Advertisement
E-Paper

বাতিল নোটে আপত্তি, কাজ বন্ধ চটকলে

বাতিল ও নতুন নোট মিলিয়ে মিশিয়ে মজুরি ও বকেয়া প্রাপ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন চটকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকেরা বাতিল নোট নিতে নারাজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০১

বাতিল ও নতুন নোট মিলিয়ে মিশিয়ে মজুরি ও বকেয়া প্রাপ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন চটকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকেরা বাতিল নোট নিতে নারাজ। বাতিল নোট দেওয়া এবং বকেয়া না পাওয়ার প্রতিবাদে তাই কাজ বন্ধ করে দিলেন তাঁরাই। তার জেরে মঙ্গলবার রাত থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে টিটাগড়ের এম্পায়ার জুট মিলে।

দিন কয়ে‌ক আগে নোট বাতিলের জেরে প্রাপ্য না মেলায় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে লাগাতার অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন হাওড়ার মালিপাঁচঘরার হনুমান জুটমিলের শ্রমিকেরা। এর পরে কর্মীরা প্রায়শই মারমুখী আচরণ করছেন এবং উৎপাদনে সমস্যা করছেন অভিযোগে আচমকা অনির্দিষ্ট কালের জন্য চটকলটি বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ।

টিটাগড়ের ওই চটকলে মোট ১২০০ শ্রমিক রয়েছেন। তার মধ্যে প্রায় ২০০ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। দেশ জুড়ে নোট বাতিল শুরু হওয়ার পরে গত নভেম্বরে প্রত্যেক শ্রমিককে মজুরি বাবদ কিছু টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন চটকল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দাবি, ওই টাকা পরপর চার মাসের মজুরি থেকে কেটে নেওয়ার কথা থাকলেও চলতি মাসের মজুরি থেকেই তা কেটে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদেরও প্রাপ্য বকেয়া মেটানো হচ্ছিল না বলে অভিযোগ।

শ্রমিকেরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে বকেয়া টাকা দেওয়ার জন্য দাবি তোলেন তাঁরা। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, পুরনো ও নতুন নোট মিলিয়ে-মিশিয়ে দেওয়া হবে। পুরনো নোট নিয়ে তাঁরা কী করবেন, প্রশ্ন তোলেন শ্রমিকেরা। এক শ্রমিক বলেন, ‘‘পুরনো নোট কোথা থেকে ভাঙাব? অনেক শ্রমিকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। দিন আনি-দিন খাইয়ের হাল। তাই আমরা নতুন নোট দেওয়ার দাবি তুলেছিলাম।’’

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, এমন আর এক শ্রমিকের কথায়— ‘‘ম্যানেজার স্পষ্ট জানিয়ে দেন পুরনো নোট নিতে হলে নাও, তা না হলে মেশিন বন্ধ করে দাও। আমাদের কিছু করার নেই। আমরাও তাই কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’’

কিন্তু পুরনো নোটে মজুরি দেওয়া তো অপরাধ, তা হলে কেন চটকল কর্তৃপক্ষ সেই নোট দিচ্ছেন? কেনই বা এত দিনে পুরনো নোট বদল করতে পারেননি তাঁরা?

টিটাগড়ের ওই চটকলের জেনারেল ম্যানেজার সুদীপ গুপ্ত বলেন, ‘‘যাঁদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের সেখানেই প্রাপ্য টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে এত নতুন নোট আমাদের কাছে নেই। তাই পুরনো ও নতুন মিলিয়ে মজুরি নিতে অনুরোধ করেছিলাম। তা না হলে নতুন নোট আসা পর্যন্ত কয়েক দিন অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-হীন শ্রমিকেরাই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মজুরি পাওয়া শ্রমিকেরাও। তেমনই এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘গরিব শ্রমিকদের বাতিল নোট দেওয়া হবে কেন? এটা অন্যায়। তাই প্রতিবাদ জানিয়ে সকলেই কাজ বন্ধ রেখেছি।’’ পাশাপাশি সুদীপবাবুর দাবি, শ্রমিকেরা চার মাস ধরে অগ্রিম টাকা কাটতে বলেছিলেন। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় দু’মাসে কাটা হয়েছে।

স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘বাতিল নোটে মজুরি দেওয়া কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আর অগ্রিম টাকা চার মাসে কাটার কথা থাকলেও তা এক মাসে কাটাও খুবই অমানবিক। চটকল কর্তৃপক্ষকে বলেছি, শ্রমিকদের স্বার্থ দেখতে হবে।’’

Banned Notes Jute Mill
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy