Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রাক্তন সেনা প্রধানের বাড়ির পুজো নিয়ে আগ্রহ 

কুলপুরোহিতের নাম বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই তিনি এ বাড়িতে পুজো করতেন। ২০০৬ সালে বিজয়ার দিন তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।

আয়োজন: এখানেই হয় পুজো। নিজস্ব চিত্র

আয়োজন: এখানেই হয় পুজো। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১০
Share: Save:

দশমীর বিকেল। দুর্গা প্রতিমার বিদায় অনুষ্ঠানে ব্যস্ত বাড়ির সকলে। এমন সময়ে হঠাৎই পড়ে গেলেন কুলপুরোহিত। মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল তাঁর। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হল।

দুঃখজনক এই ঘটনাটি ভোলেনি টাকির রায়চৌধুরী পরিবার। তারা নাটমন্দিরের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে স্থায়ী বেদি করে স্মৃতি রক্ষা করেছেন কুলপুরোহিতের।

কুলপুরোহিতের নাম বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই তিনি এ বাড়িতে পুজো করতেন। ২০০৬ সালে বিজয়ার দিন তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে তাঁর ছেলে দেবাশিস এ বাড়ির পুজো করেন। বংশপরম্পরায় রায়চৌধুরী পরিবারের প্রতিমা গড়েন সনু মণ্ডল। মণ্ডপে চণ্ডীপাঠ এবং তন্ত্রধারকের কাজ করেন সুধাংশ জোয়ারদার।

সাড়ে তিনশো বছর পার করে ফেলেছে টাকির সৈয়দপুরে রায়চৌধুরী পরিবারের এই দুর্গাপুজো। জমিদার বংশের বড় অংশ আজ আর সৈয়দপুরে থাকে না। তবে পুজোর দিনগুলিতে শহর থেকে গ্রামে ফেরেন তাঁরা।

ইছামতীর এক পারে টাকি, অন্য পারে বাংলাদেশের সাতক্ষিরা। নদী-সংলগ্ন রায়চৌধুরী বাড়ি। দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন গুরুপ্রসাদ রায়চৌধুরী। সেই থেকে পরিবারের চার শরিক পালা করে পুজো করে আসছেন। এ বার যেমন সুব্রত রায়চৌধুরীর পরিবারের পালা। পুজোর দায়িত্বে আছেন দক্ষিণ আমেরিকায় থাকা তাঁরই উত্তরপুরুষ সঞ্জীব রায়চৌধুরী। তিনি এসে পৌঁছনোর আগে পাঁচ খিলান যুক্ত পুজোর দালানটি পরিপাটি করে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ির দেওয়ালেও পড়ছে রঙের পোঁচ। এ বাড়িতে এক সময়ে পশুবলি হত। বলির জন্য সাতক্ষিরা এবং সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রজারা নৌকো ভর্তি করে মহিষ, ভেড়া, ছাগল নিয়ে আসতেন। পুজোর দিনগুলিতে যাত্রার আসর বসত। মেলা বসত। প্রজাদের থাকা-খাওয়ারও ব্যবস্থা থাকত। এখন আর তেমনটা না হলেও জাঁকজমক সহকারেই পুজো হয়। কৃষ্ণ নবমীতে এখানে চণ্ডীর ঘট বসে। ১০৮ বাতির ঝাড়লণ্ঠন এবং বলির জন্য বিশাল খাঁড়াটি আজও এই বাড়ির ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করছে।

এখানে বাড়ির চৌহদ্দিতে কোনও পাঁচিল নেই। সকলের জন্য উন্মুক্ত পুজোদালান। এই বাড়ির ছেলে শঙ্কর রায়চৌধুরী ভারতের সেনাপ্রধান হওয়ার পরে পুজোর আকর্ষণ বেড়ে গিয়েছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছর পুজোর দায়িত্ব পড়েছে শঙ্কর রায়চৌধুরীরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Durga Puja 2018 Major Indian Army
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE