ভগ্নদশা: এমন রাস্তা দিয়েই বছরভর যাতায়াত। বারাসতে। নিজস্ব চিত্র
ভাঙাচোরা রাস্তায় গর্তের পাশে ডাঁই হয়ে রয়েছে মাটি। অল্প বৃষ্টিতে সেই মাটি গলে গিয়ে মাখামাখি হয় গোটা রাস্তা। ছোট বড় গর্তের পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে কাদায় পিছলে ঘটছে দুর্ঘটনা। ছবিটা উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের বেশির ভাগ এলাকায়।
পরিস্রুত গঙ্গার জল নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত পুরসভার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে ৪৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে জলপ্রকল্প। সেই কাজের জন্য কয়েক বছর ধরে পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের রাস্তা খোঁড়াখুড়ি চলেছে। ওই প্রকল্পে টিটাগড় থেকে জল এসে জমা হয়েছে কোরা এলাকায়। সেখানে জল পরিশোধন হওয়ার পরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরবরাহ করতে মাটির নীচ দিয়ে গিয়েছে মোটা পাইপলাইন। সেই কাজ শেষ হয়েছে। তবুও রাস্তা সারাই হয়নি। মাটি-কাদা মাখামাখি হওয়া এবড়োখেবড়ো রাস্তায় যাতায়াত নিত্য দিনের সমস্যা হয়ে উঠেছে বারাসত পুর এলাকায়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বর্ষার আগেই রাস্তা সারানোর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে কাজ শুরুই হয়নি। মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে মাসখানেক আগে বারাসত পুরসভার তরফে জানানো হয়েছিল, রাস্তা তৈরির টাকা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে চাওয়া হয়েছে। এর জন্য কত খরচ পড়বে তার হিসেবও জমা দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে রাস্তা তৈরির জন্য সাত কোটি টাকা মিলেছে। রাস্তা তৈরির জন্য দরপত্রও ছাড়া হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’
ওই এলাকায় কিছু বড় রাস্তা ছাড়া বিভিন্ন পুর ওয়ার্ডে ভিতরের অধিকাংশ রাস্তাই কমবেশি খোঁড়া অবস্থায় রয়েছে। এলাকার মানুষ জানালেন, রাস্তা খোঁড়া থাকায় ঘুরপথে বাজার-হাটে যেতে হচ্ছে। এ ক’দিনের বৃষ্টিতে জল জমে গিয়েছে ছোট-বড় গর্তে। গর্তে উল্টে পড়ছে সাইকেল, মোটরসাইকেল আরোহী। বারাসত স্টেশনের কাছে এমন অবস্থা যে, জলে না নেমে যাতায়াতের উপায় নেই। সোমা দাশ নামে এক স্কুল শিক্ষিকার কথায়, ‘‘অটো-বা টোটোতে যাতায়াত করতে গিয়ে চাকা গর্তে পড়ে হাতে পায়ে চোট লাগছে। কাদায় জামাকাপড় মাখামাখি হয়ে যাচ্ছে।’’
জেলাসদর বলে অফিস, আদালত, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই বারাসতে আসেন। রাস্তা বেহালের জন্য সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। বনগাঁ থেকে বারাসতের অফিসে প্রতিদিনই কাজে আসেন অরণ্য রায়। তাঁর কথায়, ‘‘আগে গাড়ি নিয়ে এলেও এখন খারাপ রাস্তার জন্য ট্রেনে-বাসে অফিসে আসি। স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড থেকে ভ্যান রিকশায় লাফাতে লাফাতে আসতে পিঠ ব্যথা হয়ে যায়। কাদার জন্য প্যান্ট, জুতো অফিসে গিয়ে ধুয়ে কাজে বসতে হয়।’’
তবে সুনীলবাবু জানিয়েছেন, ‘‘রাস্তার কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy