Advertisement
E-Paper

তৃণমূল নেতা খুনে অধরা দুষ্কৃতীরা, রাস্তা কেটে বিক্ষোভ

বসিরহাটের ঘোড়ারাস গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা আব্দুল গফ্ফর মণ্ডল খুনের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের একাংশ বসিরহাটের বেলতলা-ঘোনা হয়ে কেন্দুয়ার মধ্যে কিপারহাটি গ্রামের কাছে রাস্তা কেটে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০৫
বন্ধ চলাচলের পথ। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ চলাচলের পথ। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বসিরহাটের ঘোড়ারাস গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা আব্দুল গফ্ফর মণ্ডল খুনের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের একাংশ বসিরহাটের বেলতলা-ঘোনা হয়ে কেন্দুয়ার মধ্যে কিপারহাটি গ্রামের কাছে রাস্তা কেটে দেন। এলাকার ৫-৬টি গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ঘোড়ারাস-ঘোনা স্টেশনে আসতে রীতিমতো অসুবিধায় পড়তে হয় অনেককে। স্কুল-কলেজে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে। ইতিমধ্যেই চার কংগ্রেস সমর্থকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট ২ ব্লকের ঘোড়ারাস গ্রামে বাড়ির বাসিন্দা গফ্ফরকে গত বৃহস্পতিবার ঘোড়ারাস-কুলিনগ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের উপপ্রধান হামিদ বিশ্বাস তাঁর মাছের ভেড়িতে ডাকাতি হয়েছে বলে ডেকে নিয়ে যান। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি ওই তৃণমূল নেতার। গফ্ফরের সঙ্গী রবিউল মণ্ডল পুলিশকে জানান, দক্ষিণ ঘোনা এলাকায় চোরাই মাছ বিক্রির আড়তে তাদের নিয়ে গিয়েছিলেন হামিদ। সেখান থেকে কাজ মিটিয়ে ভোর রাতে মোটর বাইকে বাড়ি ফেরার পথে উত্তর ঘোনা গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকায় তাঁদের লক্ষ করে বোমা-গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।

জখম হয়ে লুটিয়ে পড়েন গফ্ফর। ভয়ে কাছেই একটি পাঁচিলের মধ্যে গিয়ে আশ্রয় নেন রবিউল। পাঁচিলের আড়াল থেকে তিনি দেখেন, রক্তাক্ত গফ্ফরকে টানতে টানতে বিদ্যাধরী নদীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। শনিবার সকালে নদীতে দেহ ভাসতে দেখা যায়।

নিহতের দাদা ছাব্দার মণ্ডল বলেন, “ভাইয়ের উপরে হামলার ঘটনা জেনেও তাকে উদ্ধার তো দূরের কথা, আমাদেরও কিছু না জানিয়ে হামিদ বাড়ি ফিরে যায়। এটা রীতিমতো সন্দেহজনক।” হামিদের সঙ্গে বহু বার টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

খুনের ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। হামিদের মেছোভেড়ির আলাঘরগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর চলে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছিল। কিন্তু পিকেট তুলে নেওয়ার পরে ফের গ্রাম অশান্ত হচ্ছে।

এ দিন সকালে কয়েকশো মানুষ পুলিশি বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শাবল-গাঁইতি হাতে রাস্তা কাটা শুরু করে। তাদের দাবি, দিনভর পুলিশের দেখা মেলেনি। অভিযুক্তদের আত্মীয়-পরিজন পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন গ্রামের কেউ কেউ।

দলীয় উপপ্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বলে দাবি করে ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “মেছোভেড়ির তোলা নিয়ে দুষ্কৃতীদের নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল হচ্ছিল। কয়েক দিন আগে বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিও চলে। তারই জেরে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে আহত হন গফ্ফর। পরে তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়।” রাস্তা কেটে সাধারণ মানুষের অসুবিধায় ফেলে আন্দোলন করা উচিত নয় বলেই তাঁর মত। বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিস আলি বলেন, “রাস্তা কাটা হয় তো মানুষের সাময়িক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। গ্রামের মানুষ কেন রাস্তা কাটতে গেলেন, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এটা ঠিক যে, খুনের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড়া হবে না। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।”

basirhat tmc ghorarash village abdul gaffar mondal murder case southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy