Advertisement
০২ মে ২০২৪

চিকিৎসক কম, হাসপাতালে বন্ধ ২৪ ঘণ্টা ‘সিজার’ 

চিকিৎসক কম থাকায় ২৪ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করে সন্তান প্রসব করানোর কাজ হচ্ছে না ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। পরিস্থিতির কথা সকলে জানেন না। অনেকেই রাতবিরেতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁদের হয় সকাল পর্যন্ত ফেলে রাখা হচ্ছে। না হলে বলা হচ্ছে রোগিণীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে।

ফিরে যাচ্ছেন প্রসূতি। নিজস্ব চিত্র

ফিরে যাচ্ছেন প্রসূতি। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা 
ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১২
Share: Save:

চিকিৎসক কম থাকায় ২৪ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করে সন্তান প্রসব করানোর কাজ হচ্ছে না ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। পরিস্থিতির কথা সকলে জানেন না। অনেকেই রাতবিরেতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁদের হয় সকাল পর্যন্ত ফেলে রাখা হচ্ছে। না হলে বলা হচ্ছে রোগিণীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে। অনেককে সরকারি ভাবে ‘রেফার’ও করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

রোগী ও তার পরিবারের অভিযোগ, সরকার যেখানে বলছে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের উপরে জোর দেওয়ার জন্য, তখন মহকুমা হাসপাতালেই ২৪ ঘণ্টা সিজারের ব্যবস্থা নেই।

‌‌ক্যানিং মহকুমার গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং-সহ আশেপাশের বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রসূতিরা এখানে আসেন। এমনিতেই ব্লক হাসপাতালগুলিতে সিজারের ব্যবস্থা নেই। রাতবিরেতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতি মায়েদের নির্ভর করতে হয় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের উপরে।

সোমবার রাতে ক্যানিংয়ের মিঠাখালি থেকে জ্যোতি অধিকারী নামে এক প্রসূতি যন্ত্রণা নিয়েই এসেছিলেন হাসপাতালে। তাঁর স্বামী প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে বলা হল, রাতে কোনও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। তাই রাতে কিছু করা সম্ভব নয়। পারলে অন্যত্র নিয়ে যান।’’ তাঁর অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’-এর স্লিপও দেওয়া হয়নি। এমনকী, রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স মেলেনি। বাধ্য হয়ে অন্য গাড়ি ভাড়া করে স্ত্রীকে বারুইপুরে নিয়ে যান প্রসেনজিৎ।

বাসন্তীর খেড়িয়ার বাসিন্দা মিজানুর মোল্লা স্ত্রী রেহেনাকে নিয়ে গিয়েছিলেন বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে। সেখান থেকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। ওই রোগিণীকেও রাতে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

বাসন্তীর ৩ নম্বর ভরতগড় এলাকা থেকে আশাকর্মী সন্ধ্যা ঘোষ এক প্রসূতিকে ক্যানিং হাসপাতালে এনেছিলেন রাতের দিকে। তাঁকেও ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন জন প্রসূতি বিশেষজ্ঞ আছেন। তারাই নিয়মিত প্রসূতি মায়েদের ২৪ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার ও স্বাভাবিক প্রসব করেন। ওই তিন চিকিৎসকের মধ্যে এক জন শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেশ কিছু দিন ধরে ছুটিতে। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা। এর ফলে রোগীদের কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে প্রসব করানো হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা জেলা ও স্বাস্থ্যভবনে জানিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Canning Sub Divisional Hospital Pregnant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE