Advertisement
০২ জুন ২০২৪

অনুশীলনের কোর্টই নেই, ব্যাডমিন্টন খেলা হবে কোথায়

কোথাও পর্যাপ্ত শাটল কক নেই। কোথাও নেই অনুশীলনের মাঠ। কাকদ্বীপ মহকুমার স্কুলগুলিতে ব্যাডমিন্টনে উৎসাহী পড়ুয়ার অভাব নেই। কিন্তু তারা খেলবে কোথায়? কয়েকটি স্কুলে তো ক্রীড়াসামগ্রী রাখার ঘর পর্যন্ত নেই।

শান্তশ্রী মজুমদার
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৫
Share: Save:

কোথাও পর্যাপ্ত শাটল কক নেই। কোথাও নেই অনুশীলনের মাঠ।

কাকদ্বীপ মহকুমার স্কুলগুলিতে ব্যাডমিন্টনে উৎসাহী পড়ুয়ার অভাব নেই। কিন্তু তারা খেলবে কোথায়? কয়েকটি স্কুলে তো ক্রীড়াসামগ্রী রাখার ঘর পর্যন্ত নেই।

কাকদ্বীপ শিশু শিক্ষায়তনের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শিম্পা দাস, পারমিতা দাসদের মতো অনেকেই ব্যাডমিন্টনটা বেশ ভাল খেলেন। অন্তত তাদের স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষকদের তাই মত। কিন্তু তারা ঠিক মতো অনুশীলনের সুযোগটুকুও সব সময় পায় না।

শিম্পার আক্ষেপ, ‘‘বাবা বাসের কনডাক্টর। আগে কলকাতার লেক গার্ডেন্সে অনুশীলন করতে যেতাম। কিন্তু দূরত্ব এবং আর্থিক অসুবিধার কারণে ছেড়ে দিয়েছি।’’

কাকদ্বীপের কোনও স্কুলেই ব্যাডমিন্টন খেলার পরিকাঠামো নেই। শুধু স্কুল কেন, ক্লাবগুলিতেও প্রায় এক অবস্থা। সেখানে শীতকালে হ্যালোজেন জ্বেলে, জাল টাঙিয়ে ব্যাডমিন্টনের আসর বসে বটে, কিন্তু সে তো শুধুই শখের খেলা। সারা বছর ব্যাডমিন্টনের অনুশীলন হয়, এমন ক্লাব কাকদ্বীপে নেই বললেই চলে। শুধু এই মহকুমা নয়, গ্রামীণ দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যান্য মহকুমাতেও কমবেশি একই অবস্থা। তার মধ্যেই হরিনাভির কাছে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্কুল ক্রীড়াসংসদ জেলা দল নির্বাচনের কাজ করে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা জানান, ভারতের ব্যাডমিন্টন ‘আইকন’ গোপীচন্দের হায়দরাবাদের দুটো অ্যাকাডেমিতে প্রায় সতেরোটা কোর্ট রয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যের নব্বই শতাংশ ব্যাডমিন্টন ক্লাবে একটির বেশি কোর্ট নেই। তাই কাকদ্বীপের মতো একটি মহকুমায় ব্যাডমিন্টনের উন্নত পরিকাঠামো থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ন্যূনতম পরিকাঠামোটুকুও থাকবে না কেন?

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই মহকুমার কয়েকটি স্কুল যুব কল্যাণ দফতরের তরফ থেকে খেলার সামগ্রী কেনার জন্য ১৫ হাজার টাকা করে পেয়েছে। এ ছাড়াও, প্রতিটি ব্লকে একটি করে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

সেই অনুদানের টাকা দিয়ে কেনা হোক ব্যা়ডমিন্টনের সামগ্রী, এমনটাই চাইছেন স্কুল স্তরের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়েরা।

জেলা স্কুলক্রীড়া সংসদের কার্যকরী সহ সভাপতি সন্দীপ কামার বলেন, ‘‘এটা ঠিকই, ব্যাডমিন্টন অনুশীলনের জন্য প্রায় কোনও পরিকাঠামোই এখানে নেই। তবে অনুদান পেলে কাকদ্বীপ মহকুমায় ব্যাডমিন্টনের প্রাথমিক পরিকাঠামো তৈরি করা হবে।’’

সদ্য সমাপ্ত অলিম্পিকে মান রেখেছে ব্যাডমিন্টন। রুপো পেয়েছেন পিভি সিন্ধু। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে বাংলার অনেক ব্যাডমিন্টন প্রতিভা ইতিমধ্যেই রাজ্য ছেড়েছেন। জাতীয় প্রতিযোগিতায় এখন তাঁরা ভিন রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন।

কে বলতে পারে, ভবিষ্যতে কাকদ্বীপের কোনও ভূমিপুত্র অন্য রাজ্যর জার্সি গায়ে খেলতে নেমে আন্তর্জাতিক স্তরে সফল হবেন না?

তখন ও হয় তো শুধু সমস্যার কথাই শুনিয়ে যাবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সঙ্গে যোগ হবে আক্ষেপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

badminton
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE