ফাঁকা: একজন পড়ুয়াকে নিয়েই ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষিকা। নিজস্ব চিত্র
গোটা স্কুলে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২ জন। গত প্রায় আট বছরে আর নতুন কোনও নিয়োগ হয়নি। ফলে, পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে। বর্তমানে ৪ জন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে গোটা স্কুল। ক্লাস করাতে না পেরে স্টাফরুমেই বেশির ভাগ সময় কাটছে শিক্ষকদের। এমনই অবস্থা হাড়োয়ার কুলটি পঞ্চায়েতের মাখলা জুনিয়ার বেসিক স্কুলের।
স্কুল সূত্রে খবর, ২০১০ সালে অনুমোদন পায় বিদ্যালয়টি। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। প্রথম দিকে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়ে বিদ্যালয়টি পথচলা শুরু করে। ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে ওই শিক্ষকেরা বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেন। ফলে, স্কুলটি প্রায় এক বছর বন্ধ থাকে। ২০১৪ সালে একজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকাকে নিয়োগ করা হয়। সেই সময় ৩০-৩৫ জন পড়ুয়াদের নিয়ে ফের চালু হয় স্কুলটি। কিন্তু আর শিক্ষক না আসায় ধীরে ধীরে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে। বর্তমান শিক্ষাবর্ষে তা ৪ জন পড়ুয়ায় এসে ঠেকেছে। এই চারজনও আবার একসঙ্গে রোজ উপস্থিত থাকে না। গোটা স্কুল চলে ১ বা দু’জন পড়ুয়াকে নিয়ে।
স্কুলের শিক্ষকেরা জানালেন, পড়ুয়াদের বিদ্যালয়ে আনার জন্য তাঁরা স্থানীয় তিনটি প্রাইমারি স্কুল ও পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক রাজু দাস বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের স্কুলে আনার জন্য ২৫০ টাকা ভর্তি ফি মুকুব করে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় অভিভাবকেরা এখানে সন্তানদের পাঠাতে চাইছেন না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন মোল্লা, সাবিনা বিবিরা বলেন, ‘‘অধিকাংশ সময়ে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকেন না। মিড-ডে মিলে রান্না করা খাবারের পরিবর্তে মাঝে মধ্যে মুড়ি-বিস্কুট ও অন্যান্য শুকনো খাবার দেওয়া হয়। তাই ওই স্কুলে ছেলেমেয়েদের কেউ ভর্তি করতে চান না।’’
এই প্রসঙ্গে রাজু বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা কম। আমাদেরই অফিসের কাজে ছোটাছুটি করতে হয়। তবে আমরা ক্লাস করাতে চাই। মিড-ডে মিল রান্নার জন্য সমস্ত পরিকাঠামো রয়েছে। তবে ১ বা দু’জন পড়ুয়ার জন্য রান্না করা সবসময় সম্ভব হয় না।’’
হাড়োয়া ব্লক বিদ্যালয় অবর পরিদর্শক শরিফুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘ওই বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য আমরা পঞ্চায়েত প্রধান ও এলাকাবাসীদের নিয়ে বৈঠক করেছি। আগামী শিক্ষাবর্ষে আরও পড়ুয়া যাতে ওই স্কুলে ভর্তি তা দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy