Advertisement
E-Paper

কড়া নিরাপত্তায় পারমাদনে এ বার হল নৌকোবিহারও

দুপুরে  অভয়ারণ্যে গিয়ে দেখা গেল, ঢোকার মুখে পুলিশ কর্মীরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ভিতরে পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৮
সাবধানে-পা: পর্যটকের ভিড়ে বড়দিনে জমজমাট এলাকা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সাবধানে-পা: পর্যটকের ভিড়ে বড়দিনে জমজমাট এলাকা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিউ টাউন থেকে বাসে করে স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে সোমবার সকালে বাগদার পারমাদনে বনভোজন করতে এসেছিলেন এক যুবক। একটু আশঙ্কায় ছিলেন। অতীতে অভিজ্ঞতা ভাল নয় তাঁর। বন্ধুদের সঙ্গে বনভোজনে এসে চোখের সামনে দেখেছিলেন মদ্যপদের দাপাদাপি। মহিলাদের কটূক্তি করতেও শুনেছিলেন। সোমবার, বড়দিনের বিকেলে অবশ্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার আগে বলে গেলেন, ‘‘খুব ভাল ভাবে এ বার বনভোজন করেছি। পুলিশি নিরাপত্তা ছিল। মদ্যপদের হুল্লোড় ছিল না।’’ পারমাদনের বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্যে বনভোজন করতে এসেছিলেন যাঁরা, তাঁদের বেশিই ভাগই এ দিন নিরাপত্তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে গেলেন।

কেমন ছিল এ দিনের পরিবেশ?

দুপুরে অভয়ারণ্যে গিয়ে দেখা গেল, ঢোকার মুখে পুলিশ কর্মীরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ভিতরে পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। তাতে বড় বড় হরফে লেখা, ‘‘অভয়ারণ্যের ভিতরে নেশা করা বা সাউন্ড সিস্টেম বাজানো নিষিদ্ধ।’’ বনভোজনে আসা লোকজনের গাড়ির নম্বর, ফোন নম্বর পুলিশ কর্মীরা লিখে রাখছেন। সন্দেহ হলে গাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। কেউ মদের বোতল নিয়ে এসেছেন কিনা, তা দেখা হচ্ছে। টোটোয় চেপে পুলিশ কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের অভয়ারণ্যের ভিতরে টহল দিতে দেখা গেল। নিয়ম অনুসারে, বেলা ৩টে পর্যন্ত অভয়ারণ্যের ভিতরে ঢোকা যায়। বিকেল ৪টের মধ্যে বেরিয়ে আসতে হয়। বনভোজন শেষে ফিরে যাওয়ার সময়ে পুলিশ কর্মীরা লিখে রাখা গাড়ির নম্বরগুলি কেটে দিচ্ছিলেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সিআই গাইঘাটা পার্থ সান্যাল। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে এ বারই প্রথম এখানে পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। শীতের মরসুম জুড়ে প্রতি শনি-রবিবার ও ছুটির দিনগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় একশোটি বনভোজনের দল এসেছিল এ দিন, যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। ৪০ জন পুলিশ কর্মী অভয়ারণ্যের ভিতরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

নিরাপত্তার পাশাপাশি এ বার বনভোজনকারীদের উপরি পাওনা ছিল ইছামতীতে নৌকোবিহার। অভয়ারণ্যের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ইছামতী। অন্যান্য বছর নদী কচুরিপানায় ভরা থাকে। নৌকো চলাচল বন্ধ থাকত। এ বার বৃষ্টিতে কচুরিপানা সরে গিয়েছে। ইছামতীর ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, নৌকো বিহারের জন্য মানুষের ভিড়। নৌকোয় গিটার বাজিয়ে একদল ছেলেমেয়ের গান ভেসে এল।

৩০টি নৌকা রয়েছে এখানে। মাঝিরা জানালেন, এক কিলোমিটার নদীপথ ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য মাথা পিছু ৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের তরফে নৌকোয় তাদের নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাঝিরা জানালেন, বছরের এই সময়ে নৌকা চালিয়ে তাদের আয় পত্তর মন্দ হয় না। যদিও এত দিন তা বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ ছিল না।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অভয়ারণ্যের মধ্যে বনভোজনের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা রয়েছে। সেখানে বন ভোজন করতে হয়। তবে সেখানে নেশা করা বা সাউন্ড সিস্টেম বাজানো নিষিদ্ধ। সংরক্ষিত এলাকায় রয়েছে শ’তিনেক হরিণ। আগে অনেক পাখি থাকলেও এখন আর নেই। জেলা বনাধিকারিক মানিক লাল সরকার বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাখিগুলি বেঙ্গল সাফারিতে দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা চলছে, ওখান থেকে অন্য পাখি, জীবজন্তু আনার।

Parmadan Forest Boating
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy