তখনও মেলেনি ঠিকানা। দেগঙ্গায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
অ্যাডমিট কার্ডে স্কুলের ঠিকানা: চাঁদপুর হাইস্কুল। স্টেশন হাড়োয়া রোড।
টেটের বেশ কিছু পরীক্ষার্থী এই ঠিকানা দেখে রবিবার সকালে হাড়োয়া স্টেশন এলাকার দিকে চলে আসেন। কিন্তু স্টেশন চত্বরে কোনও ওই নামের পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে পাননি তাঁরা। এ দিকে পরীক্ষার সময় হয়ে যাচ্ছে। অতি কষ্টে একে ওকে জিজ্ঞাসা করে অবশেষে স্টেশন এলাকা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে খোঁজ মিলল পরীক্ষা কেন্দ্রের। সময়মতো পৌঁছতে পারলেন না বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী। কারণ, ঠিকানা খুঁজে পেতে ততক্ষণে পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেটে গিয়েছে প্রায় এক ঘণ্টা আগে।
দেগঙ্গায় হাড়োয়া স্টেশনের পাশে চাঁদপুর গ্রামের এক বাসিন্দা জাহাঙ্গির আলি বলেন, ‘‘রবিবার সকাল থেকেই ছেলেমেয়েরা এসে আমাদের কাছে পরীক্ষা কেন্দ্রের খোঁজ করছেন। কিন্তু এখানে তো কোনও হাইস্কুলই নেই। পরীক্ষা হবে কী করে। এ কথা শুনে পরীক্ষার্থীরা নিরাশ হয়ে পড়েন।’’ এই এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুল আছে। যেখানে কখনই পরীক্ষা সম্ভব নয় বলে জানান এলাকাবাসী।
হাবরা থেকে আসা অর্পিতা ঘোষ নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘‘স্টেশন হাড়োয়া ঠিকানা দেখে হাড়োয়া স্টেশনে নামার পরে ভ্যানে উঠি। ভ্যানওয়ালা এই চাঁদপুরে নিয়ে আসে। এখানে এসে দেখি একটি প্রাইমারি স্কুল। তারপরে আবার হাড়োয়ার দিকে আসি। সেখান থেকেই রাজারহাটের চাঁদপুর হাইস্কুলের ঠিকানা জানতে পারি।’’ এ ভাবে খুব হয়রান হতে হয়েছে বলে জানালেন অর্পিতা। একই অবস্থা চাকলার রায়পুরের সুমাইয়া খাতুন, নদিয়ার ঝিকড়া চাঁমদার এসমাতারা খাতুন, কাঁচরাপাড়ার কণিকা রায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার সঞ্জয় ঘোষ, বনগাঁর ঠাকুরনগরের মৃদুলা হালদারদের। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রথমে পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে না পাওয়ায় ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। পরে পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজে পাই ঠিকই। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।’’ এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘সঠিক পরীক্ষা কেন্দ্রের খোঁজ পেতে এ দিক ও দিক জিজ্ঞাসা করতে হয়েছে। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারেননি। অবশেষে নেটে ম্যাপ বার করে খোঁজ মেলে। বেশি টাকা খরচ করে কেন্দ্রে আসতে হয়েছে।’’ যদি অ্যাডমিট কার্ডে রাজারহাটের ঠিকানা লেখা থাকত, তা হলে এতটা হয়রান হতে হতো না বলেই জানালেন সকলে। যদিও বাড়তি সময় না দেওয়ায় ফাঁপরে পড়েন ওই পরীক্ষার্থীরা।
এ দিন বনগাঁ মহকুমার পনেরোটি সেন্টারে শান্তিতেই শেষ হল আপার প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা। বনগাঁর শক্তিগড় উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীরা মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকেছিলেন। তাঁদের মোবাইল বাইরে রেখে আসতে বলা হয়। কোনও কোনও পরীক্ষার্থী আপত্তি করলেও শেষমেশ তাঁরা মেনে নেন। কয়েকটি কেন্দ্রের ভিতর চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হাবরার দশটি এবং অশোকনগরের পাঁচটি কেন্দ্রের পরীক্ষাও শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়েছে। হাবরা থানার পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় বেলঘরিয়া মোড় এবং চোংদা মোড়ে যশোর রোড নো-এন্ট্রি করে দেওয়া হয়েছিল। হাবরা শহরের যানজট সামলাতে থানার বহু পুলিশকর্মীকে রাস্তায় নামানো হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy