Advertisement
E-Paper

অক্সিজেনের সঙ্কট, সমস্যায় সিলিকোসিস আক্রান্তেরা

অক্সিজেনের অভাবে অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে সিলিকোসিসে আক্রান্ত মিনাখাঁ এবং সন্দেশখালি গ্রামের শতাধিক সিলিকোসিস রোগীর।

নির্মল বসু 

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:১৫
কাহিল: এই অবস্থা রোগীর।  

কাহিল: এই অবস্থা রোগীর।   নিজস্ব চিত্র।

করোনা সংক্রমণ বাড়ায় অক্সিজেন নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে নানা জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন সিলিকোসিসে আক্রান্তেরা। সিলিকোসিসে আক্রান্তদের নিয়মিত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে অক্সিজেনের অভাবে অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে সিলিকোসিসে আক্রান্ত মিনাখাঁ এবং সন্দেশখালি গ্রামের শতাধিক সিলিকোসিস রোগীর। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার করোনায়ও আক্রান্ত হয়েছেন।

বেশ কয়েক বছর আগে বসিরহাট মহকুমার মিনাখাঁ এবং সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকার বহু গরিব মানুষ ভাল পারিশ্রমিকের আশায় আসানসোলের জামুড়িয়ায় পাথর খাদানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কয়েক মাসের মধ্যেই পাথরের গুঁড়ো শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরের ভেতরে ঢুকে সিলিকোসিস নামে মারণ রোগে আক্রান্ত হন কয়েকশো মানুষ। এই পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন তাঁরা। তারপর থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মাঝে মধ্যেই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মিনাখাঁর গোয়ালদহ, দেবীতলা, সন্দেশখালির জেলেখালি, বেড়মজুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় তিনশোর বেশি মানুষ সিলিকোসিসে আক্রান্ত। মৃত্যুর সংখ্যা দু’শো ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে আবার গোয়ালদহ গ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, সিলিকোসিসে শ্বাসকষ্ট হয়। তখন অক্সিজেন অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এই সময়ে বাজারে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কালোবাজারি হচ্ছে। ফলে ৪০০-৬০০ টাকায় যে সিলিন্ডার মিলত, তা এখন দেড়-দু’হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে সিলিকোসিসে আক্রান্ত রোগীরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। ফরিদা বিবি, মনোয়ারা খাতুন, সকিলা গাজিরা জানান, এত দিন যে সব সিলিকোসিসে আক্রান্ত রোগীর মুখে দিনের মধ্যে ১২-১৪ ঘণ্টা অক্সিজেন দিয়ে রাখতে হত, অর্থের অভাবে তাঁরা এখন ৩-৪ ঘণ্টার বেশি অক্সিজেন নিতে পারছেন না। এরই মধ্যে আবার সিলিকোসিসে আক্রান্ত কেউ কেউ করোনায়ও আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে সমস্যা আরও বেড়েছে।

সিলিকোসিসে আক্রান্ত সন্দেশখালির সুজয় মণ্ডল, মিনাখাঁর ফরিদউদ্দিন মোল্লারা জানান, সিলিন্ডারের দাম না কমানো হলে অক্সিজেনের অভাবে মরতে হবে। তাঁদের কথায়, “একে করোনার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে। তার উপর চড়া দামে অক্সিজেন কিনতে গিয়ে অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর মত অবস্থা হয়েছে।”

মিনাখাঁ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন দাস জানান, সিলিকোসিস আক্রান্তদের জন্য গোয়ালদহ গ্রামে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎ চালিত বিশেষ মেশিন থেকে অক্সিজেন তৈরির ব্যবস্থা হয়েছে। বসিরহাট স্বাস্থ্যজেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই সঙ্কটকালে রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বলব, সমস্যা হলে হাসপাতালে যান সেখানে অক্সিজেন মিলবে।” বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ সিংহ মহাপাত্র বলেন, “কোনও দোকানি যাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নির্দিষ্ট দামের থেকে বেশি না নিতে পারে সে দিকে লক্ষ রাখা হয়েছে। কেউ বেশি দাম নিচ্ছে অভিযোগ এলেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”

Silicosis COVID-19 Oxygen Shortage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy