১৩ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে কতটা দক্ষতার সঙ্গে পুরসভা চালাতে পারে শাসক দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE