দীর্ঘ দিন ধরে ভেঙে পড়ে রয়েছে বিদ্যাধরী নদীর উপরে কাঠের সাঁকো। বিপজ্জনক ভাবে চলছে পারাপার। সেতু সারানোর কিছু টাকাও মঞ্জুর হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি কেউ।
‘পানশিলা সেতু’ নামে দেগঙ্গার ওই সাঁকোটি বছর দু’য়েক ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই সেতুর ধরে সহজে এবং অনেক কম সময়ে যাতায়াত করা যায় বারাসত জেলা হাসপাতাল, বাজার, অফিস-কাছারিতে। না হলে ঘুরপথে গ্রামের মানুষের বারাসত যেতে সময় লেগে যায় ঘণ্টা দেড়েক। গদাধর ঘোষ নামে এক বাসিন্দা জানালেন, দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের বড় বিশ্বেশ্বরপুর, মোবারকপুর, বাজিতনগর, খাঁপুর ও সোহাই কুমারপুর গ্রামের প্রচুর মানুষকে নানা কাজে বিদ্যাধরী নদী পেরিয়ে যেতে হয়। ওই সাঁকোই ভরসা। ফইজুল হক নামে আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গোলাবাড়ি ও বারাসত বাজারে গ্রামের কৃষিজাত পণ্য নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় ভোগান্তির শেষ নেই।’’
স্থানীয় মানুষজন জানালেন, মাস ছ’য়েক আগে সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ৩৭ হাজার টাকা খরচ করে মেরামতি হয়। তারপর কোনওমতে চলছিল। কিন্তু মাস চারেক হল সাঁকোর বেশ কিছু অংশের উপরের দিকের পাটাতন উঠে ঝুলে পড়েছে। দীনেশ ঘোষ নামে এক বাসিন্দা বলেন, “এমন অবস্থার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন অনেকে। তার উপরে রাতে আলো থাকে না। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।’’ এক সময়ে ফসল নিয়ে সাঁকো পেরিয়ে বড়বাজারে যেতেন পারুল বৈদ্য। জানালেন, ইদানীং ভ্যানরিকশা যেতে পারে না। বাধ্য হয়ে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। সময় বেশি লাগছে, খরচও হচ্ছে বেশি।
পাকা সেতুর দাবিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ ও জেলা সেচ দফতরে অনেকবার আবেদন করেছেন স্থানীয় মানুষ। সাঁকোর নীচে বিদ্যাধরীর মাটি পরীক্ষা করে নিয়ে যান সেচ দফতরের বিদ্যাধরী বিভাগের বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি।
বিদ্যাধরী নদীর দু’টি ব্লকের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে সাঁকোটি। সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের প্রধান মফিজুল ইসলাম বলেন, “আমরা মাস কয়েক আগেই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমাদের দিকটা মেরামত করেছি।’’ অন্য প্রান্তে রয়েছে বারাসত ১ ব্লকের কোটরা পঞ্চায়েত। জেলা সেচ দফতর ও বিদ্যাধরী ভবন থেকে ১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা মিলেছে সম্প্রতি। মফিজুল বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ পাটাতন খুলে সারাইয়ে আরও বেশি টাকার প্রয়োজন। টাকার বরাদ্দ বাড়িয়ে কাজ শুরু হবে।’’
দেগঙ্গার বিডিও মনোজ কুমার জানান, জেলা ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনায় বসে কী ভাবে সাঁকো সারাই করা যায়, তা নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামীও জানিয়েছেন, সেতুটি নিয়ে কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy