ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল
স্থায়ী শিক্ষকের অভাবে ভুগছে স্কুল।
সদ্য নীল-সাদা রঙে ঝাঁ চকচকে হয়ে উঠেছে ভবন। ছাত্রছাত্রী ৪৩২ জন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ স্থায়ী শিক্ষক ২ জন, পার্শ্বশিক্ষক ৩ জন এবং আংশিক সময়ের শিক্ষক ৬ জন। কিন্তু স্থায়ী শিক্ষকের অভাবে সাগরের ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের পঠনপাঠন শিকেয় ওঠার জোগাড়। বাধ্য হয়ে ক্লাস নিচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাও।
ঘোড়ামারা দ্বীপের সবেধন নীলমনি একটি মাত্র হাইস্কুল চলছে এ ভাবেই।
সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতে বছর দশেক আগে পর্যন্ত জনসংখ্যা ছিল ১০ হাজারেরও বেশি। কিন্তু দ্বীপটির একদিকে সমুদ্র, অন্য দিকে মুড়িগঙ্গা নদীবাঁধ। বাঁধ ভাঙতে-ভাঙতে এগিয়ে আসছে। ঘরবাড়ি, জমি, পুকুর খাল-বিল, নদীর গ্রাসে নিশ্চিহ্ন হওয়ার জোগাড়। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা দ্বীপ ছেড়ে সাগর, নামখানা বা কাকদ্বীপে চলে যাচ্ছেন। কমতে-কমতে বর্তমানে জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫ হাজারে। ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতটি মন্দিরতলা, খাসিমারা, চুনপুড়ি, আটখোলা, রায়পাড়া— এই পাঁচটি বুথ নিয়ে তৈরি। চাষবাস আর মাছ ধরা ছাড়া জীবিকা নির্বাহের অন্য পথ নেই। নতুন প্রজন্মের অনেকেই অবশ্য ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে যাচ্ছে।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে স্কুলটিতে প্রচুর ছাত্রছাত্রী ছিল। ইদানীং শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে স্কুলের পঠনপাঠনের দফারফা। তা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের অন্য স্কুলে নিয়ে যেতে পারছেন না অভিভাবকেরা। কারণ, অন্য স্কুলে যেতে ৬ কিলোমিটার চওড়া মুড়িগঙ্গা পার হয়ে কাকদ্বীপ বা সাগরে যেতে হয়। সেখানকার কোনও স্কুলে ভর্তির খরচও বেশি। ফলে সাধ থাকলেও অনেক অভিভাবকেরই সাধ্য নেই।
স্কুলের পরিচালন সমিতির তিন সদস্য ও সভাপতি নিয়ম করে ক্লাস নিলেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। অভিভাবকদের অভিযোগ, বহু দিন স্কুলটিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করেনি সরকার।
সমস্যাটা যে মাত্রাছাড়া, স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুরজিৎ করও সেটা মানছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে স্কুলের পঠনপাঠন চালানো যায় না। স্থায়ী শিক্ষককের অভাব মেটাতে ৬ জন আংশিক সময়ের শিক্ষক নেওয়া হলেও তাঁদের বেতন অভিভাবকদের চাঁদার টাকায় মাত্র ২-৩ হাজার টাকা। ফলে তাঁরা নিয়ম করে স্কুলে আসতে চান না।’’ তিনি আরও জানান, ২৯ বছর ধরে স্কুলে নিয়োগ হয়েছে মাত্র দু’জন শিক্ষক। ফলে স্কুল চালানো ক্রমশ দায় হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নুরুল হক সিপাই বলেন, ‘‘নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হলে ওই স্কুলেও শিক্ষক পাঠানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy