বাছাই: দু’রকমের পাত্রে আলাদা করে রাখা হচ্ছে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য। নিজস্ব চিত্র
জঞ্জাল দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে বাঁচাতে হবে— এই উদ্দেশ্যে কাকদ্বীপ-সহ পাথরপ্রতিমা, নামখানা ও সাগরের বিভিন্ন জায়গায় বাজার, বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে জৈব সার তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। সেই খাতায় নাম লিখিয়ে কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় মডেল হয়েছে। ইতিমধ্যে আবর্জনা থেকে সার তৈরি করে পুরস্কৃত হয়েছে হুগলির উত্তরপাড়া পুরসভা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েতে রোজ প্রায় ২ টন করে জঞ্জাল সংগ্রহ করে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। পঞ্চায়েত উপপ্রধান দেবব্রত মাইতি বলেন, ‘‘প্রায় চার মাস হল সফল ভাবে প্রকল্পটি চলছে। আপাতত বাজারের দোকান, বিয়েবাড়ি থেকে জঞ্জাল নিয়ে তা থেকে সার তৈরি শুরু হয়েছে।’’ প্রথম তিন মাস ভর্তুকিতে চললেও এপ্রিল থেকে প্রকল্প সাবলম্বী হয়েছে।
কী ভাবে চলছে এই কাজ?
মহকুমা শহর কাকদ্বীপে দীর্ঘদিন কোনও জঞ্জাল অপসারণের ব্যবস্থা ছিল না। এই পঞ্চায়েতের চতুর্থ ঘেরি এলাকায় প্রায় ১০ বিঘার একটি জায়গায় আবর্জনা ডাঁই করা হচ্ছে। কাকদ্বীপ বাজার, বামুনের মোড় বাজার, কাকদ্বীপ পান বাজার এবং বৈকুণ্ঠপুর আনাজ বাজার ও অনুষ্ঠান বাড়িগুলি থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে বর্জ্য। সেখানে দু’টি আলাদা ভ্যাটে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য রাখা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, আপাতত ছোট ব্যবসায়ী, দোকানদার থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানবাড়িগুলি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সে জন্য তাদের কাছ থেকে ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পে সাড়া পড়েছে অন্য ব্লকগুলেও। সাগর ব্লকের ধবলাট পঞ্চায়েতও একই ভাবে তৈরি সার বিক্রি করা শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। মুড়িগঙ্গা লাগোয়া এই পঞ্চায়েত এলাকায় একটি বড় ও আটটি ছোট বাজার এলাকার নালা দিয়ে আবর্জনা গঙ্গায় পড়ে দূষণ ছড়াচ্ছিল। মূলত গঙ্গা দূষণ রুখতে পঞ্চায়েতের চেষ্টায় চালু হয়েছে সার তৈরির প্রকল্প। এখানে সম্প্রতি গৃহস্থালির আবর্জনাও সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, কাকদ্বীপে ৪২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩২টিই মুড়িগঙ্গা-লাগোয়া। নামখানা ব্লকের নামখানা ও ফ্রেজারগঞ্জ পঞ্চায়েতেও এই কাজ চলছে। প্রকল্প হাতে নিয়েছে রুদ্রনগর, ধসপাড়া ২ ও গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতও।
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, এই কাজের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল, প্রকল্প নিজেরা না পারলে কয়েকটি পঞ্চায়েত মিলে করতে পারে। এই কাজের জন্য ২০ লক্ষ টাকা করে এককালীন অনুদান দেওয়া হচ্ছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ জানান, একশো দিনের কাজের তহবিল থেকেই এই এককালীন অনুদানের টাকা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘হুগলি নদী লাগোয়া এই জেলার সব পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে, এ রকম প্রকল্প নিতে। যারা এমন প্রকল্প হাতে নেবে তাদের ওই অনুদান মিলবে।’’ তবে প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে জেলা পরিষদের কাছে আবেদন করতে হবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy