Advertisement
E-Paper

Students: একেক দিন ছাত্রের থেকে শিক্ষক বেশি আসেন স্কুলে

এমনই পরিস্থিতি গোবরডাঙা শ্রীচৈতন্য উচ্চবিদ্যালয়ের। ছাত্রের অভাবে ঐতিহ্যবাহী স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২২ ০৭:২৯
ফাঁকা: নবম শ্রেণির কক্ষে উপস্থিত দু’জন ছাত্র।

ফাঁকা: নবম শ্রেণির কক্ষে উপস্থিত দু’জন ছাত্র। নিজস্ব চিত্র।

কয়েক বছর আগে ছাত্রদের উপস্থিতিতে গমগম করত ক্লাসরুম। ছাত্রদের হুড়োহুড়ি, খেলাধূলা, চিৎকার-চেঁচামেচিতে মুখরিত হত স্কুলচত্বর। অথচ, আজ ছাত্রের অভাবে শ্রেণিকক্ষগুলি শুনশান। দৈনিক হাতে গোনা ১০-১২ জন ছাত্র স্কুলে আসে। বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই, স্কুল চলছে!

এমনই পরিস্থিতি গোবরডাঙা শ্রীচৈতন্য উচ্চবিদ্যালয়ের। ছাত্রের অভাবে ঐতিহ্যবাহী স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৬ সালে তৈরি হওয়া স্কুলটিতে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়। আছে ১২টি শ্রেণিকক্ষ। পাকা ভবন, পাঠাগার। কিন্তু বই পড়ার ছাত্রই নেই। পরীক্ষাগার, সাংস্কৃতিক মঞ্চও আছে।

কয়েক বছর আগেও ছাত্রেরা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকত। সে সব এখন অতীত। এখন ছাত্রের অভাবে ধুঁকছে স্কুলটি।

স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে, এখন ছাত্রের সংখ্যা মাত্র ৪৫ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব নেই। তাঁরা আছেন ১৪ জন। স্কুলে ছাত্রদের তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকা বেশি থাকছেন, এমনও হয় হামেশা। কোনও ক্লাসে ছাত্রই আসে না। আবার কোনও ক্লাসে ২-৩ জন আসে। বেঞ্চগুলিতে ধুলো জমে গিয়েছে। রোজ স্কুলে মিড ডে মিল রান্না হয়। কিন্তু খাওয়ার জন্য ছাত্রদের দেখা মেলে না।

স্কুল চত্বর পাঁচিলঘেরা নয়। স্কুলের মাঠে আগে ছাত্র ছোটাছুটি করত। সেখানে এখন বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছ জন্মেছে। গরু চরে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই স্কুলে পড়াশোনা করেই অনেকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। অনেকেই উচ্চপদস্থ সরকারি চাকরি করছেন।

স্কুল পরিচালন সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, কয়েক বছর আগেও স্কুলে ৬০০-৭০০ ছাত্র ছিল। কেন এখন স্কুলের এই পরিস্থিতি?

পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোজকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির আগে আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম। এখানকার অভিভাবকেরা গোবরডাঙা খাঁটুরা উচ্চবিদ্যালয়ে ছেলেদের ভর্তি করতে আগ্রহী। সব স্কুলে যদি ছাত্র ভর্তির কোটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হত, তা হলে আমাদের স্কুলে ছাত্রের সংখ্যা বাড়ত। এ ছাড়া, এলাকায় ইংরেজিমাধ্যম স্কুল তৈরি হওয়ায় অভিভাবকেরা সেখানেও ছেলেদের ভর্তি করছেন। তবে আমরা চেষ্টা করছি, স্কুলে ছাত্রসংখ্যা বাড়াতে।’’

গোবরডাঙার পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘শ্রীচৈতন্য স্কুলে ছাত্র সংখ্যা কমে যাওয়া যথেষ্ট উদ্বেগের এবং দুর্ভাগ্যের। স্কুলটির আগে বেশ সুনাম ছিল। কেন ছাত্র কমে যাচ্ছে, তা আমরা খতিয়ে দেখব। মানুষের কাছে যাব। স্কুলের শিক্ষকদের চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই। আমরাও পরিকল্পনা করছি, কী ভাবে ছাত্রসংখ্যা বাড়ানো যায়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সভা ডাকা হচ্ছে।’’

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌত্রিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ছাত্রসংখ্যা বাড়াতে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন শিক্ষকেরা। স্থানীয় কাউন্সিলরও থাকেন সে ক্ষেত্রে।

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে পবিত্র সরকার। সে জানায়, সে এবং তার বন্ধু— দু’জন মিলে ক্লাস করে। তবে আরও বন্ধু থাকলে ভাল লাগত।

school Students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy