প্রতীকী চিত্র।
জমি বিক্রি বা হস্তান্তরের জন্য জরুরি জমি রেজিস্ট্রেশন। কিন্তু গত বেশ কয়েকদিন ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়েই কার্যত বন্ধ সেই প্রক্রিয়া। এর জেরে সমস্যায় পড়ছেন বহু মানুষ।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা অতিমারির কারণে জমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ করেছে। সরকার ঘোষণা করেছে, জমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি (মুদ্রাঙ্ক শুল্ক) ছাড় দেওয়া হবে। বাজেটে জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি ইত্যাদি কেনাবেচায় বা লিজ়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের স্ট্যাম্প ডিউটি ২ শতাংশ এবং সার্কল রেট ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে রাজ্য সরকার। শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় স্ট্যাম্প ডিউটি ছিল যথাক্রমে ৬ এবং ৫ শতাংশ। দীর্ঘ করোনা-কালে আর্থিক অবস্থায় অনেকটাই অবনতি হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনাবেচার বাজারে বিপুল মন্দা দেখা দিয়েছে। রাজ্য সরকার মনে করছে, এই অবস্থায় স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় দিলে এক দিকে যেমন ক্রেতা-বিক্রেতারা উপকৃত হবেন, তেমনই বকেয়া থাকা বহু রেজিস্ট্রেশন এই সুযোগে হওয়ায় রাজ্যের কোষাগারেও আয় বাড়বে।
এই ছাড় দেওয়ার জন্যই সফটওয়্যারে কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যার জেরে সাময়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে জমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ। এ বিষয়ে জেলার রেজিস্ট্রার গৌতম ঘোষ বলেন, “সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের সমস্যার কারণে জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।”
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। ভাঙড়ের বাসিন্দা বেচারাম মণ্ডল জানান, সংসারে আর্থিক সমস্যা রয়েছে। সামনেই মেয়ের বিয়ে। সে জন্য একটা চাষের জমি বিক্রি করার চেষ্টা করছেন অনেক দিন ধরে। জমি বিক্রির জন্য গত কয়েকদিন ধরে ভাঙড়ের জমি রেজিস্ট্রি অফিসে (অবর নিবন্ধকের কার্যালয়) ঘুরছেন। কিন্তু কোনও ভাবেই জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। ফলে জমি বিক্রি আটকে রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ক্যানিং, বারুইপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় জমি রেজিস্ট্রি করতে এসে সমস্যায় পড়ছেন মানুষ।
সফটওয়্যারে পরিবর্তন আনতে এত দেরি কেন হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠছে। প্রায় দু’সপ্তাহের বেশি সময় জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ থাকায় সরকারের আয়ও কমেছে অনেক। কবে সব কিছু স্বাভাবিক হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন বেচারামের মতো অনেকেই। ভাঙড়ের এক দলিল লেখক (ডিড রাইটার) আব্দুল কাইয়ুম মোল্লা বলেন, “জমি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ থাকার কারণে বহু মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। জমি কেনার জন্য অনেকেই টাকা অগ্রিম দিয়ে ফেলেছেন। রেজিস্ট্রেশন বন্ধ থাকার কারণে জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। আর্থিক ভাবে আমরাও সমস্যায় পড়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy