Advertisement
০২ মে ২০২৪

আর চাই না মদের দোকান, সংসার বাঁচাতে রাস্তায় নামলেন বৃদ্ধারাও

গোপালনগরের বর্ধনবেড়িয়া এলাকায় বনগাঁ-চাকদহ সড়কের পাশে দিন কয়েক আগে একটি মদের কাউন্টার সরকারি লাইসেন্স নিয়ে চালু হয়। সেটি বন্ধ করতে মহিলারা মহকুমাশাসক, পুলিশ ও পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি জমা দিলেন।

প্রতিবাদ: সামিল গ্রামের মানুষ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক। —নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদ: সামিল গ্রামের মানুষ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

দেগঙ্গা, মগরাহাট, বাগদার পরে এ বার গোপালনগরের মদের দোকান বন্ধ করতে সরব হলেন মহিলারা। তাঁদের সঙ্গে পথে নামলেন বৃদ্ধারাও।

গোপালনগরের বর্ধনবেড়িয়া এলাকায় বনগাঁ-চাকদহ সড়কের পাশে দিন কয়েক আগে একটি মদের কাউন্টার সরকারি লাইসেন্স নিয়ে চালু হয়। সেটি বন্ধ করতে মহিলারা মহকুমাশাসক, পুলিশ ও পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি জমা দিলেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন গ্রামে মদের দোকান বন্ধ করতে মহিলাদের এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। মহিলাদের যুক্তি, গ্রামে মদের দোকান হলে এর প্রভাব তাঁদের উপরই বেশি পড়ার আশঙ্কা। গোপালনগরের বর্ধনবেড়িয়াতেও ছবিটা এক। নিজেদের সুরক্ষার তাগিদেই তাই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন মহিলারা।

শুক্রবার সকালে কয়েকশো মহিলা বনগাঁ-চাকদহ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ দেখানো হয় মদের দোকানের সামনেও। যদিও দোকান এ দিন বন্ধই ছিল। বর্ধনবেড়িয়া, কানসোনা, মেহেরপুর, বৈরামপুর গ্রামের মহিলারা হাতে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে সড়কে চট পেতে বসে পড়েন। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আধ ঘণ্টা পরে গোপালনগর থানার পুলিশ ও বৈরামপুর পঞ্চায়েতের সদস্য তথা প্রাক্তন প্রধান হায়দার আলি মোল্লা ঘটনাস্থলে এসে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। যদিও পুলিশের সঙ্গে মহিলারা বচসায় জড়িয়ে পড়েন। হায়দার বলেন, ‘‘কোনও অবস্থাতেই পঞ্চায়েতের তরফে মদের দোকান চালু করতে প্রশয় দেওয়া হবে না।’’

এ দিন অবরোধে সামিল হয়েছিলেন, মনীষা বালা, রত্না বালা, সুমনা অধিকারী, সীমা বালারা। মনীষা বলেন, ‘‘এখানে মদের দোকান পাকাপাকি ভাবে চালু হলে আমাদের সংসারের উপরে কুপ্রভাব পড়বে। স্বামীরা মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে অশান্তি করবে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া লাটে উঠবে।’’ এক তরুণীর কথায়, ‘‘আমরা রাতে রাস্তাঘাটে যাতায়াত করি। মদের দোকান হলে নেশাগ্রস্ত লোকজনের আনাগোনা এ অঞ্চলে বাড়বে। আমাদের নিরাপত্তার জন্য সেটা খারাপ হবে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধনবেড়িয়া ও সংলগ্ন এলাকায় প্রাথমিক ও জুনিয়র হাইস্কুল-সহ মন্দির, মসজিদ ও বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকার অধিকাংশ লোকজন মজুরির কাজ করেন। তাঁদের একটা বড় অংশ দেশি মদে আসক্ত। এখানে দোকান হলে তাঁদের বেশি করে নেশাসক্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের আয়ের বড় অংশ নেশায় চলে যাবে।

মহিলাদের আন্দোলনের জেরে দোকানটি বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ করে দেন দোকান মালিক। তবে মহিলারা চান পাকাপাকি বন্ধ হোক দোকান। পুলিশের তরফে মহিলাদের আপত্তির বিষয়টি মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘মহিলাদের মদের দোকান বন্ধের দাবি জেলা প্রশাসন ও আবগারি দফতরকে জানানো হয়েছে। পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Liquour Protest Gopalnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE